জেসিন্ডার প্রতি ‘ঘৃণ্য’ আচরণের প্রতিবাদ নিউজিল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রীর

নিউজিল্যান্ডের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স। ছবি: এএফপি
নিউজিল্যান্ডের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স। ছবি: এএফপি

নিউজিল্যান্ডের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স সদ্য সাবেক হওয়া প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের প্রতি 'ঘৃণ্য' আচরণের তীব্র সমালোচনা করেন।

আজ রোববার বার্তাসংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদন এই তথ্য জানা গেছে। 

জেসিন্ডার পদত্যাগের পর লেবার পার্টির এমপিরা সর্বসম্মতিক্রমে দলের নেতা ও দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হিপকিন্সকে নির্বাচন করার কয়েক ঘণ্টা পর তিনি গত ৫ বছর দায়িত্ব পালনকালে জেসিন্ডার বিরুদ্ধে আসা ব্যক্তিগত আক্রমণের তীব্র সমালোচনা করেন।

গত বৃহস্পতিবার পদত্যাগের ঘোষণার পাশাপাশি জেসিন্ডা তার ওপর চেপে বসা সার্বক্ষণিক চাপের কথা জানান। তিনি নিজেকে গাড়ির সঙ্গে তুলনা করে বলেন, তার '(গ্যাস) ট্যাংকে আর তেমন কিছুই নেই'।

হিপকিন্স বলেন, 'জেসিন্ডার সঙ্গে যে ধরনের আচরণ করা হয়েছে, বিশেষত, সমাজের ক্ষুদ্র ও সংখ্যালঘু কিছু শ্রেণীর আচরণ খুবই ঘৃণ্য প্রকৃতির ছিল'।

৪৪ বছর বয়সী শিক্ষা ও পুলিশ মন্ত্রী যোগ করেন, 'তারা ও তাদের আচরণ আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করে না'।

হিপকিন্স আরও জানান, এ ধরনের আচরণের বিপরীতে সবারই প্রতিবাদ জানানো উচিৎ।

প্রায় ২ বছর ধরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে উপযোগিতার সঙ্গে লড়াই পরিচালনার জন্য সবার কাছে বিশেষ পরিচিতি পান হিপকিন্স।

তিনি জানান, দেশের নেতা হয়ে তিনিও 'জনগণের সম্পত্তিতে' পরিণত হবেন—এ বিষয়টি তিনি মেনে নিয়েছেন। 

'কিন্তু আমার পরিবার এর অংশ নয়, যোগ করেন তিনি।

সাংবাদিকদের তিনি জানান, তিনি প্রত্যাশা করেন, তার ৬ বছর বয়সী ছেলে ও ৪ বছর বয়সী মেয়ে নিউজিল্যান্ডের অন্য যেকোনো সাধারণ পরিবারের সন্তানের মতই বড় হবে।

পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে আপাতত তিনি ও তার স্ত্রী আলাদা থাকছেন। এ বিষয়টিকে তিনি একান্ত ব্যক্তিগত বলে অভিহিত করেন।

তিনি বলেন, 'আমি দেখেছি, জেসিন্ডা ও তার পরিবার সর্বক্ষণ বড় আকারের চাপ ও সবার অব্যাহত নজরে ছিলেন। এ ক্ষেত্রে আমার প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, আমি আমার পরিবারকে পুরোপুরি পাদপ্রদীপের আলো থেকে দূরে রাখবো।'

জেসিন্ডা জানান, তিনি নিউজিল্যান্ডকে করোনাভাইরাস মহামারি, দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মতো বড় বড় বিপর্যয়ের মধ্যে নেতৃত্ব দিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।

বুধবার জেসিন্ডা আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করার পর দেশের ৪১তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন হিপকিন্স।

তিনি জানান, তার নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ড করোনাভাইরাস থেকে নজর সরিয়ে অর্থনীতিকে বলিষ্ঠ করার দিকে নজর দেবে।

এছাড়াও তিনি দেশের ক্রমবর্ধমান অপরাধের হার কমানোরও প্রতিশ্রুতি দেন।

হিপকিন্স আরও জানান, দেশের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি প্যাসিফিক দ্বীপের অধিবাসী কারমেল সেপুলোনিকে নিয়োগ দেবেন।

নিউজিল্যান্ডের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী প্যাসিফিক দ্বীপের অধিবাসী কারমেল সেপুলোনি। ছবি: এএফপি
নিউজিল্যান্ডের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী প্যাসিফিক দ্বীপের অধিবাসী কারমেল সেপুলোনি। ছবি: এএফপি

সেপুলোনি (৪৬) ২০০৮ সালে পার্লামেন্টের সদস্য হন এবং তিনি ২০১৭ থেকে সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সেপুলোনি জানান, তার সামোয়া ও টোঙ্গা বংশোদ্ভূত পিতা ১৯৬৪ সালে রেলপথ নির্মাণের কাজ করার জন্য নিউজিল্যান্ডে আসেন।

নিউজিল্যান্ডের ৫১ লাখ জনগোষ্ঠীর প্রায় ৮ শতাংশ প্যাসিফিক দ্বীপ থেকে আগত।

জেসিন্ডার আমলের উপ-প্রধানমন্ত্রী গ্র্যান্ট রবার্টসন অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

4h ago