‘দিন: দ্য ডে’- এর বাজেট বিতর্ক নিয়ে যা বললেন অনন্ত জলিল

ananta-jali
অভিনেতা অনন্ত জলিল। ছবি: সংগৃহীত

'দিন: দ্য ডে' সিনেমা নিয়ে পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজমের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের জবাব ভিডিও বার্তার মাধ্যমে দিয়েছেন অনন্ত জলিল। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিওটি শেয়ার করেছেন তিনি।

ছবির পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজম সপ্তাহখানেক আগে ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জানিয়েছিলেন হয়, 'দিন: দ্য ডে' ছবির বাজেট ৪ কোটি টাকা। এর পর থেকেই অন্তত জলিলকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছিল।

এর জবাবে ভিডিও বার্তায় অনন্ত জলিল বলেন, কিছুদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়াতে 'দিন-দ্য ডে'র বাজেট নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। মিস্টার মুর্তজা অতাশ জমজম, ইরানি ডিরেক্টর এবং প্রডিউসার, 'দিন-দ্য ডে' মুভির। তিনি বাংলায় একটি এগ্রিমেন্ট পোস্ট করেন যাতে দেখানো হয়েছে, আমার তাকে ৪-৫ লাখ ডলার দেওয়ার কথা, তা থেকে আপনারা নিউজ করে যাচ্ছেন মুভিটির বাজেট ৪ কোটি টাকা। বাংলায় এগ্রিমেন্ট পোস্ট করার কিছুদিন আগে তার ইনস্টাগ্রামে আরও একটি লেখা পোস্ট করেন সেখানে তিনি বলেন, আমি তার এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী পেমেন্ট করি নাই এবং ইরানিদেরকে আমি পেমেন্ট করি নাই। এমনকি তিনি বলেছেন, মুভিটি আমি আমার মতো করে বানিয়েছি। আমি এক এক করে তার এই পোস্টের ব্যাপারে আসল সত্যটা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।

১. এটা যৌথ প্রযোজনার মুভি, দুটি দেশের মধ্যে, সুতরাং বাংলা কোন এগ্রিমেন্ট গ্রহণযোগ্য হয় কিনা তা আপনাদের সবারই জানা। যারা খুব উৎসাহ নিয়ে আমার সমালোচনা করছেন। আমি হলফ করে বলতে পারি এই এগ্রিমেন্ট সম্পূর্ণভাবে বানোয়াট। বাংলাদেশে শুটিং করার সময় ইরান থেকে ১৭ জনের একটি টিম নিয়ে আসেন মিস্টার মুর্তজা। আপনারা মিশা ভাই ও খোরশেদ আলম ভাইকে জিজ্ঞেস করবেন। মিশা ভাই সহ অন্যান্য বাংলাদেশি আর্টিস্ট ছিলেন, শুটিংয়ে আমি কোনো ডিরেকশন দিয়েছি কিনা? কারণ মিস্টার মুর্তজা সাহেবের সঙ্গে আমাদের দেশের একজন গুণী ডিরেক্টর ছিলেন, তার নাম মিস্টার শেখ জামাল। তিনিও এই ইন্ডাস্ট্রিতে ৩৫ বছর ধরে কাজ করেন। মিস্টার মুর্তজা ও শেখ জামাল ছবিটি পরিচালনা করেন।

২. সিনেমার বড় অংশগুলো ৩টি দেশে শুটিং হয়েছে। সে দেশের আর্টিস্ট, টেকনিশিয়ানসহ সমস্ত কিছু মিস্টার মুর্তজা ব্যবস্থা করেছেন এবং শুটিং সম্পন্ন করেছেন। আমাদের বাংলাদেশের কিছু টেকনিশিয়ান কাজ করেন। ভাষা ভিন্ন হওয়ায় আমাদের টেকনিশিয়ানরাও তাদের সঙ্গে ভালোভাবে কাজ করতে পারেনি। অথচ তিনি খুব সুন্দরভাবে বাংলায় একটি স্ট্যাটাস দিলেন।

৩. এবার আসি মুভিটির বাজেট নিয়ে। মুভিটির শুটিং শুরু হয় ২০১৯ সালে এবং শেষ হয় ২০২০ সালের মধ্যে। আপনারা আমার ইন্টারভিউগুলো দেখতে পারেন, টেলিভিশন, খবরের কাগজ, সামাজিক মাধ্যমে ছবিটি মুক্তির আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এবং মুক্তির পরেও কোনো সাক্ষাৎকারে দেখাতে পারবেন যে আমি বলেছি এই মুভিটির ইনভেস্টর আমি? আমি সব সময় বলে এসেছি, শুধুমাত্র বাংলাদেশের শুটিং এর ইনভেস্টর আমি। ২০২১ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি লা-মেরিডিয়ান হোটেলে 'দিন-দ্য ডে' এবং 'নেত্রী দ্য লিডার' মুভির একটি অনুষ্ঠান করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে মুর্তজা, ইরানের আর্টিস্টরা উপস্থিত ছিলেন। মুর্তজা প্রেস কনফারেন্স এর সময় আমাকে বলেন শুটিংয়ে তিনি যে বাজেট নির্ধারণ করেছিলেন তার চেয়ে তিনি অনেক বেশি অর্থ খরচ করেন। মিস্টার মুর্তজার বলা অংকটাই প্রেস কনফারেন্স এ আমি বলি। তিনি বাজেট নিয়ে যা বলেছেন আমার ইন্টারভিউগুলোতেও একই কথা বলি। মিস্টার মুর্তজা বলেছেন, আমার ৪-৫ লাখ ডলার তাকে শুটিং খরচের জন্য দেওয়ার কথা। এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী সম্পূর্ণ টাকা দেই নাই। আপনাদের জানাচ্ছি যে, এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের শুটিং এর সমস্ত খরচ আমার দেওয়ার কথা, সে অনুযায়ী বাংলাদেশের শুটিং এর সমস্ত খরচ আমি বহন করি। সেখানে ১ কোটি টাকা লাগল, বা ৪ কোটি টাকা লাগল সেটা তো মিস্টার মুর্তজার দেখার বিষয় না। বাংলাদেশের শুটিং খরচ ছাড়া বিদেশের কোনো শুটিং খরচ আমার দেওয়ার কথা না, বিমান ভাড়া ছাড়া। সেখানে আমি তাকে ডলার দেবো এই প্রশ্ন উঠবেই বা কেন?

তাহলে মিস্টার মুর্তজা এতগুলো দেশে যে শুটিং করল তাতে তো তার কোন টাকা ই খরচ হয় নাই। তিনি যে এমাউন্ট বলেছেন আমার দেওয়ার কথা সেটাই আপনারা মুভির বাজেট বলে নিউজ করেছেন। তাহলে তিনি কীভাবে বলেন তার পোস্টে যে আমি তাকে এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী টাকা দেই নাই। আর আপনারা তা ফলোও করে প্রচার করছেন মুভির বাজেট ৪ কোটি টাকা। তাহলে তো মিস্টার মুর্তজা কোনো টাকাই খরচ করেন নাই।

৪. আমরা যখন বিদেশে শুটিং এ যাই, মুর্তজা আমাদেরকে অনেক সম্মান দিয়েছেন, ফাইভ স্টার হোটেল এ রেখেছেন, এমনকি তার বাসায়ও দুইদিন আমাদের সম্পূর্ণ টিমকে দাওয়াত দিয়েছেন। আমি ঠিক একই রকম ভাবে ইরানের ১৭ জনের টিমকে সোনারগাঁও হোটেলে রাখি। একই সম্মান আমরাও দিয়েছি তাদেরকে। মুর্তজার সঙ্গে আমার কখনো কোনো মতভেদ হয়নি। কে বা কারা নিজের স্বার্থের জন্য মুর্তজার সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব তৈরি করেছেন যেটা তারাই ভালো জানে এবং মুর্তজাই বলতে পারবেন। যাদের স্বার্থের জন্য এই ষড়যন্ত্র করেছেন তাদের মুখোশ একদিন মিস্টার মুর্তজাই প্রকাশ করবেন বলে আমার বিশ্বাস।

শুরু থেকেই অনন্ত জলিল দাবি করে আসছিলেন 'দিন: দ্য ডে' সিনেমার বাজেট ১০০ কোটি টাকা। কিন্তু গত ২২ আগস্ট পরিচালক দাবি করেন, প্রকৃত বাজেট আসলে ৫ লাখ ডলার। ২০১৮ সালে হওয়া চুক্তি অনুসারে সিনেমাটির বাজেট বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ কোটি টাকার কিছু বেশি।

ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে পরিচালক এই চুক্তিপত্র প্রকাশের পাশাপাশি অনন্তের বিরুদ্ধে বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করা, চিত্রনাট্য ও শুটিং লোকেশন পরিবর্তনসহ একাধিক অভিযোগ এনেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Mohakhali blockade halts Dhaka's rail link

Students of Titumir College waged protest to press home their demand for upgradation of their institution as a university

33m ago