খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন

গরম ছাড়া কোনো চ্যালেঞ্জ নাই: তালুকদার আবদুল খালেক

তালুকদার আবদুল খালেক। ছবি: সংগৃহীত

তালুকদার আবদুল খালেক খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) সদ্যবিদায়ী মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। এ নিয়ে টানা ৪ বার আওয়ামী লীগ তাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে। ২০০৮ ও ২০১৮ সালে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তবে ২০১৩ সালে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের কাছে হেরে যান।

আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠেয় কেসিসি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না ক্ষমতাসীনদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। এ অবস্থায় মোটামুটি 'নিরুত্তাপ' ভোটের মাঠে নির্বাচনের বিভিন্ন দিক নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন এই মেয়র প্রার্থী। জানিয়েছেন, গরম ছাড়া অন্য কিছুকে চ্যালেঞ্জ মনে করছেন না তিনি।

 

দ্য ডেইলি স্টার: খুলনায় নির্বাচনের পরিবেশ এখন কেমন?

তালুকদার আবদুল খালেক: সুন্দর পরিবেশ। কোন ঝামেলা নাই, টেনশন নাই। নির্বাচনের অনুকূলে একটি পরিবেশ এখন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে।

ডেইলি স্টার: নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন কি?

তালুকদার আবদুল খালেক: গরম ছাড়া অন্য কোনো চ্যালেঞ্জ নাই। সবার কাছে যাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ইচ্ছা থাকলেও সব জায়গায় যেতে পারছি না।

ডেইলি স্টার: নগরবাসীর কাছে কোন কোন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাচ্ছেন?

তালুকদার আবদুল খালেক: আমি ৪৬ বছর বিভিন্নভাবে জনপ্রতিনিধি ছিলাম। এই খুলনা সিটিতে ২ বার ওয়ার্ড কমিশনার ছিলাম; ১৯৭৭ সালে এবং তার পরের বছর। ২ বার মেয়র ছিলাম। আমি যে কাজগুলো শুরু করেছি, প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের জন্য যে টাকা দিয়েছেন তার সব কাজ শেষ করতে পারিনি করোনার জন্য। আমার এই কাজগুলো শেষ হলে খুলনার উন্নয়ন দৃশ্যমান হবে। তাই খুলনার উন্নয়নের জন্য আমাকে ভোট দিয়ে আমার এ কাজগুলো শেষ করার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করছি নগরবাসীকে।

ইতোমধ্যে ৪১৮টি সড়কের উন্নয়নকাজ শেষ হয়েছে। চলমান আছে ১১৪টি সড়কের কাজ। এই কাজগুলো শেষ হলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটা বড় উন্নয়ন হবে। এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ৮২৩ কোটি টাকার একটি কাজ চলছে। এগুলো শেষ করা দরকার। তাহলে জলাবদ্ধতার একটা সমাধান হবে।

ডেইলি স্টার: দলীয়ভাবে সবার সমর্থন পেয়েছেন? সবার সহযোগিতা পাচ্ছেন?

তালুকদার আবদুল খালেক: আমার দলের ভেতরে কোন কোন্দল নাই। সবাই মিলে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি।

ডেইলি স্টার: প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এমন অভিযোগ আছে যে, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে আপনি জিতে যেতে পারেন।

তালুকদার আবদুল খালেক: কোনো অভিযোগ করতে হলে তার যৌক্তিকতাও থাকতে হবে। যারা অভিযোগ করছে তাদের বলতে হবে কোন ওয়ার্ডের কোন জায়গায় তারা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

আমি চাই অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। আমি ক্ষমতাসীন দলের লোক। কিন্তু ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় আমার হারার অভিজ্ঞতাও আছে। আমি যখন ২০১৩ সালে মেয়র পদে হেরে যাই তখন কিন্তু আমি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, আমার দল তখন ক্ষমতায়। তখন কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেই নির্বাচন হয়েছিল কিন্তু আমি হেরে গিয়েছিলাম। আমি নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়েছিলাম। মানুষ যদি ভোট না দেয়, তাহলে কি আমি জোর করে ভোট নেব?

ডেইলি স্টার: আপনি মেয়রের পর থেকে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু এখনো সরকারি প্রটোকল নিয়ে চলার অভিযোগ আছে আপনার বিরুদ্ধে।

তালকদার আবদুল খালেক: আমি কোনো সরকারি প্রটোকল নিচ্ছি না। আমি যেখানে মেয়র নই, সেখানে প্রটোকল নেব কেন?

ডেইলি স্টার: প্রদিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসনের সবাই আপনাকে সহযোগিতা করছে।

তালুকদার আবদুল খালেক: আমার সঙ্গে প্রশাসনের লোকজনের দেখা-সাক্ষাৎ হয়ই না। আমি সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হই, রাত ১০টা-১১টা পর্যন্ত মানুষের বাড়ি বাড়ি যাই। তাছাড়া আমার তো কোনো অসুবিধা নেই। তাদের (প্রশাসনের লোকজনকে) বলব কি? আমি সবসময় বলি, সন্ত্রাস-মাস্তানি চলবে না। যার ভোট সে করেন।

ডেইলি স্টার: নির্বাচনে বিএনপি নেই। সেক্ষেত্রে ভোট পড়ার হার কম হতে পারে। এই চ্যালেঞ্জ আপনি কীভাবে মোকাবিলা করবেন?

তালুকদার আবদুল খালেক: আমি নগরবাসীকে বলেছি আপনার ভোট আপনি দেবেন। নাগরিক হিসেবে আপনার দায়িত্ব ভোট দেওয়া। আমি মানুষের কাছ থেকে যে সাড়া পেয়েছি তাতে বুঝেছি মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাবে। কোন রাজনৈতিক প্ররোচনায় কাজ হবে না।

ডেইলি স্টার: অনেকের অভিযোগ আছে যে, আপনি সবাইকে মূল্যায়ন করেন না। আপনার আচরণ খুবই রূঢ়। লোকজনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন।

তালুকদার আবদুল খালেক: আমি অন্যায়ের সঙ্গে আপস করি না। তদবির করি না। তাই অনেকে আমাকে অপছন্দ করেন। যারা আমার কাছ থেকে কোন অন্যায় সুযোগ নিতে পারেন না, তারাই অভিযোগ করেন। তাছাড়া নীতি কঠোর না হলে অনেক ক্ষেত্রে সঠিকভাবে কাজ করা যায় না। সঠিক নীতি প্রয়োগ করলে অনেকে অখুশি হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Leading univs withdrawing from cluster system

Session delays, irregularities, and lack of central planning cited as reasons

9h ago