সিরাজগঞ্জে আকস্মিক ভাঙনে যমুনায় বিলীন শতাধিক বাড়ি, ২ বিদ্যালয়

যমুনায় ভাঙন
সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার সোদিয়াচাঁদপুর ইউনিয়নে আকস্মিক ভাঙনে যমুনায় বিলীন হচ্ছে চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

প্রকৃতির নিয়মে শীতের আগে নদীর পানির প্রবাহ কমে যায়। তবে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে এ বছর যেন শান্ত হচ্ছে না যমুনা নদী। কার্তিকের এই সময়েও নদীতে প্রবল স্রোত। ভাঙনে বিলীন হচ্ছে নদীপারের বাড়িঘর, ফসলি জমি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

গত কয়েক দিনে সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলায় যমুনার আকস্মিক ভাঙনে বাড়িঘরের পাশাপাশি বিলীন হয়েছে ২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। হুমকিতে আছে আরও ৩টি।

ইতোমধ্যে সে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শীত মৌসুমের আগে এভাবে নদী ভাঙনে দিশেহারা নদীপারের মানুষ। একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় থেমে যাচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।

সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর ফিরোজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আকস্মিক ভাঙনে মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানে ২ স্কুল ভবন নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। এর মধ্যে নব নির্মিত একটি স্কুল ভবন রয়েছে।'

নদীগর্ভে বিলীন স্কুল ২টি হলো—চৌহালির সোদিয়াচাঁদপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রেহাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

শিক্ষা কর্মকর্তা আরও বলেন, 'গত মঙ্গলবার দেখা যায় স্কুলের নব নির্মিত ভবনটি নদীর দিকে পুরোপুরি হেলে আছে। বুধবার এর বেশিরভাগ নদীগর্ভে চলে যায়।'

এ ছাড়াও, ভাঙনের কবলে আছে ওই ইউনিয়নের আরও ৩ প্রাথমিক বিদ্যালয়। তিনি জানান, নদী এখন চর মুরাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চর মিতুয়ানি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১০ ফুট দূরে আছে।

ভাঙন থেকে বাঁচাতে স্কুল ২টি সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত মঙ্গলবার মুরাদপুর স্কুলের টিনশেড ভবনটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গতকাল থেকে চর মিতুয়ানি স্কুলটিও সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

'ক্ষতিগ্রস্ত এসব বিদ্যালয়ের প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর পড়ালেখা হুমকিতে পড়েছে' উল্লেখ করে চর মিটুয়ানি স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. তোফাজ্জল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অসময়ে নদী ভাঙনের এমন দৃশ্য আগে দেখিনি। যে সময় নদী শান্ত থাকে সে সময় এবার প্রবল স্রোত। স্কুলের আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।'

স্কুলের শিক্ষক মো. মোশারফ হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বছর শেষে পরীক্ষার আগে এমন দুর্যোগে পড়ায় অনেক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে।'

শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় যেন সমস্যা না হয় সে জন্য আগামী শনিবার থেকে নতুন জায়গায় স্কুল চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

চৌহালি উপজেলায় বিদ্যালয় ছাড়াও, ভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘর। হুমকিতে আছে আরও শতাধিক স্থাপনা।

চৌহালি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসানা ইয়াসমিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হঠাৎ নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় চৌহালিতে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন এলাকার চেয়ারম্যানদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকা পাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্তদের প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে।'

আকস্মিক ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিলটন হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উজানে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে অসময়ে পানি বেড়ে যাওয়ায় নদীভাঙন হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

What if the US election ends in a Trump-Harris tie?

While not highly likely, such an outcome remains possible, tormenting Americans already perched painfully on the edge of their seats ahead of the November 5 election

2h ago