কুষ্টিয়ায় বাউলদের ওপর হামলা, আহত ৮
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় একটি সাধুসঙ্গে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৮ জন আহত হয়েছেন। আহতরা দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার লাউবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ দুপুরে দৌলতপুর থানায় অভিযোগ করা হলেও এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লাউবাড়িয়া গ্রামের পলান মণ্ডল প্রতি বছর নিজ বাড়িতে ঘরোয়াভাবে সাধুসঙ্গের আয়োজন করেন। সাধুসঙ্গে বিভিন্ন এলাকার বাউল, সাধু, লালন ভক্ত ও অনুসারীরা যোগ দেন।
গতকাল শনিবার দুই দিনের সাধুসঙ্গের প্রথম দিন ছিল। রাত ৯টার দিকে একই এলাকার আজাদ, বাবুল, রফি, মাসুম, ছালামত, জিয়ার আলী, মোশারফ হোসেন, বশির, সাইফুল, সুমন, আরিফুল ইসলামসহ ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাউলদের ওপর হামলা চালায় বলে পলান মণ্ডল অভিযোগ করেন।
হামলায় পলান মণ্ডল (৩৭), পলাশ মণ্ডল (৩০), ফজল ফকির (৭০), মাজেদা ফকিরানী (৫০) ও আকলিমা খাতুনসহ (৪০) অন্তত ৮ জন বাউল, সাধু ও লালন ভক্ত আহত হন।
বাউল মাজেদা ফকিরানি ডেইলি স্টারকে জানান, হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে সাধুদের এলোপাতাড়ি মারধর করে। বাউলরা কোনো প্রতিবাদ করেননি।
হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলে আহতদের দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনায় পলান মণ্ডল বাদি হয়ে রোববার দুপুরে দৌলতপুর থানায় একটি অভিযোগ করেন।
ওই গ্রামের বাসিন্দা আনিস উদ্দিন সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখানে প্রতিবছরই এ অনুষ্ঠান হয়। বাউলদের ওপর এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ নয়। তবে এইচএসসি পরীক্ষার কারণে এলাকার লোকজন এবার বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি।'
এ বিষয়ে পলান মণ্ডল বলেন, 'পরীক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে সাধুসঙ্গে কোনো লাউডস্পিকার ব্যবহার হয়নি।
তিনি জানান, সাধুসঙ্গে চন্দ্রতিথির বিষয় থাকায় এ সময়েই এটা আয়োজন করা হয়।'
বাউলদের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এইচএসসি পরীক্ষা চলার কারণে প্রতিবেশীরা সাধুসঙ্গে গিয়ে গানবাজনা বন্ধ করতে বলে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে হামলার ঘটনা ঘটে।'
তিনি জানান, পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করেছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খায়রুল আলম রোববার রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুর্বৃত্তদের ধরা হবে। পুলিশ কাজ করছে।'
Comments