রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ১ বছর: কার ক্ষতি, কার লাভ

ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান নিয়ে বিশেষজ্ঞদের বিস্তর লেখালেখি, গবেষণা চলছে। নানা ধরনের ভূ-রাজনৈতিক, সামরিক, অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ চলছে। যুদ্ধের জয়-পরাজয়, ভুল-শুদ্ধ, ক্ষয়-ক্ষতি, ন্যায়-অন্যায়, দায়-পরিণতি নিয়ে সর্বত্র আলাপ চলছে।

এমন পরিস্থিতিতে এ যুদ্ধের বছর পূর্তি হলো। কিন্তু, সহসাই তা শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ বা উদ্যোগ নেই। সম্প্রতি এ যুদ্ধকে ঘিরে যেসব সংবাদ সামনে এসেছে সেদিকে নজর দিলে এর গতি-প্রকৃতির কিছুটা ধারণা পাওয়া যাবে।

১. ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এই যুদ্ধের শান্তি আলোচনা ও যুদ্ধ বিরতির অনেক দূর এগিয়েছিল। পশ্চিমা শক্তিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, তাদের কারণে তা হতে পারেনি। তারা শান্তি উদ্যোগকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।

২. সাংবাদিক সিমোর হার্শের তার এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দাবি করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র নর্ডস্টিম গ্যাস পাইপলাইনে নাশকতা চালিয়েছে। যে লাইনের মাধ্যমে জার্মানি রাশিয়া থেকে সস্তায় গ্যাস পেত। এর মানে জার্মানির সহজ ও সস্তায় গ্যাস পাওয়ার সুযোগকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

৩. ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জার্মানির এক শীর্ষ সংবাদপত্রের কাছে স্বীকার করেছেন যে, তিনি রাশিয়ার সঙ্গে মিনস্ক শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করতে অস্বীকার করেছিলেন।

৪. যুদ্ধের বছরপূর্তিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বিবিসিকে বলেন, 'কোনো অঞ্চল ছাড় দিয়ে রাশিয়া ও পুতিনের সঙ্গে কোনো প্রকার আপোষ হবে না।

৫. পুতিন বলেন, 'যারা যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে হারানোর আশা করছে, তারা হয়তো জানেন না, রাশিয়ার সঙ্গে আধুনিক যুগের যুদ্ধ তাদের জন্য অনেক আলাদা হবে। পশ্চিমের দেশগুলো যেহেতু ইউক্রেনকে নিত্য নতুন অস্ত্র দিচ্ছে, তাই এর জবাবে রাশিয়া নিজেদের শক্তিশালী অস্ত্রগুলোর সর্বোচ্চ কাজে লাগাবে।

৬. মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ—চীন রাশিয়াকে অস্ত্র-গোলাবারুদ দেওয়ার কথা ভাবছে। সেটা হলে, চীনকে চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে।

৭. পোল্যান্ডে এক ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, 'রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখনো পশ্চিমাদের দৃঢ়তা বুঝতে পারেননি।

এমনি নানান পাল্টাপাল্টি বক্তব্য-মন্তব্যের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট পুতিন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যকার পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি 'নিউ স্টার্ট' স্থগিতের ঘোষণা দেন।

এ যুদ্ধের প্রধান কারণ মিনস্ক চুক্তির লঙ্ঘন

২০১৫ সালে বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়। মিনস্ক চুক্তির অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল—পূর্ব ইউক্রেন থেকে সামরিক স্থাপনা, সামরিক সরঞ্জাম ও ভাড়াটে সেনাদের সরিয়ে নিতে হবে। এছাড়া বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলগুলোকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার কথা বলা হয়।

বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলগুলো নিজস্ব পুলিশ বাহিনী গঠন করতে এবং স্থানীয় প্রসিকিউটর ও বিচারক নিয়োগ করতে পারবে। এতে স্থানীয় নির্বাচনের জন্য বিদ্রোহী নেতাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার কথাও বলা হয়। কিন্তু কিয়েভ চুক্তিটি বাস্তবায়ন করেনি।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ইউক্রেনে প্রায় ১০ হাজার বিদেশি সামরিক বিশেষজ্ঞ স্থায়ীভাবে রয়ে গেছেন। এর মধ্যে ৪ হাজারই যুক্তরাষ্ট্রের। জার্মানি ও ফ্রান্স সে কথা স্বীকার করেছে।

এই চুক্তির মূল কারণ ছিল ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য সময় ক্ষেপণ করা।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও পাকিস্তান সরকার সময় ক্ষেপণ করে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র-সৈন্য এনেছিল। মিনস্ক চুক্তি লঙ্ঘনের মাধ্যমে নীরব রাশিয়াকে মার্কিন-ইউরোপ যুদ্ধ জড়াতে বাধ্য করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ

এই যুদ্ধের কারণ মার্কিনীদের একক সামরিক কর্তৃত্বের অভিলাষ। মার্কিন শাসকরা সেই পরিকল্পনায় যখন পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোকে একের পর এক তাদের সামরিক ছাতার নিচে নিয়ে আসতে থাকে তখন থেকেই যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়তে থাকে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প পর্যায়ক্রমে তার শাসনকালে ন্যাটো ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন। তিনি মনে করেছেন যে, স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর এই জোটের দরকার নেই। কিন্তু জো বাইডেন এসে তার পূর্ববর্তীদের পথই অবলম্বন করেন। ন্যাটোর সম্প্রসারণ করতে করতে একে রাশিয়ার দোর গোড়ায় নেওয়া হয়।

ইউক্রেন যুদ্ধে মার্কিন বিনিয়োগের লাভ বহুমুখী ও সুদূরপ্রসারী

১. ইউরোপের সব দেশ তাদের সামরিক ব্যয় বাড়িয়েছে। কোন কোন রাষ্ট্র দ্বিগুণ করেছে। কানাডা প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ৮৮টি এফ-৩৫ কেনার পরিকল্পনা করছে। ফিনল্যান্ড গত বছর প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ৬৪টি প্লেনের অর্ডার ঘোষণা করেছে।

জার্মানি তার সেনাবাহিনীকে উন্নত করতে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বিশেষ তহবিলের ঘোষণা দিয়েছে। মার্কিন অস্ত্র নির্মাতারা কার্যাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে।

এ সময়ে মার্কিন অস্ত্র কোম্পানিগুলো রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা করছে। উৎপাদন বাড়াতে কোম্পানিগুলো অনেক নতুন কর্মী নিয়োগ করছে।

২. ইউরোপের বাজার থেকে রাশিয়ার সস্তা ও সহজ লভ্য গ্যাস সরিয়ে দিয়ে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর উচ্চমূল্যের মার্কিন এলএনজি রপ্তানি দ্বিগুণ-তিনগুণ বৃদ্ধি করেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর ৬ মাসের মাথায় ইউরোপে আমেরিকান এলএনজি রপ্তানি দ্বিগুণ হয়েছে। ইউরোপে তাদের বাণিজ্যিক আধিপত্য পাকা করছে।

৩. সম্প্রতি ইউএস কর্পোরেট লবির কাছে এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি, ব্ল্যাক রক, জেপি মরগান, গোল্ডম্যান শ্যাক্স ও স্টারলিঙ্কের মতো কোম্পানিগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে জোর দিয়ে বলেছেন যে, আপনারা প্রত্যেকেই ইউক্রেনে বিনিয়োগ করে বড় বড় ব্যবসা করতে পারেন। এর মাধ্যমে ইউক্রেন মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানির কাছে নিজেদের অর্থনীতি তুলে দিল।

৪. ইউএস ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার মার্কিন অর্থনীতি লাভবান হচ্ছে। কেননা ডলার কিনতে বিশ্বের সব দেশকে এখন বেশি অর্থ গুণতে হচ্ছে।

৫. মার্কিনীদের কৌশলগত সহযোগী ভারত বন্ধুরাষ্ট্র রাশিয়া থেকে স্বল্প মূল্যে গ্যাস ও অন্যান্য পণ্য কিনে ব্যাপক লাভবান হচ্ছে। এক্ষেত্রে চীনও লাভবান হয়েছে।

৬. রাজনৈতিকভাবে চীনকে কোণঠাসা ও চীনের বিরুদ্ধে তার পক্ষশক্তিকে ব্যবহার করছে।

৭. গত নভেম্বরের মধ্যেই অস্ত্র-ব্যবসায়ীদের পকেট প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলার চলে গেছে। জানুয়ারিতে আমেরিকার শিকাগো-ভিত্তিক ইন দিজ টাইমস ম্যাগাজিন জানিয়েছে, ভার্জিনিয়ার সামরিক কোম্পানি, রেথিয়নের সিইও, গ্রেগ হেস ও ওয়াশিংটনের নিকটবর্তী মেরিল্যান্ডের প্রতিরক্ষাবিষয়ক কোম্পানি, লকহিড মার্টিনের প্রধান, জিম টেকলেট তাদের অংশীদারদের সুখবর দিয়ে জানাচ্ছেন যে, গত এক বছরে ইউক্রেন-রাশিয়া বিরোধে তারা বিপুল পরিমাণে মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছেন।

ইউরোপ ও ইউক্রেনের ক্ষতি

১. পুরো ইউরোপ রাশিয়ার তেল-গ্যাসের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। তাদের তেল ও গ্যাস চাহিদার যথাক্রমে ২৫ ও ৪০ ভাগ আসতো রাশিয়া থেকে। তা আজ বন্ধ হওয়ায় সেখানে এ সবের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। জ্বালানি সংকটের কারণ তাদের শিল্প-কলকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। পণ্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়ে জীবনমান কঠিন হয়ে উঠছে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ গত অক্টোবরে উল্লেখ করেন যে, আমেরিকান গ্যাস উৎপাদকরা ইউরোপীয় গ্রাহকদের থেকে আমেরিকান গ্রাহকদের কাছ থেকে কয়েকগুণ বেশি দাম নিচ্ছে।

২. ইউক্রেনের প্রায় দেড় কোটি শরণার্থী ইউরোপে প্রবেশ করেছে। চলমান সংকটের সঙ্গে এটা বাড়তি বোঝা হিসেবে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এ কারণে ইউরোপের রাজনীতি ও অর্থনীতি গভীর সংকটে। এ অঞ্চলে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করছে ও জনজীবনে নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠছে।

৩. ইউরোপের রাজনীতি-অর্থনীতি আমেরিকার ওপর ক্রমশ নির্ভরশীল হচ্ছে। ইউরোপের সব দেশ তাদের খাদ্য, জ্বালানি ও মানবিক সংকট কাটিয়ে উঠতে মার্কিনের ওপর নির্ভরশীল।

৪. ইউক্রেন তার ভূমির ২০ শতাংশ হারিয়েছে। ব্যাপক ঋণগ্রস্ত দেশে পরিণত হয়েছে। প্রচুর সৈন্য হারিয়েছে ও মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে।

৫. সামরিক হার্ডওয়্যার ছাড়াও, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনে ভৌত অবকাঠামোর ক্ষেত্রে অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। অন্তত ১৯৫টি কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ২৩০টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ও ৯৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত, ধ্বংস বা জব্দ করা হয়েছে। আবাসিক ভবন ও রাস্তাগুলো প্রায় ৬০ বিলিয়ন ক্ষতির পরিমাণে অবকাঠামোগত ক্ষতির সর্বাধিক পরিমাণের জন্য দায়ী, যেখানে ২৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে৷ ইউক্রেনীয় ব্যবসায়িক সম্পদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার।

রাশিয়ার ক্ষতি

১. পশ্চিমারা অর্থনৈতিক অবরোধের মাধ্যমে রাশিয়াকে প্রায় একঘরে করে রেখেছে। যদিও যে উদ্দেশে তারা এ কাজ করেছিল তা সফল হয়নি। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ৪ হাজারের বেশি অর্থনৈতিক অবরোধ আছে।

২. রাশিয়াকে সুইফট সিসটেম থেকে বাদ দিয়ে তাদের রিজার্ভের ৪৫ শতাংশ মানে ৬০৯ বিলিয়ন ডলার আটকে দিয়েছে।

৩. ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি, ওরাকল, বিএমডব্লিউ, অ্যাপল, মারসক ও এয়ারবাসসহ অনেক বিদেশি কোম্পানি রাশিয়ায় তাদের কার্যক্রম বা বিনিয়োগ বন্ধ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।

৪. রাশিয়ার প্রধান ক্ষতি অর্থনীতি, বাণিজ্যিক ও মানবিক। তারা এখন পুরোমাত্রায় অর্থনৈতিক ও সামরিক যুদ্ধে লিপ্ত।

৫. তাদের বিপুল সংখ্যক প্রশিক্ষিত সৈন্য ও সামরিক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ সামরিক যন্ত্রপাতির ক্ষতি হয়েছে।

এ যুদ্ধের সমাধান কোন পথে, ভবিষ্যৎ কি?

ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব রাজনীতি-অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। একবছরে পশ্চিমা দুনিয়া ও ন্যাটো এক হয়েও রাশিয়াকে টলাতে পারেনি। রাশিয়া বড় ও সম্পদশালী দেশ হিসেবে হয়তো এ ক্ষতির ধাক্কা সামলাতে পারছে ও পারবে। কিন্তু পশ্চিমা সাহায্যে দীর্ঘমেয়াদে যুদ্ধে ইউক্রেন কতটা সুবিধা করতে পারবে সে প্রশ্ন সঙ্গত।

ইউক্রেনের বিদ্যুৎ, স্থাপনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যোগাযোগ, আবাসন ও মানবসম্পদের যে ক্ষতি হয়েছে তাতে দেশটির অর্থনীতি ভয়ঙ্করভাবে বিপর্যস্ত। পরিস্থিতি এমন যে মার্কিন ইশারা ছাড়া তাদের কিছু করার ক্ষমতা নেই। শান্তি প্রক্রিয়া সম্পর্কে নাফতালি বেনেটের বক্তব্য সে কারণেই সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

ইউক্রেন একটি অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। যুদ্ধের মধ্যেও দুর্নীতি ও লুটপাটের দায়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জেলেনস্কির স্ত্রীর নামও পানামা পেপারে আছে। যুদ্ধকালীন পশ্চিমা সাহায্যের বড় অংশই দুর্নীতিবাজদের পকেটে যাচ্ছে। দুর্নীতির অভিযোগ রুশ সরকার ও পুতিনের বিরুদ্ধেও আছে।

রাশিয়ার তুলনায় ইউক্রেন দুর্বল দেশ। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মতো পর্যাপ্ত শক্তি-সামর্থ্য না থাকলেও আমেরিকা ও পশ্চিমাদের প্ররোচনা এবং সাহায্যে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়া এখনো বিশ্বের প্রধান সামরিক ও পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশ। সে অর্থে রাশিয়া যুদ্ধ ইউক্রেনের সঙ্গে করছে না, করছে মার্কিন ও পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে। এ যুদ্ধে ইউক্রেন তাদের সাহায্য নিয়ে কতটুকু পেরে উঠবে সেটাই প্রশ্ন।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে তার উৎপাদিত আধুনিক ও দূরপাল্লাসহ নানা ধরনের অস্ত্রের পরীক্ষার ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

এই যুদ্ধের বছরপূর্তিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মস্কো সফরে গিয়ে রুশ নেতাদের কাছে তাদের ১২ দফার শান্তি পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। এখনো এ বিষয়ের বিস্তারিত তথ্য ও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

সে যাই হোক, এ যুদ্ধের আঞ্চলিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক স্বার্থ-সমীকরণের বোঝাপড়াই বলে দেবে এর ভবিষ্যৎ ও গতিপথ কী হবে? এ বিষয়ে ব্রিটেনের বার্মিংহামি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক স্টেফান ওলফের মন্তব্য, যুদ্ধ ক্ষণস্থায়ী বা প্রলম্বিত যাই হোক না কেন এ বেড়াজাল থেকে ইউক্রেন সহসা মুক্তি পাচ্ছে না।

ড. মঞ্জুরে খোদা, লেখক-গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক, ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডা

(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)

Comments

The Daily Star  | English

Admin officers protest plan for more non-admin deputy secretaries

Non-admin officers announce strike tomorrow, demanding exam-based promotions

1h ago