সাকিবের ‘ওয়ানডে ঘরানার’ ইনিংসের মূল্য আসলে কি?

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১৯৩ রানের লক্ষ্যে শুরুতে ৩ উইকেট হারানোর পরই যেন হার মেনে নিয়ে ব্যাট করে গেল বাংলাদেশ দল!
Shakib Al Hasan
ফিফটি করলেও জেতার তাড়না দেখাতে পারেননি সাকিব। ছবি- এএফপি

টেস্টের মতো সীমিত ওভারের ক্রিকেটে জয়-পরাজয়ের বাইরে ড্র বলে কিছু নেই। হয় আপনি জিতবেন, নয়তো হারবেন। ম্যাচ 'টাই' হলে সেটা অন্য ব্যাপার। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে মনে হলো হার-জিতের বাইরে 'সম্মানজনক হার' বলে কোন টার্ম বোধহয় আছে! আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল খেলে গেছে সেই লক্ষ্যেই।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১৯৩ রানের লক্ষ্যে শুরুতে ৩ উইকেট হারানোর পরই যেন হার মেনে নিয়ে ব্যাট করে গেল বাংলাদেশ দল! সাকিব আল হাসান ফিফটি করলেন বটে, তাও ৪৫ বলে!ফিফটির পর যখন তেড়েফুঁড়ে কিছু মারতে লাগলেন ততক্ষণে ম্যাচের কোন সমীকরণেই নেই বাংলাদেশ।

কেউ ফিফটি করলে তার ব্যাটিংয়ের সমালোচনা করা অনেকের কাছে বড্ড বেমানান লাগতে পারে। কেউ বলতেই পারেন বাকিরা তো রানই পাননি, সাকিব তো তাও রান করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো তার রানটা আসলে কি কাজে লেগেছে? ইনিংসের প্রায় পুরোটা সময় ক্রিজে থেকেও এক মুহূর্তের জন্যও যে দলের জেতার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেননি তিনি।

বড় লক্ষ্যে ৮ রানে দুই ওপেনার বিদায় নেওয়ার পর ২৩ রানে মাহমুদউল্লাহকেও হারায় বাংলাদেশ। এরপর আফিফ হোসেনের সঙ্গে ৫৫ রানের জুটি গড়েন সাকিব। কিন্তু ৫৫ রান আনতে লেগে যায় ৪৪ বল। ২৭ বলে ৩৪ করে আফিফ ফেরার পর আরও 'নিরাপদ মুডে' খেলতে থাকেন সাকিব।

১৭তম ওভারে এক পর্যায়ে তার রান ছিল ৩৭ বলে ৩৫! ৪৫ বলে তিনি যখন ফিফটি স্পর্শ করেন তখন চলছে ১৯তম ওভারের খেলা। ম্যাচ জিততে বাংলাদেশের চাই ১১ বলে ৬২ রান! অর্থাৎ প্রতি বলে বলে ছক্কার সমীকরণ। কার্যত ম্যাচের কোন হিসেবেই তখন তাই নেই বাংলাদেশ। ফিফটির পর দেখা যায় সাকিবের বড় কিছু শট। ৫৮ রানে একবার জীবনও পান। শেষ পর্যন্ত ৫২ বলে তিনি অপরাজিত থাকেন ৬৮ রানে। শেষ দিকে কিছু বাউন্ডারিতে তার স্ট্রাইকরেটও (১৩০) হয়ে যায় ভদ্রস্থ।  কিন্তু বাংলাদেশ ম্যাচ হারে ৩৫ রানে।

ম্যাচ জেতার জায়গায় যেতে সাকিবের এই অ্যাপ্রোচ দেখানো দরকার ছিল ১০ ওভারের পর পরই। তখন তিনি খেলেছেন এক-দুই নিয়ে। ঝুঁকি নেয়ার পথে পা বাড়াননি। আস্কিং রানরেট ক্রমশও বেড়েছে। একসময় চলে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। 

সাকিব এই ইনিংস দিয়ে একটি মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তার ২ হাজার রান হয়ে গেছে। ১০০ উইকেট আর ২ হাজার রানের ডাবলসেও গেলেন সবার আগে। তাতে হয়ত তার ব্যক্তিগত পরিসংখ্যানের পাতা হলো ভারি। কিন্তু বাংলাদেশ পেল আরেকটি হার। সেটাও বেশ দৃষ্টিকটু পথে।

বাংলাদেশ দেখাল দুশোর কাছাকাছি লক্ষ্যে শুরুতে ২-৩ উইকেট পড়ে গেলে তারা আর জেতার চেষ্টাই করে না। অর্থাৎ জিততে পারব এই বিশ্বাসটাই কাজ করে না। ম্যাচ হারার চেয়ে এই দুর্বল মানসিকতা বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি সংস্করণের জন্য  বড় ক্ষতই হয়ে গেল।

Comments

The Daily Star  | English

An economic corridor that quietly fuels growth

At the turn of the millennium, travelling by road between Sylhet and Dhaka felt akin to a trek across rugged terrain. One would have to awkwardly traverse bumps along narrow and winding paths for upwards of 10 hours to make the trip either way.

13h ago