১৫৫ রানের জয়ে সুপার ফোরে ওঠা পাকিস্তান গড়ল রেকর্ডও
ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে খেললেন দারুণ ইনিংস। লম্বা সময় তাকে সঙ্গ দেওয়া ফখর জামানও পেলেন ফিফটি। শেষ ওভারে ছক্কার ফুলঝুরি ছোটালেন খুশদিল শাহ। তাতে প্রথম দিকে ধীরেসুস্থে এগোনো পাকিস্তান পেল বড় পুঁজি। বোলিংয়ে শাদাব খান, মোহাম্মদ নওয়াজ ও নাসিম শাহ জ্বলে উঠে গুঁড়িয়ে দিলেন হংকংকে। এশিয়া কাপের সুপার ফোরের টিকিট নিশ্চিতের পাশাপাশি রেকর্ডও গড়ল বাবর আজমের দল।
শুক্রবার শারজাহতে 'এ' গ্রুপের ম্যাচে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষকে ১৫৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে পাকিস্তান। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেটে ১৯৩ রান তোলে তারা। জবাবে বিন্দুমাত্র লড়াই করতে না পেরে ১০.৪ ওভারে হংকং অলআউট হয় মাত্র ৩৮ রানে। এই গ্রুপ থেকে আগেই আসরের সুপার ফোরের টিকিট পেয়েছে শিরোপাধারী ভারত।
টি-টোয়েন্টি সংস্করণের এশিয়া কাপে রানের হিসাবে সবচেয়ে বড় জয়ের নজির গড়েছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেই এটি দলটির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের কীর্তি। এর আগে ২০১৮ সালের এপ্রিলে করাচিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তারা হারিয়েছিল ১৪৩ রানে।
একেবারে বিপরীত অভিজ্ঞতা হয়েছে আইসিসির সহযোগী সদস্য হংকংয়ের। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার তিক্ত স্বাদ পেয়েছে তারা। এর আগে ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে নেপালের বিপক্ষে তাদের ইনিংস থেমেছিল ৬৯ রানে।
দুই দলের জন্য এটি ছিল বাঁচা-মরার লড়াই। তবে শক্তির বিচারে পাকিস্তান যোজন যোজন ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় হংকংয়ের পক্ষে বাজি ধরার লোক পাওয়া ছিল দুষ্কর। ২২ গজেও দেখা গেছে পাকিস্তানের একচ্ছত্র আধিপত্য। গোটা ম্যাচে কোনো মুহূর্তেই বিপাকে পড়তে হয়নি তাদের।
ভারতের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ব্যর্থ বাবরের ব্যাট এদিনও হাসেনি। ৮ বলে ৯ করে অফ স্পিনার এহসান খানের হাতে ফিরতি ক্যাচ দেন তিনি। তৃতীয় ওভারে দলীয় ১৩ রানে পাকিস্তান হারায় প্রথম উইকেট।
দ্বিতীয় উইকেটে ৮১ বলে ১১৬ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় পাকিস্তান। রিভিউ নিয়ে এলবিডব্লিউ থেকে বেঁচে যাওয়া ফখর পরে থামেন ৫৩ রানে। ৪১ বলের ইনিংস তিনি সাজান ৩ চার ও ২ ছক্কায়। তাকেও বিদায় করেন এহসান।
ফখর সাজঘরে ফেরার পর রিজওয়ান ও খুশদিল মাত্র ২৩ বলে যোগ করেন অবিচ্ছিন্ন ৬৪ রান। দুজনই থেকে যান অপরাজিত। ৪২ বলে ফিফটি ছোঁয়া ম্যাচসেরা রিজওয়ান পরে হাত খোলেন। তিনি ৬ চার ও ১ ছয়ে করেন ৫৭ বলে ৭৮ রান। শেষ ওভারে হংকংয়ের পেসার আইজাজ খানকে কাঁদিয়ে ছাড়েন খুশদিল। টানা ৪ ছক্কা হাঁকান তিনি। সবমিলিয়ে তার ব্যাট থেকে আসে ৫ ছক্কা। খুশদিল ৩৫ রান করেন মোটে ১৫ বল খেলে। প্রথম ১০ ওভারে ৬৪ রান তোলা পাকিস্তান পরের ১০ ওভারে আনে আরও ১২৯ রান!
লক্ষ্য তাড়ায় হংকংয়ের কেউই দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। গড়ে ওঠেনি কোনো জুটিও। ১১ ব্যাটার মিলে করেন ২৮ রান। সর্বোচ্চ ১০ রান আসে অতিরিক্ত খাত থেকে। ১৬ রানের উদ্বোধনী জুটির পর জোড়া আঘাত করেন পেসার নাসিম। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে আরেক ধাক্কা দেন শাহনেওয়াজ দাহানি।
এরপর শুরু হয় পাকিস্তানের স্পিনারদের ভেলকি দেখানো। হংকংয়ের পরের ৭ উইকেট ভাগাভাগি করে নেন লেগ স্পিনার শাদাব ও বাঁহাতি স্পিনার নওয়াজ। সেজন্য তাদের লাগে ৪.২ ওভার! দুজনই স্বাদ নেন টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের। শাদাবের ঝুলিতে ৪ উইকেট যায় ৮ রানে। নওয়াজ ৫ রানে পান ৩ উইকেট।
আগামী রোববার দুবাইতে সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ফের ভারতের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায়। একই ভেন্যুতে এবারের আসরে দুই দলের আগের দেখায় ৫ উইকেটে হেরেছিলেন বাবররা।
Comments