বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষের কোনো সম্ভাবনা নেই: ড. আতিউর রহমান

বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষের কোনো সম্ভাবনা নেই
ড. আতিউর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে কোনো দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেছেন, 'আজকের দিনে বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে নানাজন নানা প্রশ্ন তুলছেন। আমি বলতে চাই, দুর্ভিক্ষ আর কোনদিনই বাংলাদেশে হবে না।'

আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহী নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় অনুষ্ঠিত এক গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ড. আতিউর রহমানসহ মোট ৬ জনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তারা হলেন, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক, আইন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর, সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবেদ খান, শিক্ষাবিদ নাট্যকার ও লেখক রতন সিদ্দিকী।

অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদকেও সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ছিল। তবে তিনি উপস্থিত ছিলেন না।

আতিউর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, 'দুর্ভিক্ষ উৎপাদন বা উৎপাদনহীনতার ওপর নির্ভর করে না।'

তিনি অমর্ত্য সেনের একটি উদ্ধৃতি টেনে বলেন, 'যখন মানুষের আয়-রোজগার থাকে না, যখন মানুষের জন্য পণ্য কেনার সক্ষমতা থাকে না তখনই কেবল দুর্ভিক্ষ হয়।'

'আজ বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জের দিকে তাকিয়ে দেখেন, একজন কৃষি শ্রমিকের মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, যা দিয়ে কয়েক কেজি চাল কেনা যায়। গ্রামে-গঞ্জে কৃষি উৎপাদন বাড়ছে, সবজি উৎপাদন বাড়ছে, নার্সারি হচ্ছে, ফুলের চাষ হচ্ছে, গবাদি পশুর খামার হচ্ছে। উৎপাদন আজ বহুমাত্রিকতা পেয়েছে। সুতরাং একটা ভরসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।'

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর নেতৃত্বের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, 'স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন ক্ষমতায় আসেন তখন মাথাপিছু আয় ছিল ৭২ ডলার। তিনি মাত্র সাড়ে ৩ বছর সময় পেয়েছিলেন। এ সময়েই দেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছিল ২৭৩ ডলার। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৯৭৬ সালে মাথাপিছু আয় নেমে যায় ১৩৮ ডলারে এবং ১৯৭৮ সালে এ ১২৮ ডলারে নেমে আসে। এরপর ১৩ বছর লেগেছে বঙ্গবন্ধুর রেকর্ড করা ২৭৩ ডলারে মাথাপিছু আয় তুলে নিয়ে আসতে।'

তিনি বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর মতো বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য একটা ভরসার জায়গা তৈরি করতে পেরেছেন।'

আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বলেন, 'বাংলাদেশের সংবিধান মানুষের অধিকার রক্ষার জন্যই লেখা হয়েছে। অতীতে এই সংবিধান অনেক কাটাছেঁড়া করা হয়েছে, কিন্তু এখন এই সংবিধানকে রক্ষা করতে হবে।'

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা রাজশাহী শহরের সৌন্দর্যের প্রসংশা করে বলেন, এই শহরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম এসে শান্তি লাভ করেছিলেন। ইতিহাসবিদ অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় এই শহরেই বেড়ে উঠেছেন। এই শহর এখনো দেশের অন্য সব শহর থেকে বেশি শান্তিময়।

Comments

The Daily Star  | English

At least 30 hurt as clashes engulf part of Old Dhaka

Suhrawardy college, hospital vandalised as protests over student’s death turn violent

1h ago