এখন আর কোনো ছোট দল-বড় দল নেই: ফিফা সভাপতি
কাতার বিশ্বকাপে হচ্ছে না উত্তেজনার কোন কমতি। গ্রুপ পর্বে কাগজে কলমে পিছিয়ে থাকা দলগুলোর বিপক্ষে শিরোপাপ্রত্যাশী দলগুলোর পরাস্ত হবার ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার। নকআউটেও দেখা মিলেছে অঘটনের, হেভিওয়েট স্পেনকে ছিটকে দিয়েছে আফ্রিকার দল মরক্কো। এমন চমকের আসর বাড়তি আগ্রহ তৈরি করছে ভক্ত-সমর্থকদের মধ্যে। ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো তো বলেই দিলেন, এখন পর্যন্ত যতোগুলো বিশ্বকাপ মাঠে গড়িয়েছে তার মধ্যে কাতার বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বই 'সবার সেরা'।
ফুটবলের মহাযজ্ঞ শুরুর তৃতীয় দিনের মাথায় সৌদি আরবের বিপক্ষে হেরে যায় শিরোপার অন্যতম দাবিদার আর্জেন্টিনা। পরদিন চমক দেখায় এশিয়ার আরেক দল জাপান, চারবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে হারিয়ে দেয় তারা। ২৫ নভেম্বর ওয়েলসকে পরাস্ত করে ইরান, তিন দিন বাদে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও সার্বিয়ার সঙ্গে ড্র করার কৃতিত্ব দেখায় আফ্রিকার দল ক্যামেরুন। ৩০ নভেম্বর আরেক আন্ডারডগ তিউনিসিয়ার বিপক্ষে বর্তমান শিরোপাধারী ফ্রান্সের হার ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত। একই দিনে অস্ট্রেলিয়া হারায় ডেনমার্ককে।
দুই দিনের মাথায় স্পেনকে হারিয়ে আরেকটি অঘটনের জন্ম দেয় জাপান। সেদিন রাতেই আরেক ফেভারিট পর্তুগাল হার মানে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে। তিন ডিসেম্বর অঘটনের তালিকায় নাম লেখায় ক্যামেরুনও, গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পাঁচবারের বিশ্বকাপজয়ী দল ব্রাজিলকে হারিয়ে আরও একটি বিস্ময়ের জন্ম দেয় তারা। শেষ ষোলোতেও প্রায় চমকে দিয়েছিল জাপান, গোটা ম্যাচে দারুণ লড়েও পেনাল্টিতে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে পেরে উঠেনি হাজিমে মরিয়াসুর শিষ্যরা। তবে জাপান না পারলেও করে দেখায় মরক্কো, মঙ্গলবার টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে তারা।
বুধবার ফিফাকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইনফান্তিনো বলেন, 'দারুণ পরিবেশ, চমৎকার সব গোল, অবিশ্বাস্য রোমাঞ্চ, চমক, ছোট দলগুলো হারাচ্ছে বড় দলগুলোকে। এখানে আর কোন ছোট দল-বড় দল নেই। (তাদের খেলার) মান একই পর্যায়ের। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সব মহাদেশের (জাতীয়) দলই নকআউট পর্বে পা রেখেছে। এটা দেখিয়েছে, ফুটবল আসলেই বৈশ্বিক (একটি খেলায়) পরিণত হচ্ছে।'
আগামী নয় ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব। প্রথমদিনে মাঠে নামবে ক্রোয়াশিয়া, ব্রাজিল, নেদারল্যান্ডস ও আর্জেন্টিনা। পরদিন মাঠে গড়াবে পর্তুগাল-মরক্কো ও ইংল্যান্ড-ফ্রান্স ম্যাচ। সেখানে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোদের হারিয়ে মরক্কো আরেকটি চমক দেখাতে পারলে নিশ্চিতভাবেই ভাঙবে কোটি ভক্তের হৃদয়, তবে বৃদ্ধি পাবে বিশ্বকাপ ফুটবলের সৌন্দর্য।
Comments