ম্যাচের প্রতিটি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে জানে আর্জেন্টিনা: স্কালোনি
৮৩ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। ম্যাচের আর অল্প সময় বাকি থাকায় নির্ধারিত সময়েই হাতছানি দিচ্ছিল জয়। কিন্তু এরপর দেখা মিলল চরম নাটকীয়তার। নেদারল্যান্ডস দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানোয় লড়াই গড়াল টাইব্রেকারে। শেষ পর্যন্ত স্নায়ুচাপ সামলে সেমিফাইনালে উঠল আলবিসেলেস্তেরাই। দলটির কোচ লিওনেল স্কালোনি জানালেন, সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার উপায় জানেন তারা।
শুক্রবার রাতে কাতার বিশ্বকাপের রুদ্ধশ্বাস কোয়ার্টার ফাইনালে ডাচদের হারায় আর্জেন্টিনা। লুসাইল স্টেডিয়ামে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে ১২০ মিনিটের খেলা শেষ হয় ২-২ গোলে। এরপর টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে জিতে উল্লাসে মাতে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। তাদের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি ও গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। নাহুয়েল মলিনাকে অ্যাসিস্টের পর গোলও করেন আরেকটি নজরকাড়া পারফরম্যান্স উপহার দেওয়া মেসি। পেনাল্টি শুটআউটে প্রতিপক্ষের প্রথম দুটি শট রুখে দেন এমিলিয়ানো।
অনায়াস জয়ের দিকেই এগোচ্ছিল শিরোপাপ্রত্যাশী আর্জেন্টিনা। কিন্তু ৭৮তম মিনিটে বদলি নামা ভৌট ভেগহর্স্ট পাল্টে দেন সমস্ত হিসাবনিকাশ। তার জোড়া গোলে সমতায় ফেরে নেদারল্যান্ডস। নিজের দ্বিতীয় গোলটি তিনি করেন দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা ১০ মিনিটের শেষ মিনিটে পাওয়া ফ্রি-কিককে কাজে লাগিয়ে। অথচ তখন চলছিল ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার অপেক্ষা! এরপর অবশ্য টাইব্রেকারে ডাচদের হৃদয় ভেঙে চূড়ান্ত পার্থক্য গড়ে দেন এমিলিয়ানো।
শেষ চারের টিকিট নিশ্চিতের পর স্কালোনি জানান, পেনাল্টি শুটআউটের যাওয়ার আগেই ম্যাচ শেষ করতে চেয়েছিলেন তারা, 'আর্জেন্টিনার দলীয় মনোবল রয়েছে কারণ আমরা জানি কীভাবে ম্যাচের প্রতিটি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। এটা সত্য যে পেনাল্টি শুটআউটে যাওয়া আমাদের প্রাপ্য ছিল না। তবে আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছি কারণ ডাচরা আমাদের জন্য সমস্যা তৈরি করছিল।'
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের দ্বিতীয়ার্ধকে অদ্ভুতুড়ে উল্লেখ করে আর্জেন্টিনা কোচ প্রশংসায় মাতেন শিষ্যদের, 'দ্বিতীয়ার্ধটা ছিল অদ্ভুতুড়ে। যখন মনে হয়েছিল, সবকিছু শেষ হয়ে গেছে, ঠিক তখনই দেখা গেল যে না (শেষ হয়নি)। আপনাকে অবাক হতে হলো। এই দল গর্ব করতে পারে, এই দলের অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মিশেল রয়েছে। আমরা লড়াই করতে চাই এবং এটাই হলো (সাফল্যের) চাবিকাঠি।'
সমতায় ফিরতে উন্মুখ নেদারল্যান্ডস শেষদিকে লম্বা ও উঁচু করে বাড়ানো পাসে খেলার কৌশল বেছে নেয়। তাতে ফলও মেলে। প্রতিপক্ষ কোচ লুই ফল হালের এমন পরিকল্পনা বিস্মিত করেছে স্কালোনিকে, 'আমি এই বিষয়ে কোনো বিতর্কে জড়াতে চাই না। তারা এমন কায়দায় খেলেছে যেটা আমি প্রত্যাশা করিনি। তারা বিশ্বকাপ থেকে তখন প্রায় ছিটকেই গিয়েছিল (২-০ গোলে পিছিয়ে থাকায়)। তবে প্রতিটি কোচই তাদের নিজস্ব ঘরানায় খেলার ছক কষে থাকেন।'
নেদারল্যান্ডস বাধা টপকে এবার আর্জেন্টিনার ফাইনালে ওঠার অভিযান। একই ভেন্যুতে আগামী মঙ্গলবার রাতে আসরের প্রথম সেমিতে তারা মুখোমুখি হবে ব্রাজিলকে বিদায় করে দেওয়া ক্রোয়েশিয়ার।
Comments