বঙ্গবন্ধু উদ্যান পরিপূর্ণ, প্রশাসনের মঞ্চেও বিএনপি নেতা-কর্মীরা

নানা রঙের গেঞ্জি, ক্যাপ পড়ে সমাবেশের পথে মিছিল নিয়ে যাচ্ছেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। ছবি: স্টার

বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যান বিএনপি নেতা-কর্মীদের ভিড়ে ভরে উঠেছে। উদ্যানের আশেপাশের প্রায় ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার সড়কজুড়ে মিছিল নিয়ে আসছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তারা এসেও মিশছেন সমাবেশস্থলে।

মাঠ পুরো ভরে যাওয়ায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন উদ্যানের প্রশাসনের অংশেও। এই উদ্যানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামী ৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জুম মিটিং করার জন্য ২০০ ফুটের যে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে, সেটিও কানায় কানায় ভরে গেছে।

বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান ফারুক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদেরকে প্রশাসন মূল মঞ্চ থেকে ২০০ ফুট দূরে মঞ্চ তৈরি করতে বলেছে। আমরা মনে করি, এই সিদ্ধান্ত আমাদের সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য। কিন্তু জনস্রোতে সব ভেসে গেছে। মানুষের ভিড়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ বঙ্গবন্ধু উদ্যান।'

প্রশাসনে পক্ষে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের বঙ্গবন্ধুর মুর‌্যাল ও স্থায়ী মঞ্চ বাঁশ দিয়ে ঘিরে রাখতে দেখা গেছে।

বিএনপি নেত্রী ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, 'স্বাধীনতার পরে এই প্রথম রেকর্ড সংখ্যক মানুষ বঙ্গবন্ধু উদ্যানে এসেছেন।'

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, 'এই সমাবেশে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ এসেছেন। কোনো বাধাই তাদের আটকাতে পারেনি।'

মেহেন্দীগঞ্জ থেকে আসা সৈয়দ কামরুজ্জামান জানান, ১০০টি ট্রলার নিয়ে তারা প্রায় ২০ হাজার মানুষ এসেছেন। অন্তত ২০০ ট্রলার কীর্তনখোলা নদী জুড়ে অবস্থান করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ১৮৯৬ সালে তৎকালীন ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর এনডি বিটসন বেল রাজা পঞ্চম জর্জের আগমন উপলক্ষে এই উদ্যান তৈরি করেছিলেন। সেই থেকে এই উদ্যান ১২৬ বছর ধরে বরিশালের প্রাণের ঠিকানা।

এখানে ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ভাষণ দেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের জনসভা থেকে এই উদ্যানকে বঙ্গবন্ধু উদ্যান নামকরণ করা হয়। প্রায় ১০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এ উদ্যানে স্থায়ী মঞ্চ ছাড়াও রয়েছে হাঁটার জন্য আলাদা লেন।

আজ শনিবার সকালে কীর্তনখোলা ঘাটের চাদমারি, বেলতলা, মুক্তিযোদ্ধা পার্কসহ বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ট্রলার নোঙর করে। বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়নগুলো ছাড়াও, সদর উপজেলা, হিজলা, মুলাদি, উজরপুর, মঠবাড়িয়া থেকে বিশাল বিশাল মিছিল সকাল থেকেই নগরীতে প্রবেশ করে।

সমাবেশে ছাত্রদল, যুবদল, তাঁতীদল, মহিলা দলসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সদস্যরা বক্তব্য রেখেছেন।

জেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক জানান, ইতোমধ্যে লক্ষাধিক মানুষ সমাবেশস্থলে এসেছেন। আরও অন্তত এ লাখ মানুষ আশেপাশে রয়েছেন।

ব্যাপক পুলিশী নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের চারদিকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। রাস্তার প্রতিটি মোড়, গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

নগরীর প্রবেশ দ্বারগুলো ছাড়াও সড়কের বিভিন্ন অংশে অস্থায়ী চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।

জেলার পুলিশ সুপার বলেন, 'গৌরনদীতে একটি হামলার ঘটনা ছাড়া আর কোথাও অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার অভিযোগ পাইনি।'

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, 'বিএনপির পক্ষ থেকে পুলিশী নিরাপত্তার আবেদন ছিল। আমরা তাদের বলেছি, তারা যদি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে তাহলে আমরাও তাদের সহযোগিতা করব।'

নগরজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াও সমাবেশ ঘিরে প্রচার-প্রচারণার কারণে নগরীর অধিকাংশ দোকান-পাট বন্ধ। আশঙ্কা থেকেই তারা দোকান-পাট বন্ধ রাখছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

Comments

The Daily Star  | English

Matarbari project director sold numerous project supplies

Planning Adviser Prof Wahiduddin Mahmud today said the Matarbari project director had sold numerous project supplies before fleeing following the ouster of the Awami League government on August 5.

1y ago