ইন্দোনেশিয়ায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, পদদলনে নিহত ১২৯
ইন্দোনেশিয়ায় একটি ফুটবল খেলার পর হাজার হাজার ভক্ত মাঠে ঢুকে পড়েন। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের দর্শকরা তৈরি করেন বিশৃঙ্খলা, জড়িয়ে পড়েন সংঘর্ষে। এরপর পুলিশ পরিস্থিতি সামলাতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করলে সমর্থকরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে যান। সেসময় পদদলনে অন্তত ১২৯ জন নিহত হয়েছেন।
পুলিশের বরাতে রোববার বার্তা সংস্থা এএফপি এই খবর দিয়েছে। আহত হয়েছেন ২০০-র বেশি মানুষ।
গতকাল শনিবার রাতে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভার মালাং শহরের কানজুরুহান ফুটবল স্টেডিয়ামে এমন ঘটনা ঘটেছে। ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দেশটির শীর্ষ স্তরের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব আরেমা এফসি ও পেরসেবায়া সুরাবায়া। সেখানে স্বাগতিক দল আরেমা ৩-২ গোলে হেরে যায় পেরসেবায়ার কাছে।
এই ঘটনাকে 'বিশ্বের অন্যতম বড় স্টেডিয়াম বিপর্যয়' হিসেবে আখ্যা দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হারের পর আরেমার দর্শকরা মাঠে ঢুকে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে পুলিশ তা নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে।
পূর্ব জাভা পুলিশ প্রধান নিকো আফিন্তা গণমাধ্যমকে বলেছেন, 'সেসময় দর্শকরা হুড়োহুড়ি করে গেট দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করায় পদদলনের ঘটনা ঘটে।'
তিনি আরও বলেছেন, 'খুবই বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। দর্শকরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তারা গাড়ি ভাঙচুর করে।'
ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার কমিশনের প্রধান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সংস্থাটি কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহারসহ গ্যালারির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তদন্ত করবে।
দেশটির নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ মাহফুদ মাহমোদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে জানিয়েছেন, স্টেডিয়ামে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি দর্শক ছিলেন। ৩৮ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়ামে ৪২ হাজার টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় ৩ হাজার দর্শক গ্যালারি ছেড়ে মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন।
ইন্দোনেশিয়ার ক্রীড়ামন্ত্রী জাইনুদ্দিন আমালি স্থানীয় কম্পাস টিভিকে জানিয়েছেন, তার মন্ত্রণালয় ফুটবল ম্যাচের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করবে।
তিনি আরও বলেছেন, 'এটি দুঃখজনক ঘটনা যা আমাদের ফুটবলকে এমন সময়ে "ক্ষতিগ্রস্ত" করেছে যখন সমর্থকরা স্টেডিয়ামে বসে ফুটবল খেলা দেখতে পারছে।'
দেশটির সরকার এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছে। পদদলনের কারণ খুঁজে বের করার জন্য তদন্তের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে তারা।
ইন্দোনেশিয়া ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএসএসআই) দেশটির শীর্ষ লিগ যা বিআরআই লিগা ওয়ান নামে পরিচিত। এই দুর্ঘটনার পর এর সব খেলা এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে।
আরেমাকে বাকি মৌসুমের জন্য ঘরের মাঠে খেলার আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সংস্থাটি। তারা জানিয়েছে, নিজেদের একটি তদন্ত দল মালাংয়ে পাঠাবে।
পিএসএসআই চেয়ারম্যান মোকাম্মদ ইরিয়াওয়ান বলেছেন, 'আমরা দুঃখিত এবং এই ঘটনায় নিহতদের পরিবার এবং সংশ্লিষ্ট সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।'
Comments