গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপির ৭ এমপির পদত্যাগ: তথ্যমন্ত্রী
গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপি দলীয় ৭ সংসদ সদস্য পদত্যাগ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির ঘোষণা দিয়েছিল ১০ তারিখ তারা সরকার হটিয়ে দেবে। এখন দেখা যাচ্ছে তারা নিজেরাই হটে যাচ্ছে। এই ঘোষণার মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হয়, তারা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। এই পদত্যাগে সংসদ বা সরকারের কোনো ক্ষতি হবে না। ক্ষতি হবে বিএনপির। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে না দিয়ে বিএনপির যেমন ক্ষতি হয়েছে, এই পদত্যাগেও বিএনপির ক্ষতি হবে। নিয়ম অনুযায়ী সেখানে উপনির্বাচন হবে।
২৪ ডিসেম্বর গণমিছিল ডাকা দুরভিসন্ধিমূলক মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেদিন আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল। বিএনপির ১০ দফা দাবি আমি দেখেছি, এগুলো গতানুগতিক।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা এবং অন্যান্য সহযোগিতা যেটি সরকারের পক্ষ থেকে যা করা প্রয়োজন ছিল সরকার তা করেছে। যে কারণে দেশের ৯টি বিভাগী পর্যায়ের শহরে তারা (বিএনপি) বড় সমাবেশ করেছে। ঢাকায় যাতে তারা তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সমাবেশ করতে পারে সে জন্য যে মাঠটি সবচেয়ে বড়; সোহরাওয়ার্দী উদ্যান তাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সেটি অজ্ঞাত কারণে তাদের পছন্দ না হওয়ায় তাদের ৪টি বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তারা কোনোটি গ্রহণ না করে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে রাস্তা বন্ধ করে, যেখানে ১০-২০ হাজার মানুষ ধরে—সেখানে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটানোর ঘোষণা দিয়ে যেখানে ১০-২০ হাজার মানুষ ধরে সেই জায়গা কেন চাইলো সেটি অনেকের মনে প্রশ্ন ছিল। অবশ্য সেই প্রশ্নের উত্তর তারা ৭ তারিখ দিয়ে দিয়েছে।
তারা ৭ তারিখ থেকে সমাবেশ করতে শুরু করল। পুলিশ যখন রাস্তা চালু রাখার অনুরোধ জানালো, সমাবেশ করতে নিষেধ করেনি। বরং একটি লেন চালু রাখতে বললো, পুলিশ যখন বারবার অনুরোধ জানাচ্ছিল তখন পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ যখন দলীয় কার্যালয়ে তল্লাশি চালালো, সেখানে ১৫টি তাজা বোমা, ২ লাখ পানির বোতল, ১৬০ বস্তা চাল, রান্না করা খিচুড়ি এবং রান্না করার সরঞ্জাম পায়। এতেই প্রমাণিত হয়, তাদের উদ্দেশ্য সমাবেশ করা ছিল না—বিশৃঙ্খলা তৈরি করা। এরপর সারা দেশে বিভিন্ন জায়গায় তারা গাড়িতে আগুন দিয়েছে। গতকালও মানুষ শঙ্কার মধ্যে ছিল যে, তারা আবার সেই অগ্নি সন্ত্রাসই করবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থান, একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঠে সরব উপস্থিতির কারণে তারা যেভাবে করতে চেয়েছিল সেভাবে করতে পারেনি। অর্থাৎ সন্ত্রাস-নৈরাজ্য যেভাবে করতে চেয়েছিল সেভাবে করতে পারেনি। এরপরও বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর করেছে। তারা বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে, মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে, বলেন তিনি।
বিএনপি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অগ্নি সন্ত্রাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা বড়জোর ৫০ হাজার মানুষের সমাবেশ করেছে। যে মাঠে তারা সমাবেশ করেছে সেখানে গরুর হাট বসে। ওটাই তারা পছন্দ করেছে। সেই মাঠের আয়তন ৫০ হাজার বর্গফুট। সেই মাঠে কতজন মানুষ ধরে সেটি সহজেই অনুমেয়। তার বাইরে রাস্তা মিলিয়ে ৫০ হাজার মানুষের সমাবেশ করেছে। আমরা থানায় যে জনসভা করি, সেখানেও অনেক সময় এর চেয়ে বেশি মানুষ হয়। আমরা দেখলাম, তারা সরকারের পদত্যাগ দাবি করতে এসে নিজেরাই পদত্যাগ করছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, তারা দাবি করেছিল, ১০ ডিসেম্বর সরকারের পদত্যাগ, সরকারের পতন। এখন দেখা যাচ্ছে, নিজেরা পদত্যাগ করছে। ১০ দফা দাবি দিয়েছে। বলেছিল, ১০ তারিখের পর একদফা দাবি। অর্থাৎ বিএনপি সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের পথ পরিহার করতে পারেনি। বিএনপি সেই পথেই আছে। সেই পথ থেকে যতদিন তারা ফিরে না আসবে, ততদিন বিএনপি কোনো মঙ্গল হবে না।
Comments