নরসিংদীতে ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা

নরসিংদীর রায়পুরার মির্জাচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি জাফর ইকবাল মানিক। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর রায়পুরার মির্জাচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি জাফর ইকবাল মানিক (৫০) দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

আজ শনিবার বিকেল ৪টার দিকে ওই এলাকার শান্তিপুর নৌকাঘাটে সালিশ চলার সময় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত জাফর ইকবাল মানিক মির্জাচর গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালিব মিয়ার ছেলে। তিনি টানা ২ বার মির্জাচর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, বিকেলে নদী ভাঙন নিয়ে সালিশ চলছিল শান্তিপুর নৌকাঘাটে। চেয়ারম্যান মানিক ওই সালিশে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ৪-৫ জন দুর্বৃত্ত সেখানে গিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালালে চেয়ারম্যান গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নরসিংদী সদর হাসপালের ডিউটি ডাক্তার আসাদুজ্জামান বলেন, 'মৃত অবস্থায় তাকে আমাদের এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। তার বুকে ৪ গুলি পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা গেছেন তিনি।'

রায়পুরা থানার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সত্যজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, 'তাকে কে বা কারা গুলি করে হত্যা করেছে, তা খুঁজে বের করতে আমরা কাজ করছি। নিহত চেয়ারম্যানের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।'

এদিকে চেয়ারম্যান মানিক নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে মির্জাচর ও তার পাশের ইউনিয়ন বাঁশগাড়ি এলাকায় তার পক্ষের এবং বিপক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছে।

'আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২ পক্ষের সংঘর্ষ চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে', জানান রায়পুরা থানার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সত্যজিৎ কুমার ঘোষ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী বলছে, সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

এদিকে নিহত মানিকের ভাই বারসন মিয়া অভিযোগ করেন, `পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষ মির্জাচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ মিয়ার সমর্থকরা তাকে গুলি করে হত্যা করেছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন মো. ফিরোজ মিয়া। তার সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন ইউনিয়ন যুবলীগ সহ-সভাপতি মানিক। এরই জেরে ২ পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। পরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে এলাকা ছাড়া ছিলেন ফিরোজ সমর্থিত লোকজন। গতকাল শুক্রবার ২টি পক্ষ আপসের জন্য বৈঠকে বসে। কিন্তু আপস না মেনে বৈঠক ছেড়ে বাড়িতে উঠেন ফিরোজের লোকরা। এরপর আজ এ হত্যাকাণ্ড ঘটল।'

এ বিষয়ে জানতে মির্জাচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মিয়ার মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Grim discovery: Five bodies found on vessel in Meghna

The incident had occurred on the Meghna river under Chandpur Sadar upazila in an area adjacent to Shariatpur

1h ago