ব্রাজিল বনাম ক্রোয়েশিয়া: প্রেডিকশন, একাদশ ও অন্যান্য রেকর্ড
দক্ষিণ কোরিয়াকে দাপটের সঙ্গে হারিয়ে শেষ আটে জায়গা করে নিয়েছে ব্রাজিল। অন্যদিকে জাপানের বিপক্ষে জয় পেতে ক্রোয়েশিয়াকে অপেক্ষা করতে হয়েছে টাইব্রেকার পর্যন্ত। এই ম্যাচে তাই লড়াইটা হতে পারে তুখোড় সেলেসাও আক্রমণভাগ বনাম ক্রোয়েশিয়া রক্ষণের। তবে মিশন হেক্সার স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে কোন ভুল করা চলবে না ব্রাজিল রক্ষণকেও।
ম্যাচের ফলাফল জানা যাবে ম্যাচ শেষেই, তবে তার আগে কাগজে কলমে দুদলের সামর্থ্য ও সাম্প্রতিক ফর্মের আলোকে ভবিষ্যৎবাণী নিয়ে হাজির আমরা। পাশাপাশি দুই দলের সম্ভাব্য একাদশ, ফর্মেশনও তুলে ধরা হলো ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য-
কখন?
শুক্রবার, ৯ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা
কোথায়?
এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম, দোহা
টিম নিউজ
চোট থেকে এখনও পুরোপুরি সেরে ওঠেননি ফুল ব্যাক অ্যালেক্স সান্দ্রো। তবে আক্রমণভাগ ও মাঝমাঠ নিয়ে কোন দুশ্চিন্তা নেই কোচ তিতের, এই দুই বিভাগে সকল তারকাকেই পাচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়া কোচ জ্লাতকো দালিকও ফুলব্যাক পজিশন নিয়ে পড়তে পারেন সমস্যায়। বায়ার্ন মিউনিখ ডিফেন্ডার জোসিপ স্ট্যানিসিচ ইনজুরি কাটিয়ে ফিরতে পারেন এই ম্যাচে। তবে ফের চোটাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় তাকে খেলানোর ঝুঁকি দালিক নেবেন কিনা থাকছে সেই প্রশ্নও।
নজরে থাকবেন যারা
চোট কাটিয়ে ফেরা নেইমারের ওপর নজর থাকবে অধিকাংশ ব্রাজিল ভক্তের। পিএসজি তারকা স্বভাবসুলভ ছন্দময় ড্রিবলিং ফিরে পেলে বিপদে পড়তে পারে ক্রোয়েশিয়া রক্ষণ। সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড ভিনিসিউস গতির ঝলকের পাশাপাশি ফিনিশিংটা ঠিকঠাক করতে পারলে আরও ভয়ংকর রূপ নেবে সেলেসাওরা। মাঝমাঠে তারকা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার কাসেমিরোর ওপরও নির্ভর করবে অনেক কিছু।
শক্তিধর ব্রাজিলকে চমকে দিতে মাঝমাঠে লুকা মদ্রিচের নিতে হবে বাড়তি দায়িত্ব। রক্ষণচেরা পাসের পাশাপাশি রিয়াল তারকাকে সুযোগ বুঝে নিতে হবে দুরপাল্লার শটও। যোগ্য সঙ্গ দিতে হবে মাতেও কোভাচিচকেও। জাপানের বিপক্ষে গোল করা আক্রমণভাগে অভিজ্ঞ সেনা ইভান পেরিসিচের ওপর থাকবে ফিনিশিংয়ের গুরুদায়িত্ব।
সম্ভাব্য লাইন আপ
ব্রাজিল: (৪-২-৩-১) অ্যালিসন বেকার (গোলরক্ষক), এদের মিলিতাও, মার্কুইনহোস, থিয়াগো সিলভা, দানিলো, লুকাস পাকেতা, কাসেমিরো, নেইমার, রাফিনহা, ভিনিসিউস জুনিয়র ও রিচার্লিসন।
ক্রোয়েশিয়া: (৪-৩-৩) ডমিনিক লিভাকোভিচ (গোলরক্ষক), জোস্কো গার্দিওল, ডেজান লোভরেন, জসিপ জুরানোভিচ, বোর্না সোসা, লুকা মদ্রিচ, মাতেও কোভাচিচ, মার্সেলো ব্রোজোভিচ, ইভান পেরিসিচ, আন্দ্রেজ ক্রামারিচ ও ব্রুনো পেটকোভিচ।
প্রেডিকশন
নিজেদের সেরা ফুটবল খেলতে পারলে জয়ের সম্ভাবনা বেশি থাকবে ব্রাজিলেরই। গ্রুপ পর্বে গোলবন্যা করতে না পারলেও কোরিয়ার বিপক্ষে দেখা গেছে ছন্দ খুঁজে পেলে প্রতিপক্ষ রক্ষণে কতোটা ত্রাস ছড়াতে পারে তিতের শিষ্যরা। এদিকে জাপান ম্যাচের মতো গোলবারের সামনে ব্যর্থ হলে চলবে না ক্রোয়েশিয়ান আক্রমণভাগকে। ব্রাজিলের তারকাখচিত ডিফেন্স ভাঙতে তাদের দেখাতে হবে চমক। পেরিসিচের সঙ্গে বাকিদেরও নিতে হবে দায়িত্ব, কাজে লাগাতে হবে প্রতিটি সুযোগ।
সম্ভাব্য স্কোর:
ব্রাজিল ২-১ ক্রোয়েশিয়া
ম্যাচ ফ্যাক্টস
১. ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে এখন পর্যন্ত চারবার মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিল। তিনটি জয়ের বিপরীতে একটিতে ড্র করেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এখন পর্যন্ত একবারও সেলেসাওদের হারাতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া।
২. বিশ্বকাপে এর আগে দুইবার দেখা হয়েছে ব্রাজিল ও ক্রোয়েশিয়ার। ২০০৬ সালে ১-০ ব্যবধানে ও ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে ৩-১ ব্যবধানে জয় পেয়েছিল সেলেসাওরা।
৩. সর্বশেষ আটটি বিশ্বকাপেরই কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে ব্রাজিল। ১৯৯৪ ও ২০০২ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা, ১৯৯৮ সালে হয়েছিল রানার্স আপ। তবে শেষ চার আসরে মাত্র একবারই শেষ আট পার করতে পেরেছে ব্রাজিল। ২০১৪ সালে কলম্বিয়াকে হারিয়ে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছিল লাতিন আমেরিকানরা।
৪. ২০০২ সালের পর আর কখনোই ফাইনাল পর্যন্ত যেতে পারেনি ব্রাজিল। সেই আসরে সর্বশেষ শিরোপার উল্লাসে মেতেছিল লাতিন দলটি। বিগত চার আসরে তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য সেমিফাইনাল, ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে শেষ চারের ম্যাচে জার্মানির বিপক্ষে ৭-১ গোলে হারের লজ্জায় পুড়তে হয়েছিল ব্রাজিলকে।
৫. ২০১৪ বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়াকে হারানোর ম্যাচে দুইবার জালের দেখা পেয়েছিলেন নেইমার। ইনজুরি কাটিয়ে শেষ ষোলো খেলা পিএসজি তারকার ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামাও প্রায় নিশ্চিত।
৬. বিশ্বকাপ পেনাল্টি শুটআউটে শতভাগ সাফল্যের রেকর্ড ক্রোয়েশিয়ার দখলে। ২০১৮ বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে ডেনমার্ক ও শেষ আটে রাশিয়াকে টাইব্রেকারে পরাস্ত করেছিল তারা। চলতি আসরের শেষ ষোলোতেও জাপানকে একইভাবে পরাজিত করেছেন মদ্রিচরা।
৭. বিশ্বকাপে লাতিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মাত্র একবারই জিততে পেরেছে ক্রোয়েশিয়া। ২০১৮ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ই ফুটবলের মহাযজ্ঞে কনমেবল অঞ্চলের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাদের একমাত্র সাফল্য।
Comments