মৃতপ্রায় ব্রহ্মপুত্রে ‘মৃতের চিৎকার’

শুক্রবার দুপুরে নগরীর কাচারিঘাট এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের হাঁটুপানিতে নেমে ‘মৃতের চিৎকার’ লেখা ব্যানার নিয়ে নদ খনন কাজের অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন ময়মনসিংহের সংস্কৃতিকর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত

 

মৃতপ্রায় ব্রহ্মপুত্র নদের হাটুঁ পানিতে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদী গানের মাধ্যমে অতীত যৌবনা ব্রহ্মপুত্রের বিরহগাঁথা তুলে ধরেছেন একদল তরুণ।

আজ শুক্রবার দুপুরে নগরীর কাচারিঘাট এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের হাঁটুপানিতে নেমে 'মৃতের চিৎকার' লেখা ব্যানার নিয়ে নদ খনন কাজের অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন ময়মনসিংহের সংস্কৃতিকর্মীরা।

বিশাল ব্যানারের পাশে ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড পুতে রাখা হয়েছিল। তারা যেন নীরবে জানান দিচ্ছিল মৃতপ্রায় এ নদের আর্তনাদের কথা। হাঁটু পানিতে বসানো ডাইনিং টেবিলে সাজানো হয়েছিল হরেক রকম খাবার। তবে চারপাশে রাখা হয়নি কোনো খাবার পানি। যেন পানির জন্য হাহাকার।

শুক্রবার দুপুরে নগরীর কাচারিঘাট এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের হাঁটুপানিতে নেমে ‘মৃতের চিৎকার’ লেখা ব্যানার নিয়ে নদ খনন কাজের অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন ময়মনসিংহের সংস্কৃতিকর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত

কবি শামীম আশরাফ-এর আয়োজনে 'মৃতের চিৎকার' নামে ব্রহ্মপুত্র নদ রক্ষার এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও মানবাধিকার ও রাজনৈতিক কর্মীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সংহতি জানিয়ে হাঁটু পানিতে নেমে প্রতিবাদ করেন। তারা মৃতপ্রায় ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।

আয়োজক শামীম আশরাফ বলেন, 'সমন্বিতভাবে মৃতের চিৎকার কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। হাজার কোটি টাকা বাজেট হওয়ার পরও, কাজ হওয়ার পরও নদে হাঁটু পানি। সবার কাছে নদের আর্তনাদ পৌঁছে দিতেই আমাদের এই চিৎকার।'

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া জনউদ্যোগ ময়মনসিংহের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, 'ব্রহ্মপুত্র নদে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) দুই হাজার ৭৬৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার খনন প্রকল্প চালাচ্ছে। গত বছর মে মাসে এক সভায় প্রকল্প পরিচালক বলেছিলেন এই চলতি বছরের জুন-জুলাইয়ে নদে বার্জ, লঞ্চ-স্টিমার চলবে। কিন্তু আমরা দেখছি ঠিক উল্টো। এখন অনেক স্থানে হেঁটে পার হওয়া যায়। যেখানে শুষ্ক মৌসুমেও কমপক্ষে ১০ ফুট পানি থাকার কথা।'

সুষ্ঠু খননের মাধ্যমে নদের যৌবন ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, 'দখল, দূষণ আর পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ২০১৯ সালের শেষের দিকে খননকাজ শুরু হয়। বলা হয়েছিল খননের পর যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের সংযোগস্থল জামালপুরের কুলকান্দি থেকে কিশোরগঞ্জের টোক পর্যন্ত নদটি ৩০০ ফুট প্রশস্ত ও শুষ্ক মৌসুমে ১০ ফুট গভীর থাকবে।'

শুক্রবার দুপুরে নগরীর কাচারিঘাট এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের হাঁটুপানিতে নেমে ‘মৃতের চিৎকার’ লেখা ব্যানার নিয়ে নদ খনন কাজের অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন ময়মনসিংহের সংস্কৃতিকর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত

অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু আরও বলেন, 'পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্য উন্নয়নে ড্রেজং শীর্ষক প্রকল্পটি আগামী ২০২৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ৫ বছর মেয়াদি প্রকল্পের প্রথম দুই বছর নদের ড্রেজিং এবং পরবর্তী ৩ বছর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করার কথা ছিল। চলতি বছরের জুন-জুলাই থেকে থেকে ঢাকা পর্যন্ত বার্জ চলার কথা ছিল। গেল বছর ময়মনসিংহে এক সভায় ব্রহ্মপুত্র নদ খননের প্রধান প্রকল্প সমন্বয়কারী প্রকৌশলী খন্দকার রাকিবুল ইসলাম এমন কথা জানিয়েছিলেন।'

Comments

The Daily Star  | English
problems faced by Bangladeshi passport holders

The sorry state of our green passports

Bangladeshi passports are ranked among the weakest in the world.

7h ago