আর্জেন্টিনার হারের রেশ জার্সির বাজারে, রাতের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে বিক্রেতারা

বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হওয়ার পর ঢাকায় ফুটপাতে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দেশের পতাকা ও জার্সি
বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হওয়ার পর ঢাকায় ফুটপাতে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দেশের পতাকা ও জার্সি। ছবি: প্রবীর দাশ

কাতার বিশ্বকাপ শুরু প্রথম দিকে দেশে জার্সি বিক্রির ধুম পড়লেও বর্তমানে সার্বিকভাবে জার্সি বিক্রি কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

তারা বলছেন, দেশের বাজারগুলোতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের জার্সি। শুরুর দিকে আর্জেন্টিনার জার্সি সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে। তবে সৌদি আরবের কাছে হারার পর আর্জেন্টিনার জার্সি বিক্রি কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে ব্রাজিলের জার্সি বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। আগে কখনো সৌদি আরবের জার্সি বিক্রি না হলেও গেলেও এবার তাদের জার্সির চাহিদা আছে।

ব্যবসায়ীদের আশা, আজ রাতে পোল্যান্ডের সঙ্গে জিতে আর্জেন্টিনা পরের রাউন্ডে যাবে এবং জার্সি বিক্রি আবার বাড়বে।

রাজধানীর গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্স, টুইন টাওয়ার স্পোর্টস, গুলিস্তান ট্রেড সেন্টার, সাভারের পল্লীবিদ্যুৎ বাজার ও বিভিন্ন ফুটপাতের দোকানে অন্তত ২০ জন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্বকাপ শুরুর সময়টায় যত বিক্রি হয়েছে এখন তার অর্ধেক হচ্ছে।

গুলিস্তানের ফুটপাতে জার্সি বিক্রি করেন মো. হাসান। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুরুর দিকে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হতো। এখন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার জার্সি বিক্রি করি। আগের চেয়ে আর্জেন্টিনার জার্সি বিক্রি কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে ব্রাজিলের জার্সি বিক্রি বেড়েছে। তবে ২ দেশের মধ্যে তুলনা করলে এখনো আর্জেন্টিনার জার্সি বিক্রি বেশি হচ্ছে।'

গুলিস্তানের আরেক জার্সি বিক্রেতা মো. সোহেল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেশের বাজারে ব্রাজিলের নীল, কালো, সাদা ও হলুদ রংয়ের জার্সি বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে হলুদ ও নীল জার্সির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। আর্জেন্টিনার নীল, কালো ও আকাশী রংয়ের জার্সি বিক্রি হচ্ছে। তবে আকাশী রংয়ের জার্সি বেশি বিক্রি হচ্ছে।'

ফোর স্টার কোয়ালিটি হাউসের বিক্রয়কর্মী মো. কাওসার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্তমানে প্লেয়ার ভার্সন জার্সি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ৩০০ টাকা এবং ফ্যান ভার্সন বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। কয়েকদিনে আমাদের প্রায় ১০ হাজার জার্সি বিক্রি হয়েছে। তার মধ্যে আর্জেন্টিনার ৭ হাজার এবং ব্রাজিলের ৩ হাজার জার্সি বিক্রি হয়েছে।'

ওমর এন্টারপ্রাইজের কর্মচারী মো. আব্দুল বারী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খেলা শুরুর দিকে দৈনিক ১৫০ থেকে ২০০টি জার্সি বিক্রি করতাম। এখন বিক্রি করি ৭০ থেকে ৮০টি। শুরুর দিকে আর্জেন্টিনার জার্সি ৭০ শতাংশ এবং ব্রাজিলের জার্সি ৩০ শতাংশ বিক্রি হতো। এখন বিক্রি প্রায় সমান হচ্ছে। প্রথম দিকে জার্সির দাম কিছুটা বেশি থাকলেও এখন কিছুটা কমেছে।'

গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সের পাইকারি জার্সি বিক্রেতা জয় স্পোর্টসের সত্ত্বাধিকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মতিন। তিনি গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ীদের সংগঠনেরও সভাপতি। মো. আব্দুল মতিন ডেইলি স্টারকে বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের মার্কেটেই ২ লাখের বেশি জার্সি বিক্রি হয়েছে। আমাদের দেশে মূলত আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন ও পর্তুগালের জার্সি বেশি বিক্রি হয়। তবে এ বছর সৌদি আরবের জার্সিও ভালো পরিমাণে বিক্রি হয়েছে।'

এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, 'সার্বিকভাবে জার্সির চাহিদা বলতে গেলে আর্জেন্টিনা ৬০ শতাংশ এবং ব্রাজিল ৩০ শতাংশ। তবে আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচে হারার পর তাদের জার্সির চাহিদা কমে যায়। দ্বিতীয় ম্যাচ জেতার পর আবার কিছুটা বেড়েছে। আজকের ম্যাচে জিতলে আরও বাড়বে। ব্রাজিলের জার্সি বিক্রি আগের চেয়ে বেড়েছে। তবে এখনো তুলনামূলকভাবে বলতে গেলে আর্জেন্টিনার জার্সিই বেশি বিক্রি হচ্ছে।'

যেসব জার্সি অবিক্রিত থেকে যায় বিশ্বকাপের পর সেসব কী হয়, জানতে চাইলে এই পাইকারি বিক্রেতা বলেন, 'আমাদের অবিক্রিত পতাকাগুলো ভালোভাবে সংরক্ষণ করতে হয় পরের বিশ্বকাপের জন্য। তবে জার্সি মূলত সারা বছরেই বিক্রি হয়। বিশ্বকাপের পর অনেকেই কেনা দামে জার্সি বিক্রি করেন। কেউ আবার অল্প মুনাফা রেখে বিক্রি করে দেন।'

এস স্পোর্টস দোকানের কর্মচারী মো. সজীব বলেন, 'আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচে হারার পর জার্সি বিক্রি প্রায় ৬০ শতাংশ কমে গেছে। আজকের ম্যাচে জিতলে বিক্রি আবারও বাড়বে বলে আশা করেছি।'

গুলিস্তান ট্রেড সেন্টারের মা হোসিয়ারী অ্যান্ড গার্মেন্টসের সত্ত্বাধিকারী মো. আজিজুল হক বলেন, 'এ বছর আর্জেন্টিনার জার্সি এখন পর্যন্ত বেশি বিক্রি হয়েছে। তবে তুলনামূলকভাবে আগের তুলনায় জার্সি বিক্রি কমেছে।

 

Comments

The Daily Star  | English
India visa restrictions for Bangladeshi patients

A wake-up call for Bangladesh to reform its healthcare

India’s visa restrictions on Bangladeshi nationals, while initially perceived as a barrier, could serve as a wake-up call for Bangladesh to strengthen its healthcare system and regain the confidence of its patients.

12h ago