তাইওয়ান ইস্যুতে চীনকে শান্ত থাকার অনুরোধ অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরকে কেন্দ্র করে চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং চীনকে শান্ত ও সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

চীনের প্রতিশোধ হিসেবে তাইওয়ানের কাছে লাইভ-ফায়ার ড্রিল পরিচালনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার সিনেটর ওং এক সংবাদ সম্মেলনের মুখোমুখি হন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'অস্ট্রেলিয়াই একমাত্র দেশ নয়, যে ক্রমবর্ধমান ঘটনা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন। পুরো বিশ্ব সংঘাতের ঝুঁকি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন।'

গত শুক্রবার অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের একটি যৌথ বিবৃতিতে তাইওয়ান ইস্যুতে চীন সরকারের পদক্ষেপের নিন্দা করা হয়েছে এবং অবিলম্বে সামরিক মহড়া বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ায় চীনা দূতাবাস অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

চীনা দূতাবাস তাইওয়ানের বিষয়ে তাদের অবস্থানের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার ভূমিকার নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করে বলেছে যে, রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় চীনের ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপের প্রতি অস্ট্রেলিয়ার 'আঙুল তোলা' একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।

গতকাল শনিবার অস্ট্রেলিয়ায় চীনা দূতাবাস উদ্বেগ এবং অসন্তোষ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীর প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন জানানোর পরিবর্তে অস্ট্রেলিয়া অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে কথা বলছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ দমনের জন্য চীন সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো বৈধ এবং ন্যায্য।

অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকার তাইওয়ানে মার্কিন কূটনৈতিক সফরকে কেন্দ্র করে চীনের প্রতিক্রিয়াকে অস্থিতিশীল বলে অভিহিত করার পর অস্ট্রেলিয়া ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক টানাপড়েনে পড়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেন, আমরা অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় স্বার্থে এবং আমাদের মূল্যবোধ অনুযায়ী কাজ করতে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি এই অঞ্চলে যা হওয়া উচিত তার পক্ষেই আমরা কাজ করছি এবং অন্যান্য দেশগুলো আমাদের সঙ্গে একমত না হলেও আমরা কাজ করে যাবো।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং শুক্রবার বেইজিংয়ের 'অসমানুপাতিক এবং অস্থিতিশীল' পদক্ষেপের নিন্দা করে বলেছেন, তিনি কম্বোডিয়ায় পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে চীনা প্রতিপক্ষের কাছে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

চীনা দূতাবাসের এক মুখপাত্র বলেন, আমরা আশা করি যে, অস্ট্রেলিয়া তাইওয়ানের প্রশ্নে সতর্কতার সঙ্গে আচরণ করবে। চীন-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কের ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া নতুন সমস্যা এবং ঝামেলা তৈরি করবে না বলে আশা প্রকাশ করছি।'

তিনি আরও বলেন, 'বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রকে তাইওয়ান প্রণালীতে শান্তির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে অভিযুক্ত করেছে এবং বলেছে যে চীন ও জাপানের মধ্যে সামুদ্রিক বিরোধে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ নেওয়া উচিত নয়।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া চীনের প্রতি স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে অস্ট্রেলিয়া তার  জাতীয় স্বার্থ এবং মূল্যবোধ রক্ষা করবে সবার আগে।

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Wasa water stinks

However, the state-run agency claims the water is of standard quality when it leaves their facilities

12h ago