টাকারের লড়াইয়ের পরও আইরিশদের হারাল অস্ট্রেলিয়া

সেমির লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে জয়ের বিকল্প ছিল না অস্ট্রেলিয়ার। অন্যদিকে আয়ারল্যান্ডের সামনে সুযোগ ছিল আবারও অঘটন ঘটানোর। সতীর্থদের সহায়তা পেলে হয়তো এমন কিছু ঘটিয়েও ফেলতে পারতেন লরকান টাকার। তবে দারুণ লড়াই করেও হারতে হলো আইরিশদের। পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলো অ্যারন ফিঞ্চের দল।

সোমবার ব্রিসবেনের গ্যাবায় আয়ারল্যান্ডকে ৪২ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এক নম্বর গ্রুপের খেলায় ক্যাঙ্গারুদের দেওয়া ১৮০ রানের লক্ষ্য পেরোতে পারেনি অ্যান্ডি ব্যালবার্নির দল। সবকটি উইকেটে হারিয়ে তারা থেমেছে ১৩৭ রানে। লরকান টাকারের ৪৮ বলে ৭১ রানের ইনিংসের পরও বাকিদের ব্যর্থতায় জয়বঞ্চিত হয় আইরিশরা।

আগে ব্যাট করে অধিনায়ক ফিঞ্চের ফিফটি (৪৪ বলে ৬৩) ও মার্কাস স্টয়নিসের মাঝারি ইনিংসে (২৫ বলে ৩৫) পাঁচ উইকেটে ১৭৯ রানের পুঁজি পায় অস্ট্রেলিয়া।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ছক্কা হাঁকান অধিনায়ক ব্যালবার্নি। পরের ওভারে প্যাট কামিন্সকেও পর পর দুই বলে চার ও ছয়ের জন্য সীমানাছাড়া করেন পল স্টার্লিং। তবে সেই ওভারেই ছয় রান করে ব্যালবার্নি বোল্ড হয়ে গেলে প্রথম উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড।

তৃতীয় ওভারে বিপদ আরও বাড়ে সফরকারীদের, ম্যাক্সওয়েল এসে তুলে নেন স্টার্লিং ও হ্যারি টেক্টরকে। সাত বলে ১১ রান করে কামিন্সকে ক্যাচ দেন অভিজ্ঞ আইরিশ ওপেনার। অন্যদিকে বদলী ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন টেক্টর। পরের ওভারে আবারও জোড়া আঘাত হানে ক্যাঙ্গারুরা, কুর্টিস ক্যাম্ফার ও জর্জ ডকরেলকে ফেরান স্টার্ক। দুজনেই বিদায় নেন শূণ্য রানে।

মাত্র ২৫ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বড় হারের শঙ্কায় পড়ে আয়ারল্যান্ড। সেখান থেকে দলের ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন টাকার। তার ব্যাটেই ৪৯ রান তুলে পাওয়ারপ্লে শেষ করে আইরিশরা। অপর প্রান্তে গ্যারেথ ডিলানিও ভালোই সমর্থন যোগাচ্ছিলেন টাকারকে, তাদের ব্যাটে থামে টানা উইকেট পতন।

কিন্তু দশম ওভারে ১৪ রান করা ডিলানি স্টয়নিসের শিকার হলে আবারও বিপদে পড়ে আয়ারল্যান্ড। একপ্রান্ত আগলে টাকার লড়ে গেলেও অপর প্রান্তে অ্যাডাম জাম্পা তুলে নেন মার্ক অ্যাডায়ার ও ফিয়ন হ্যান্ডকে। ১৬তম ওভারে হ্যাজলউডকে ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূর্ণ করেন টাকার। সেই ওভার ও তার পরের ওভারে আইরিশরা যথাক্রমে ১২ ও ১৮ রান আদায় করে নিলে জমে ওঠে খেলা।

তবে ১৮তম ওভারে মাত্র এক রান দিয়ে ব্যারি ম্যাককার্থিকে তুলে নেন কামিন্স, তাতেই জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় আয়ারল্যান্ডের। পরের ওভারের প্রথম বলে লিটল রান আউট হলে থামে সফরকারীদের ইনিংস। দুটি করে উইকেট পেয়েছেন স্টার্ক, কামিন্স, ম্যাক্সওয়েল ও জাম্পা। একটি শিকার স্টয়নিসের।    

এর আগে টসে জিতে স্বাগতিকদের ব্যাট করতে পাঠায় আয়ারল্যান্ড। ডেভিড ওয়ার্নার এই ম্যাচেও ফিরতে পারেননি রানে, সাত বলে তিন রান করে ধরা পড়েন শর্ট ফাইন লেগে। আইরিশদের প্রথম সাফল্য আসে ম্যাককার্থির হাত ধরে।

ওয়ার্নারকে হারানোর ধাক্কা বুঝতে দেননি মিচেল মার্শ ও ফিঞ্চ। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৬ বলে ৫২ রানের জুটি গড়ে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন তারাই। নবম ওভারে মার্শকে আউট করে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেন ম্যাককার্থি। ২২ বলে ২৮ রান করে বিদায় নেন অজি অলরাউন্ডার।

চার নম্বরে নামা ম্যাক্সওয়েল বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি তার অধিনায়ককে, বাঁহাতি পেসার জশ লিটলের বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বিধ্বংসী অলরাউন্ডার। ৯ বলে ১৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে। ম্যাক্সওয়েলের বিদায়ে উইকেটে আসেন স্টয়নিস। শ্রীলঙ্কা ম্যাচের ফর্ম এই ম্যাচেও সঙ্গী করে নামেন তিনি।

শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করতে থাকেন স্টয়নিস। অপর প্রান্তে ফিঞ্চ তুলে নেন চলতি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ফিফটি। শেষ পর্যন্ত থামেন ম্যাককার্থির ১৭তম ওভারে। লং অনে অ্যাডায়ারের হাতে ধরা পড়লে সমাপ্তি ঘটে তার ৪৪ বলের ৬৩ রানের ইনিংসের। ফিঞ্চের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি স্টয়নিসও, ২৫ বলে ৩৫ রান করে ফেরেন লিটলকে উইকেট দিয়ে।

শেষ ওভারে টিম ডেভিড ও ম্যাথু ওয়েড মিলে আদায় করে নেন ১৭ রান। এতে অজিদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৭৯। তিনটি উইকেট নিইয়ে আয়ারল্যান্ড বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন ম্যাককার্থি। দুই উইকেটে শিকার করেন লিটল। ফিফটি হাঁকিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেন ফিঞ্চ।

Comments

The Daily Star  | English

Govt publishes gazette of 1,558 injured July fighters

Of them, 210 have been enlisted in the critically injured "B" category, while the rest fall under the "C" category of injured fighters

4h ago