শেষদিকের গোলে স্পেনের বিপক্ষে হার এড়াল জার্মানি
আগের ম্যাচে জাপানের কাছে অঘটনের শিকার জার্মানি আরও একবার ধুঁকল। দারুণ নৈপুণ্য দেখানো স্পেনের আলভারো মোরাতার লক্ষ্যভেদে ফের হার চোখ রাঙাচ্ছিল তাদের। শেষদিকে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের উদ্ধারকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হলেন নিকলাস ফুলক্রুগ। তার নিশানা ভেদে পিছিয়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়িয়ে ড্র করল ডাই ম্যানশ্যাফটরা।
রোববার রাতে কাতার বিশ্বকাপের 'ই' গ্রুপের হাইভোল্টেজ ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। আল বাইত স্টেডিয়ামে দুটি গোলই হয়েছে খেলার দ্বিতীয়ার্ধে।
ফেরান তোরেসের বদলি নামা মোরাতা ৬২তম মিনিটে লিড পাইয়ে দেন স্প্যানিশদের। সেই গোল শোধ করেন আরেক বদলি ফুলক্রুগ। টমাস মুলারের পরিবর্তে মাঠে নেমে ৮৩তম মিনিটে নিশানা ভেদ করেন তিনি।
এই ড্রয়ে 'ই' গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার হিসাবনিকাশ দারুণ জমে উঠেছে। চার দলের সামনেই সুযোগ থাকছে নকআউটে ওঠার।
দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে কোচ লুইস এনরিকের স্পেন। সমান ৩ পয়েন্ট পেলেও গোল ব্যবধানে দুই ও তিনে অবস্থান করছে যথাক্রমে জাপান ও কোস্টারিকা। পয়েন্টের খাতা খোলা জার্মানি আছে তলানিতে।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে কোস্টারিকার জালে সাতবার বল পাঠানো লা ফুরিয়া রোজারা জার্মানদের বিপক্ষে খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। যদিও ম্যাচের ৬৪ শতাংশ সময় বল পায়ে রাখে তারা। ২০১০ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের গোলমুখে নেওয়া সাতটি শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা গোলমুখে ১১টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখতে পারে তিনটি।
উজ্জ্বল শুরু করা স্পেন গোল পেয়ে যেতে পারত ষষ্ঠ মিনিটেই। পেদ্রি, গাভি ও মার্কো আসেনসিও মিলে দারুণ একটি আক্রমণ রচনার পর বল পেয়ে যান দানি অলমো। ডি-বক্সের বাইরে থেকে তার জোরালো শট মানুয়েল নয়্যারের হাতে লেগে বাধা প্রায় ক্রসবারে। তবে বল জালে ঢুকলে দায় নিতে হতো জার্মান গোলরক্ষককে। কারণ, শটটি অনায়াসে লুফে নেওয়ার পরিস্থিতিতে ছিলেন তিনি।
এরপর বিরতির আগ পর্যন্ত খুব বেশি সুযোগ পায়নি দুই দল। ২২তম মিনিটে সার্জিও বুসকেতসের পাসে জর্দি আলবার শট পরীক্ষা নিতে পারেনি নয়্যারের।
দুই মিনিট পর স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমন বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে গড়বড় করেন। সুযোগ অবশ্য কাজে লাগাতে পারেননি সার্জ গ্যানাব্রি। তার বাম পায়ের শট থাকেনি লক্ষ্যে।
৪০তম মিনিটে অ্যান্টোনিও রুডিগার উল্লাসে মাতান জার্মানিকে। জশুয়া কিমিখের ফ্রি-কিকে তার হেড জড়ায় জালে। কিন্তু ভিএআরের সাহায্য নিয়ে অফসাইডের সিদ্ধান্ত দিয়ে রেফারি বাতিল করেন গোলটি। ফলে গোলশূন্যভাবেই বিরতিতে যায় দুই দল। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় তারা।
ম্যাচের ৫৬তম মিনিটে ফের ভুল করে বসেন সিমন। তার কাছ থেকে ইল্কাই গুন্দোগান বল পেয়ে খুঁজে নেন কিমিখকে। ডি-বক্সের ভেতর থেকে শট নেন তিনি। দক্ষতার সঙ্গে বল রুখে ভুল শুধরে নেন সিমন।
ছয় মিনিট পরই গোলের উৎসব করে স্প্যানিশরা। আলবার পাসে অসাধারণ ফ্লিকে নয়্যারকে পরাস্ত করেন মোরাতা। কোস্টারিকার বিপক্ষেও বদলি নেমে গোল করেছিলেন তিনি।
চার মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত এনরিকের শিষ্যরা। কিন্তু বল উড়িয়ে মেরে হতাশ করেন আসেনসিও। ৭৪তম মিনিটে আক্ষেপ সঙ্গী হয় জার্মানিরও। তরুণ জামাল মুসিয়ালা একা পেয়েও গোলরক্ষক বরাবর শট মারেন।
নয় মিনিট পর আর জাল অক্ষত রাখতে পারেননি সিমন। মুসিয়ালার পাসে দ্রুতগতিতে ডি-বক্সে ঢুকে ম্যাচে সমতা টানেন ফুলক্রুগ। বাকি সময়ে গোল করতে পারেনি কোনো দল।
Comments