বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ড: সংসদে যা বললেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী

ফাইল ছবি

বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ড ও পরবর্তী কার্যক্রম তুলে ধরে সার্বিক বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি জানিয়ে ১০ বার নোটিশ দিয়েও ব্যবসায়ী সমিতি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সেই সঙ্গে স্থগিতাদেশ বহাল থাকায় মার্কেটটি ভাঙা বা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে বিবৃতিতে এ কথা জানান তিনি। গত ৪ এপ্রিল ভোরে বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

ঘটনার আগে-পরের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী জানান, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে ঢাকা সিটি করপোরেশন বঙ্গবাজার মার্কেটের প্রায় ১ দশমিক ৬৯৭ একর জমি পায়।। ১৯৯৫ সালে মার্কেট সমিতি নিজ খরচে ৩ তলা বিশিষ্ট বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স মার্কেটটি নির্মাণ করেন।

বর্তমান সরকারের আমলে ২০১৬ সালের ৭ অগাস্ট ওই স্থানে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে ১৪১টি গাড়ি পার্কিং ও ৪ হাজার ৪১৩ টি দোকান ঘরের সংস্থান রেখে প্রতি ফ্লোরে ৬৭ হাজার ৩৩২ দশমিক ৫৩ বর্গফুট ধরে ১০ তলা ভিত্তি বিশিষ্ট স্টিল স্ট্রাকচার বহুতল ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয় কর্তৃপক্ষ।

ইজিপি প্রক্রিয়ায় সর্বনিম্ন দরদাতাকে ২০১৯ সালের জুন থেকে শুরু করে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ করার লক্ষ্যে কার্যাদেশ (পাইলিংসহ ফাউন্ডেশন হতে প্লিন্থ লেভেল পর্যন্ত) দেওয়া হয়।

২০১৯ সালে কর কর্মকর্তা কর্তৃক বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতিকে সংশ্লিষ্ট মার্কেটটি ৩০ দিনের মধ্যে খালি করে দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়।

নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সংশ্লিষ্ট মার্কেট থেকে ৩টি মামলা করা হয় এবং চিঠির কার্যকারিতা হাইকোর্ট স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়, যা বার বার সময় বাড়িয়ে অদ্যাবধি পর্যন্ত বহাল আছে।

বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রী জানান, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স মার্কেটটি দীর্ঘদিনের পুরনো টিন ও কাঠের তৈরি বিধায় এটি জরাজীর্ণ অবস্থা, ব্যবহারের অনুপযোগী, ঝুঁকিপূর্ণ এবং যেকোনো সময় অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে বলে ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে বিভিন্ন সময় মার্কেট সমিতিকে ৬ বার চিঠি দিয়ে অবহিত এবং মার্কেট খালি করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু মার্কেটের ব্যবসায়ীরা দোকান খালি না করে, করপোরেশনকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করেন। মামলাগুলো স্থগিতাদেশ বহাল থাকার কারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে মার্কেটটি ভাঙা বা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।

প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ২০১৯ সালের এপ্রিলে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে মার্কেটে সতর্কতামূলক ব্যানার ঝুলিয়ে সতর্ক করে।

তিনি বলেন, 'ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে অগ্নি নিরাপত্তা সম্পর্কে বারংবার নোটিশ প্রদান করে তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ঝুঁকির বিষয়টি পূর্বে অবহিত করা হলেও তারা এই বিষয়টি নিয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।'

তিনি জানান, তাদের সঙ্গে অসংখ্যবার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে বৈঠক করা হয়েছিল। মার্কেটে গিয়ে ব্যবসায়ী সমিতির অফিসে মতবিনিময় করে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। সর্বমোট ১০ বার নোটিশ প্রদান করা হয়েছিল।

আজ সকালে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।

Comments

The Daily Star  | English
Exporters to get Tk 108.5 for a dollar from Aug 1

Taka gains against dollar after years

Taka gains ground as dollar influx rises, strengthening currency after years

1h ago