চোখের পানি পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয়

চোখের পানি
ছবি: সায়েন্স নিউজ

চোখের পানি পরীক্ষা করে মানুষের রোগ শনাক্তের নতুন এক প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। লালা এবং প্রস্রাবের মতো, চোখের পানিতেও রয়েছে বেশ কিছু তথ্যপূর্ণ ক্ষুদ্র কোষ। এই পানিতে থাকা অণুবীক্ষণিক কণাগুলো বলে দিতে পারবে কারও শরীরে ঠিক কী ঘটছে।

গত ২০ জুলাই সায়েন্টিফিক জার্নাল, এসিএস ন্যানোতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে গবেষকদের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানানো হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, নতুন এই পদ্ধতিতে মাত্র কয়েক ফোঁটা চোখের পানি পরীক্ষা করে বিভিন্ন রোগ এবং এমনকি ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলোও শনাক্ত করা যাবে। 

হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের একজন বায়োইঞ্জিনিয়ার এবং এই গবেষণার আরেকজন গবেষক লুক লি বলেছেন, 'বিজ্ঞানীরা এখন অন্যান্য রোগের পাশাপাশি বিষণ্নতা বা মানসিক চাপের বিষয়টি পরীক্ষার জন্যেও চোখের পানি বিশ্লেষণ করতে চান।' 

তিনি আরও বলেন, 'এটি এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, চোখের পানি এমন কিছু প্রকাশ করতে পারে, যা আমরা এতদিন আসলে অন্বেষণই করিনি।'

চীনের ওয়েনঝো মেডিকেল ইউনিভার্সিটির বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার ফেই লিউ জানিয়েছেন, রোগ শনাক্তের জন্য আমরা চোখের পানি পরীক্ষার সম্ভাবনা দেখাতে চেয়েছিলাম। এটাও সম্ভব যে, কয়েক ফোঁটা চোখের পানি মানুষের পুরো শরীরে উঁকি দেওয়ার জন্য একটি জানালা খুলে দেবে। একদিন হয়তো মানুষ বাড়িতে বসেই দ্রুত তাদের চোখের পানি পরীক্ষা করতে পারবেন।

তবে, লালা এবং প্রস্রাবের মতো চোখের পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মাইক্রোস্কোপিক কোষগুলো বিশ্লেষণ করা সহজ নয়। শরীরের অন্যান্য অংশ থেকেও এই তরল ভিন্ন। কারণ চোখ থেকে শুধু একটি ছিদ্র দিয়ে খুবই কম পরিমাণে এই তরল নির্গত হয়।

অন্যদিকে, বিশ্লেষণের জন্য চোখের পানিতে বিদ্যমান এক্সোসোম কোষ যথেষ্ট পরিমাণ সংগ্রহ করাও বেশ কঠিন। তাই লিউ-এর গবেষক দল চোখের পানির ক্ষুদ্র পরিমাণ থেকে এক্সোসোম কোষ সংগ্রহ করার এক নতুন উপায় বের করেছেন। 

গবেষকরা প্রথমে গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের থেকে চোখের পানি সংগ্রহ করেন। তারপর, দুটি ন্যানোপোরাস মেমব্রেনযুক্ত একটি ডিভাইসে চোখের পানি মিশ্রিত দ্রবণ যোগ করেন। মেমব্রেনটি ঝাকানো হলে সেটি দ্রবণটিকে শুষে নেয়। এভাবে কয়েক মিনিটের মধ্যে বিশ্লেষণের জন্য এক্সোসোম কোষগুলোকে আলাদা করে ফেলে।

তথ্যসূত্র: সায়েন্স নিউজ

গ্রন্থনা: আহমেদ বিন কাদের অনি

 

Comments

The Daily Star  | English

Battery-run rickshaws allowed back on Dhaka roads for one month

SC chamber judge issues status quo on HC order

3h ago