‘কে জয়লাভ করছে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চিন্তা করে না, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে করে’

সম্পাদক পরিষদের মতবিনিময় সভায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত 
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে সম্পাদক পরিষদের মতবিনিময় সভা। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচনে কে জয়লাভ করছে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চিন্তা করে না, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করে। আজ মঙ্গলবার সম্পাদক পরিষদের মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস।

এসময় তিনি নির্দিষ্ট কোনো দলের পক্ষ না নেওয়ার বিষয়টিও অবহিত করেন।

রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আজ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে সম্পাদক পরিষদ। সংগঠনটির সভাপতি দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, আজকের পত্রিকা সম্পাদক গোলাম রহমান, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ঢাকা ট্রিবিউন সহযোগী সম্পাদক আবু সাঈদ আসিফুল ইসলাম এবং দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন।

পিটার হাস বলেন, 'অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সব সংস্থাকে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দিনটির আগে থেকেই নির্বাচন শুরু হয়।'

এসব কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর গুরুত্বারোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত।

মতবিনিময় সভায় সম্পাদকরা রাষ্ট্রদূতকে মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে অবগত করেন। এ প্রসঙ্গে বলা হয়, শুধু কঠোর আইন নয়, গণমাধ্যমের মালিকানাও চ্যালেঞ্জ।

রাষ্ট্রদূত জানান, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেই অধিকার লঙ্ঘন বিষয়ক স্বচ্ছতা নিয়ে অব্যাহত চাপ ও বিতর্ক রয়েছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে নানা চাপ মোকাবিলা করছে। এ বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, 'যুদ্ধের আগে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির যে অবস্থা ছিল, বর্তমানে কেউ সেই অবস্থানে বা তার চেয়ে ভালো নেই। তবে এটা সত্যি যে, কিছু দেশ অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'

অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলায় বাংলাদেশের কৃষি খাতের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত।

রাষ্ট্রদূত এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রেখে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে তার ওপর জোর দেন। এ ক্ষেত্রে দক্ষতা উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে পণ্যে বৈচিত্র্য আনার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'এখন গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, কীভাবে ২ দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি করা যায় সেই আলোচনা। এজন্য আমাদের পরবর্তী ব্যবস্থা কী হওয়া উচিত সেটিও ভাবতে হবে।'

এসময় তিনি বাংলাদেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়ার পক্ষে মত দেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, 'ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স করপোরেশন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন-সংক্রান্ত কার্যক্রমে বিনিয়োগ করে থাকে। কিন্তু তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয় জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সের (জিএসপি) নীতিমালার আওতায়। যেখানে বাংলাদেশ প্রবেশাধিকার হারিয়েছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য যেখানে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। তবে সামগ্রিক শ্রমঅধিকার পরিস্থিতি ওইসব সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা।'

খুব দ্রুত সময়ে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন হবে এমন প্রত্যাশা না রেখেই তাদের জন্য বাংলাদেশ সীমান্ত উন্মুক্ত করার বিষয়ে প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'রোহিঙ্গাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রেখে তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার জান্তাকে চাপ দিতে পারে না যুক্তরাষ্ট্র। যদিও তাদের প্রত্যাবাসন হওয়া দরকার।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে, তারা যেন প্রতিশ্রুতির অভাবে হতাশাগ্রস্ত না হয়ে পড়ে।'

Comments

The Daily Star  | English
Tarique Rahman warns against return of fascist forces

Tarique Rahman urges first-time voters to back BNP

'Let the first vote of the youth be for the sheaf of paddy,' he says

15m ago