যমুনা সার কারখানায় যান্ত্রিক ত্রুটি, উৎপাদন বন্ধ

যমুনা সার কারখানা। ছবি: স্টার

বড় ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার যমুনা সার কারখানায় (জেএফসিএল)। এতে চলতি ভরা মৌসুমে বন্ধ হয়ে গেছে কারখানার ইউরিয়া সার ও অ্যামোনিয়া উৎপাদন।

গতকাল রোববার বিকেলে কারখানায় এক দুর্ঘটনার পর এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে বিষয়টি রহস্যজনক হওয়ায় কারখানার ভেতর ও বাইরে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

জেএফসিএল সূত্র জানায়, সম্প্রতি যমুনা সার কারখানার অ্যামোনিয়া প্লান্টের এনজি বুস্টার কমপ্রেসারে মাত্রাতিরিক্ত নাইট্রোজেন অপচয়সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। কর্তৃপক্ষ এনজি বুস্টার ক্রয় ও পুনঃস্থাপনের জন্য বেসরকারি আন্তর্জাতিক কোম্পানি ইনগার্সল-রেন্ড (ইন্ডিয়া) লিমিটেডের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে ইনগার্সল-রেন্ড কর্তৃপক্ষ কারখানা পরিদর্শনের জন্য তাদের ডেপুটি ম্যানেজার (সার্ভিস) ও ভারতীয় বিশেষজ্ঞ তানাজি এস পন্দেকারের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি টিম পাঠায়। ওই টিমের অন্য ২ সদস্য হলেন ইনগার্সল-রেন্ড'র টেরিটরি ম্যানেজার (সার্ভিস) মো. ইমামুল সর্দার এবং মার্কেটিং প্রতিনিধি কসমো মার্কেটিং কনসালটেন্টস প্রাইভেট লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম।

কারখানার ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (এমটিএস) মো. আফাজ উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভারতীয় বিশেষজ্ঞ তানাজি এস পন্দেকার রোববার বিকেলে কারখানার অ্যামোনিয়া প্লান্টের এনজি বুস্টার কমপ্রেসার পরিদর্শন করছিলেন। এসময় হঠাৎ বিকট আওয়াজে অ্যামোনিয়া প্লান্ট বন্ধ হয়ে যায়। এতে মুহূর্তেই ইউরিয়া সার ও অ্যামোনিয়া উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ে।'

সেসময় বিকট আওয়াজে কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করতে থাকেন। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি প্রথমে স্বাভাবিক বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও আজ সোমবার সকাল থেকে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়।

এমটিএস আফাজ উদ্দিন বলেন, 'আমি ও কারখানার মেশিনারিজ প্রধান ভূপতি চন্দ্র বিশ্বাসসহ ভারতীয় বিশেষজ্ঞ তানাজি এস পন্দেকার এনজি বুস্টার কমপ্রেসারের বিভিন্ন প্যারামিটার ঘুরে দেখছিলাম। এসময় এমটিএস বিভাগের কয়েকজন কর্মচারী ওভারটাইম সংশ্লিষ্ট কিছু জটিলতা নিয়ে আমার কাছে আসেন। তাদের সঙ্গে আমি আলাদাভাবে কথা বলার সময় আমার অনুপস্থিতিতে ভূপতি চন্দ্র বিশ্বাস অ্যামোনিয়া শিফট ইনচার্জ ফজলুল হককে ওই বিশেষজ্ঞের সঙ্গে থাকতে বলেন। পরিদর্শন চলাকালে বিকেল পৌনে ৪টায় হঠাৎ অ্যামোনিয়া কমপ্রেসার বন্ধ হয়ে যায়। এতে অ্যামোনিয়া ও ইউরিয়া সার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তবে সেসময় ওই বিশেষজ্ঞ আসলে কী করেছিলেন, সেটা এখনই স্পষ্ট বলা যাচ্ছে না।'

এ ঘটনায় আজ সকালে ৫ সদস্যের এক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে আগামী ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় পরিদর্শকের সঙ্গে থাকা মো. আফাজ উদ্দিনকে তদন্ত কমিটির প্রধান ও ভূপতি চন্দ্র বিশ্বাসকে সদস্য করা হয়েছে। এতে বিষয়টি পরিকল্পিত নাকি অনাকাঙ্ক্ষিত, তা নিয়ে খোদ কারখানার ভেতরেই বিভিন্ন প্রশ্নের উদয় হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Constitution should be updated

Dr Kamal Hossain, emeritus president of Gono Forum, yesterday recommended updating the constitution.

18m ago