সংবাদপত্রকে গণতন্ত্রের নির্ভীক প্রহরী হতে হবে: হাইকোর্ট

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

দুর্নীতি আমাদের সমাজের চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এবং গণতন্ত্রের কার্যকর ও নির্ভীক প্রহরী হিসেবে সংবাদপত্রের কাজ করা উচিত বলে একটি রায়ের পূর্ণাঙ্গ বিবরণীতে হাইকোর্ট মন্তব্য করেছেন।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ বিবরণীতে বলা হয়, 'সংবাদপত্র সমাজের সব স্তরের মানুষের মুখপাত্র হয়ে গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সংবাদপত্র সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে।'

আজ রোববার দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান হাইকোর্টের রায়ের এ বক্তব্যের বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, রায়ের ৪০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ বিবরণী গত সপ্তাহে প্রকাশ করা হয়।

এটি দুদকের একটি নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের স্থায়ী জামিনের বিষয়ে অপর একটি বেঞ্চের রুলের শুনানির ওপর রায়ের পূর্ণাঙ্গ পাঠ বলে জানান তিনি।

এর আগে রুলের শুনানি করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই রায় দিয়েছিলেন।

ওই রায়ে সাবেক বিচারপতি জয়নুলের আগাম জামিনের আদেশ বাতিল করেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।

দুদক ২০১০ সালের জুলাইয়ে জয়নুলের ব্যাংক স্টেটমেন্ট চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছিল।

নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে জয়নুলের একটি আবেদনের পর ২০১৭ সালের ১০ জুলাই হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ জয়নুলকে আগাম জামিন দেন এবং কেন তাকে স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না, দুদকের কাছে তার ব্যাখ্যা চেয়ে রুল জারি করেছিলেন।

আবেদনে বিচারপতি জয়নুল আবেদীন ২০১৭ সালের ৫ ও ৭ জুন দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করেন। প্রতিবেদন দুটির শিরোনাম ছিল 'সাবেক বিচরপতির দুর্নীতি তদন্তে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের বাধা' এবং 'সাবেক এক বিচারপতির তদন্তে থেমে নেই দুদক'।

তিনি বলেছিলেন, এসব সংবাদের ভিত্তিতে দুদক তাকে গ্রেপ্তার করতে পারে।

ওই রুলের শুনানির রায়ের পূর্ণাঙ্গ পাঠে হাইকোর্ট বলেন, 'আমরা (দৈনিক জনকণ্ঠের) প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু দেখেছি। আমরা এর সঙ্গে দুদক বা পুলিশের কোনো কর্মকর্তার কোনো রেফারেন্স পাইনি। তদন্ত মুলতবি থাকাকালে আবেদনকারীকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি বা অপমান করার কিছু নেই।'

'দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের অংশ হিসেবে বিষয়টি জনগণ ও কর্তৃপক্ষের নজরে আনার লক্ষ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এটা বলা যাবে না যে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২১ ধারায় দুদক কর্তৃক গ্রেপ্তারের শঙ্কা তৈরি হয়েছে,' এতে বলা হয়।

Comments