টাকা ছাপিয়েও মেগা প্রকল্পের ঋণ শোধ করা যাবে না: আবুল বারকাত

আবুল বারকাত
জাতীয় প্রেসক্লাবে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য দেন আবুল বারকাত। ছবি: স্টার

টাকা ছাপিয়েও বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পের ঋণ শোধ করা সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত।

আবুল বারকাত বলেন, 'বাংলাদেশের ৫টি মেগা প্রকল্পের ঋণ শোধ করা শুরু হবে ২০২৭ সালে। টাকা ছাপিয়েও এই ঋণ শোধ করা যাবে না। তখন সে পরিমাণ ফরেন কারেন্সিও থাকবে কিনা, যদি না থাকে তাহলে পিছনে ফিরে বলতে হবে ভুল করেছিলাম।'

বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বেসরকারি সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট আয়োজিত 'খাদ্য নিরাপত্তা, ক্ষুদ্র কৃষকদের সংকট ও সমবায়ের গুরুত্ব' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এই কথা বলেন।

আবুল বারকাত বলেন, ক্যান্সার, কিডনি, কার্ডিয়াক ও ডায়াবেটিস রোগে প্রতি বছর ৫০ লাখ মানুষ দরিদ্র হন। এভাবে যদি আগামী ২-১ বছর চলতে থাকে তবে মধ্যবিত্ত স্তর আর থাকবে না। উচ্চ মধ্যবিত্তের তেমন কিছু হবে না। নিম্ন মধ্যবিত্তের ক্ষতি হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে দেশের অবস্থা ভালো হয়ে যাবে, রিজার্ভ ভালো হয়ে যাবে—আমি এরসঙ্গে একমত না। ঝুঁকি পরিমাপ কর যায়, ভবিষৎবাণী করা যায়। কিন্তু অনিশ্চয়তা পরিমাপ বা ভবিষৎবাণী করা যায় না। দ্রব্যমূল্য অনিশ্চয়তার বিষয়। চালের কেজি ১৫০ টাকা হতে পারে।

এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, দেশে প্রায় ২ কোটি বিঘা খাসজমি ও জলাধার। ভূমিহীন পরিবার আছে প্রায় ১ কোটি। সরকার এরমধ্যে ১২ শতাংশ বিতরণ করেছে। কিন্তু ৮৮ শতাংশ বরাদ্দ প্রশ্নবিদ্ধ।

তিনি বলেন, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকের বেতন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) প্রথম শ্রেণির গেজেটেড অফিসারের থেকে এক টাকা বেশি হওয়া উচিত। তাহলে গ্রামের ভালো ছেলে-মেয়েরা গ্রামের শিক্ষক হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, সমবায় আইন নিয়ন্ত্রণ করছেন আমলারা। তারা এ আইন নিজেদের স্বার্থে বানিয়েছে। সমবায় সাংবিধানিক অধিকার হলেও তা থেকে মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। এর কারণ আমলাদের দুর্নীতি।

বেসরকারি সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) সভাপতি শামসুল হুদা বলেন, আমলাদের সুবিধা দিতে গিয়ে সরকার দরিদ্র ভূমিহীন, কৃষকের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। তিন ফসলী জমিতে মেগা প্রকল্প, বন ধ্বংস, জলাধার ভরাট, বনের গাছপালা কেটে কোম্পানি করছে সরকার।

তিনি বলেন, সংবিধানের ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে সমবায় মালিকানার কথা উল্লেখ থাকলেও কোনো গুরুত্ব পাচ্ছে না। সরকারি কর্মকর্তারা দুর্নীতির মাধ্যমে সমবায়ের প্রকৃত সম্ভাবনাকে নষ্ট করেছে।

সমবায় সমিতিতে সরকারি কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) সীমা জামান।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, দেশে খাদ্য নিরাপত্তার ঘাটতি হতো না যদি সমবায় ধারণাকে বাস্তবায়ন করা যেত। প্রয়োজন হলে সামাজিক আন্দোলন, রাজনৈতিক আন্দোলন করে সমবায় আইন সংশোধন করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

6h ago