​​​​​​​​​​​​​​​​​​​​​​​​​​​রানা প্লাজা ট্রাজেডির ১০ বছর: গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির মাসব্যাপী কর্মসূচি

দেশের পোশাকশিল্পে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি রানা প্লাজা ধসের ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে সাভারে রানা প্লাজার সামনে আলোচনা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

দেশের পোশাকশিল্পে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি রানা প্লাজা ধসের ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে সাভারে রানা প্লাজার সামনে আলোচনা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছে।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে ধসে পড়েছিল ৯ তলা ভবনটি। ভবন ধসে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ১৩৮ শ্রমিক এবং আহত হয়েছেন ২ হাজার ৪৩৮ শ্রমিক। আহতদের অনেকেই পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

আজ শুক্রবার সকাল ১১টায় বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে মৃতদের স্মরণ করো, জীবিতদের জন্য লড়াই করো; দোষীদের শাস্তি দাও, জান বাঁচাতে ২৫ হাজার টাকা মজুরি করো এসব দাবিতে মাসব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়েছে।

এসময় সেদিনের ঘটনা স্মরণ করে আহত শ্রমিক রূপালী আক্তার বলেন, 'রুদ্ধশ্বাস ১৭ ঘণ্টা, কীভাবে বেঁচে ফিরেছি জানিনা। যখন আমাকে উদ্ধার করা হয়, তখনও ভয় কাজ করছিল, এভাবেই আমাকে মাটি চাপা দেওয়া হবে কি না, নাকি লাশ ভেবে ফেলে দেওয়া হবে! ১০ টা বছর পেরিয়ে গেল, কিন্তু সেই ভয় আর আতঙ্ক আজও তাড়া করে আমায়।'

'আজও বিচার পাইনি আমরা, আগামী ২৪ এপ্রিল ভয়াবহ সেই স্মৃতির ১০ বছর পূর্তি হবে। আবারও সেই বিচারের দাবিতে, শ্রমিকদের অধিকারের দাবিতে আজ পথে দাঁড়ালাম,' বলেন তিনি।

গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার বলেন, 'মূলত আগামী ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ট্রাজেডির ১০ বছর পূর্ণ হবে, দিনটিকে সামনে রেখে এবার আমরা ৬ দফা দাবিসহ আমাদের মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।'

তিনি আরও বলেন, 'পোশাক শিল্পের ইতিহাসে অন্যতম এই ট্রাজেডির ১০ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো শ্রমিকরা তাদের বিচার পায়নি। পূরণ হয়নি আমাদের দাবিগুলো। এছাড়াও সেই দূর্ঘটনায় যারা বেঁচে ফিরেছেন তারা ভালো নেই। এছাড়া বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতির বাজারে আমাদের এই শিল্পের শ্রমিক ভাই বোনেরাও নিদারুণ কষ্টে দিনযাপন করছে।'

দাবি সম্পর্কে তিনি বলেন, 'রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির সঙ্গে জড়িত সবার শাস্তি নিশ্চিত করা, ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও শ্রমিক পরিবারদের পূনর্বাসন করাসহ, পোশাক শ্রমিকদের জন্য অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন করে ২৫ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, ক্ষতিপূরণের আইন পরিবর্তনসহ অন্যান্য দাবি নিয়ে আমরা আমাদের এই মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।'

রানা প্লাজার সামনে আগামী ৩ দিন এই আলোচিত্র প্রদর্শনী চলবে এবং এই প্রদর্শনী-প্রতিবাদ আগামী ৩ ও ৪ এপ্রিল শাহাবাগ, ৭ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল দৃকগ্যালারি, বিভিন্ন শ্রমিকাঞ্চলে অনুষ্ঠিত হয়ে আবারও ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজার সামনে অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়াও এর অংশ হিসাবে মাসব্যাপী আয়োজনের মধ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন, প্রতিবাদ র‍্যালী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, শিশুদের চিত্রাংকন, আলোচনা সভা ও প্রকাশনা বের করাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চলবে বলেও জানান তিনি।

এসময় সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেনসহ সংগঠনটির অন্যান্য নেতাকর্মীরা, রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত বিভিন্ন শ্রমিক, নিহত শ্রমিকদের স্বজনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Customs flags hurdles at 3rd terminal of Dhaka airport

Customs House Dhaka said it has found more than a dozen issues related to infrastructure, security, and operational readiness of the new terminal

11h ago