জমি দখলে বাধা দেওয়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ
নোয়াখালীতে জমি দখলে বাধা দেওয়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
আজ শুক্রবার দুপুরে চাটখিল উপজেলার দক্ষিণ মোহাম্মদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে ৩ নারীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন, অমূল্য চন্দ্র সূত্রধর, অনিল চন্দ্র সূত্রধর, সুনীল চন্দ্র সূত্রধর, সুবল চন্দ্র সূত্রধর, শান্ত চন্দ্র সূত্রধর, শেফালী রানী সূত্রধর, চন্দনা রানী সূত্রধর ও ডলি রানী সূত্রধর। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
চাটখিল থানার সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. মুজিবুর রহমান সন্ধ্যায় দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, এ ঘটনায় উপজেলার শোল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ওমর ফারুককে প্রধান করে চাটখিল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।
হামলায় আহত অমূল্য চন্দ্র সূত্রধর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফারুক মাস্টার এর আগে আদালতের রায় উপেক্ষা করে গায়ের জোরে আমাদের জমি দখল করতে আসেন। আমরা বাধা দিলে হুমকি দিয়ে চলে যান। ওই ঘটনার জের ধরে আজ সকাল ১১টার দিকে ১৫-২০ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের জমিতে খুঁটি বসান। বাধা দিলে তারা লাঠিসোটা, লোহার রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।'
হামলায় আহত শেফালী রানী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফারুক মাস্টারের নেতৃত্বে আমাদের জমি দখলের সময় বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা হামলা করে। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে। পরে পুলিশ আহত ৮ জনকে হাসপাতালে পাঠায়। আমরা আতঙ্কে আছি। বাড়িতে গেলে আবারও হামলা করতে পারে। এজন্য থানায় অভিযোগ করেছি।'
জমি দখল ও হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে ওমর ফারুক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার বাবা তাদের কাছ থেকে জমি কিনেছিলেন। সেই জমি তারা দখল করে রাখে। আজ সেই দখলীকৃত জমিতে সীমানা খুঁটি বসাতে গেলে অমূল্য চন্দ্র সূত্রধরের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমি ও আমার সহযোগী মাহাবুবসহ আরও একজন আহত হন। এ ঘটনায় বিকেলে চাটখিল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।'
মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. ইউসুফ মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওমর ফারুক ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে হিন্দুদের জমি দখল করতে যান। এতে বাঁধা দিলে ওমর ফারুক মোবাইলে সহযোগীদের ডেকে নিয়ে হামলা চালায়। বিষয়টি অমানবিক।'
চাটখিল থানার সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, 'জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে কল পেয়ে হামলার খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই।'
চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে হামলার ঘটনায় উভয় পক্ষের ৮-১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দুই পক্ষের কাছ থেকেই লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
Comments