চেকপোস্টে পথচারীদের মোবাইলের ফটো গ্যালারি চেক করছে পুলিশ

আব্দুল্লাহপুর চেকপোস্টে পুলিশ সদস্যরা পথচারীদের মোবাইলের ছবি চেক করছেন। ছবি: স্টার

রাজধানীতে প্রবেশের সময় আব্দুল্লাহপুর চেকপোস্টে পুলিশ সদস্যরা পথচারীদের মোবাইলের ছবি চেক করছেন। এর পাশাপাশি তাদের শরীর তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এমনকি কাউকে সন্দেহভাজন মনে হলে তাদের ছবিও তুলে রাখতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের।

এমনই একজনের ফোন গ্যালারিতে গ্রুপ ছবি থাকায় ৫ জনকে উত্তরা পূর্ব থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আজ শনিবার সকাল থেকে আব্দুল্লাহপুর ট্রাফিক পুলিশ বক্সের কাছে ঢাকায় প্রবেশমুখে এসব ঘটনা দেখা যায়।

চেকপোস্টে বুকে হাত দিয়ে থামিয়েছে এক পুলিশ সদস্য। এরপর নিজেই পকেটে হাত দিয়ে মোবাইল বের করেছেন। তারপর গ্যালারিতে আমার পরিবারসহ ব্যক্তিগত ছবি দেখছেন তারা।

রফিকুল ইসলাম, বেসরকারি চাকরিজীবী

আজ সকাল ৭টায় সরেজমিনে দেখা যায়, চেকপোস্টে ৮-১০ জন পুলিশ সদস্য পথচারীদের থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। তাদের পকেটে হাত ঢুকিয়ে মোবাইল বের করে নিজেরাই গ্যালারি দেখছেন। মোবাইলে গ্রুপ ছবি থাকলে জেরা করা হচ্ছে। মোবাইল না পাওয়া গেলে সেজন্যও প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে পথচারীদের।

এ ছাড়া, পথচারীদের কাছে ব্যাগ থাকলে তা খুলে দেখা হচ্ছে। বেশ কয়েকজন পথচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশকে ধমক দিতেও দেখা যায়। নির্দিষ্টভাবে গন্তব্য এলাকার নাম বলতে না পারলে তাদেরকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার কোনো যাত্রীবাহী বাস ঢাকায় প্রবেশ করতে দেখা যায়নি।

আব্দুল্লাহপুর চেকপোস্টে বেসরকারি চাকরিজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, 'চেকপোস্টে বুকে হাত দিয়ে থামিয়েছে এক পুলিশ সদস্য। এরপর নিজেই পকেটে হাত দিয়ে মোবাইল বের করেছেন। তারপর গ্যালারিতে আমার পরিবারসহ ব্যক্তিগত ছবি দেখছেন তারা। কিছু না পেয়ে জানতে চায়, কোথায় যাচ্ছি, কেন যাচ্ছি, অফিস কোথায়। চেকপোস্টে ১০ মিনিট ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।'

স্থানীয় বাসিন্দা আওলাদ হোসেন বলেন, 'সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গি বাজারে যাচ্ছিলাম। পথে পুলিশ চেকপোস্ট আটকে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে ২ পুলিশ সদস্য। যথাযথ কারণ দেখালেও অযথা প্রশ্ন করে আমাকে বিব্রত করতে শুরু করেন তারা। এক পর্যায়ে যেতে দিয়েছেন।'

পুলিশের প্রশ্ন সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, 'আমি মোবাইল নিয়ে কেন বের হইনি, সঙ্গে মোবাইল কেন নেই— এ জন্য নানা প্রশ্ন করেছেন তারা।'

আলতাফ হোসেন নামে এক দোকানদার বলেন, 'দোকান খুলতে টঙ্গি স্টেশন রোড থেকে আব্দুল্লাহপুর মোড় যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে চেকপোস্টে আটকে আমাকে নানা প্রশ্ন করেছে। আবার মোবাইলের গ্যালারিও চেক করে দেখেছে।'

পথচারী আলামিন হোসেন বলেন, 'অন্যান্য দিনের মতো সকালে হাঁটতে বের হয়েছিলাম। চেকপোস্টে আটকে মোবাইলের গ্যালারি চেক করে। আমার অনেক ব্যক্তিগত পারিবারিক ছবিও ছিল, সেগুলো দেখেছে পুলিশ। আমি হাঁটতে বের হয়েছি শুনে তারা আর আমাকে সামনে যেতে দেননি।'

চেকপোস্ট থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (এয়ারপোর্ট জোন) তাপস কুমার দাস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের সন্দেহ হলে ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ কারও মোবাইল ফোনের গ্যালারি চেক করতে পারে।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Bank allows paying foreign university fees

Banking reform roadmap crucial for stability, confidence

Financial sector's future hinges on effective execution of three-year reform

3h ago