অর্থনীতি পুনরুদ্ধার

আরও ৪০০ কোটি টাকা ঋণ পাবেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা

এসএমই
ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী। প্রতিকী ছবি: স্টার

করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের আরও ৪০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে এসএমই ফাউন্ডেশন। ঋণের সুদের হার হবে ৪ শতাংশ। একজন উদ্যোক্তা সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন।

এসএমই ফাউন্ডেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, অর্থ বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রত্যাবর্তনকৃত অর্থ এবং নিজস্ব তহবিল দ্বারা এসএমই ফাউন্ডেশন একটি 'রিভলভিং ফান্ড' গঠন করেছে। এই ফান্ড থেকে এসএমই উদ্যোক্তা, ক্লাস্টার, অ্যাসোসিয়েশন, চেম্বারের সদস্য ও নারী-উদ্যোক্তাদের মাঝে এই ঋণ বিতরণ করা হবে।

তিনি বলেন, ফাউন্ডেশনের ক্রেডিট হোলসেলিং কর্মসূচির আওতায় 'রিভলভিং ফান্ড' পরিচালনার জন্য পলিসি গাইডলাইনও প্রস্তুত করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ১৭টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে এসএমই ফাউন্ডেশনের।

এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সংকটগুলো কাটিয়ে উঠার জন্য ছোট ছোট উদ্যোক্তারা যাতে আরও ঋণ পেতে পারে সেই কারণেই এই ফান্ডটি গঠন করা হয়েছে। আর এই কারণেই ঋণের সুদের হার বাড়ানো হয়নি।

তিনি বলেন, সরকারের দিক থেকেও নির্দেশনা ছিল রিভলভিং ফান্ড গঠন করার। তাই এখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে। বর্তমানে ইনফ্লেশন, যুদ্ধের প্রভাব ও গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের কারণে ছোট ছোট উদ্যোক্তারা আরও বেশি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। সব কিছুকে সামনে রেখেই এই ঋণটা দেওয়া হবে। যাতে প্রকৃত অর্থেই তারা উপকৃত হয়।

গত দুই বছরে বিভিন্ন কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ছোট উদ্যোক্তারাই। আমরা যদি তাদেরকে ৪০০ কোটি টাকার জায়গায় আরও বেশি পরিমাণে ঋণ দিতে পারতাম তাহলে আরও ভালো হতো, যোগ করেন রহমান।

পলিসি গাইডলাইন অনুযায়ী অগ্রাধিকারভুক্ত এসএমই সাব-সেক্টর, ক্লাস্টার এবং ভ্যালু চেইনের আওতাভুক্ত উদ্যোক্তা, সারা দেশের নারী-উদ্যোক্তা, নতুন উদ্যোক্তা অর্থাৎ যারা এখনো ব্যাংক থেকে ঋণ পাননি, পশ্চাৎপদ অঞ্চল, উপজাতীয় অঞ্চল, শারীরিকভাবে অক্ষম এবং তৃতীয় লিঙ্গের উদ্যোক্তারা ঋণ পাবেন।

এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত ট্রেডবডি, এসএমই অ্যাসোসিয়েশন, নারী-উদ্যোক্তা সংগঠন, নাসিব এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে এমন সরকারি-বেসরকারি সংস্থাসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সুপারিশকৃত উদ্যোক্তারা ঋণ পাবেন।

এসএমই ফাউন্ডেশন বলছে, অংশীদার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে জামানতবিহীন ঋণ বিতরণের বিষয়ে উৎসাহিত করা হবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গ্যারান্টি/সামাজিক গ্যারান্টি/গ্রুপ গ্যারান্টির বিপরীতে ঋণ দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।

তারা বলছে, গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা হবে সর্বোচ্চ ৩ বছর। ৬ মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০টি মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। মোট ঋণের ২৫ শতাংশ নারী-উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করতে হবে।

৩০ শতাংশ উদ্যোক্তার ঋণ ১০ লাখ টাকা বা তার চেয়ে কম পরিমাণের হতে হবে, বলছে এসএমই ফাউন্ডেশন। তারা আরও বলছে, মুদি দোকান, ঔষধ বিক্রেতা, হার্ডওয়্যার বিক্রেতা এবং পরিবেশ দূষণকারী যেমন: ইটভাটা, তামাকজাত দ্রব্য বিক্রেতাকে এ কর্মসূচির আওতায় ঋণ প্রদান করা যাবে না।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা এবং পল্লী এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের প্রণোদনার আওতায় ৩১০৮ জন অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তার মধ্যে এর আগে ৩০০ কোটি টাকা বিতরণ করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন।

Comments

The Daily Star  | English

You have crushed fascism, now strengthen democracy and press freedom

The Daily Star Editor Mahfuz Anam's appeal to the ‘new generation leaders’

12h ago