‘অভিযোগ তোলার আগে পুলিশের খতিয়ে দেখা দরকার মাহদী শিবিরকর্মী কি না’

গ্রেপ্তার মাহদী হাসান। ছবি: সংগৃহীত

'আমার ছেলে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কি না, জানা নেই। এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারব না। হতেও পারে, তা না হলে কিসের ভিত্তিতে পুলিশ দাবি করছে? তবে, অভিযোগ তোলার আগে খতিয়ে দেখা হোক যে গত ১০ বছরে সে শিবিরের কোনো কর্মকাণ্ডে জতি ছিল কি না।'

পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলার ঘটনায় গ্রেপ্তার মাহদী হাসানের বাবা মনির হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার দ্য ডেইলি স্টারকে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, 'ঢাকার কাজী নজরুল ইসলাম কলেজে পড়াশোনা করছে মাহদী। পুলিশ দেখুক সে শিবিরের কোনো মিটিং, সমাবেশ কিংবা কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত ছিল কি না।'

'সে না বুঝেই পদ্মা সেতুতে গিয়ে এ কাজটি করেছে' উল্লেখ করে মনির হোসেন বলেন, 'বিষয়টি এত দূর পর্যন্ত গড়াবে, তা সে বোঝেনি। তার শিক্ষাজীবন কত বাকি। বুঝলে কখনোই যেত না পদ্মা সেতুতে।'

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'মাহদী না বুঝে হয়তো ছোটবেলায় শিবিরের ফর্ম পূরণ করে থাকতে পারে। হয়তো বুঝতেই পারেনি এর পরিণাম সম্পর্কে। তবে সে শিবিরকর্মী কি না, সেটা আমি নিশ্চিত বলতে পারব না। তা না হলে, কিসের ভিত্তিতে পুলিশ এ দাবি করছে?'

গতকাল বুধবার লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা থেকে মাহদীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর পুলিশের সংবাদ সম্মেলন সম্পর্কে মাহদীর বাবা মনির হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুলিশ মিডিয়ার সামনে এসে যেসব কথা বলেছে, এসব তো আমার ছেলে সামনে এসে বলেনি। তারা যে বক্তব্য দিয়েছে, সেগুলো আদৌ তার কথা কি না, কিংবা আমার ছেলেই এগুলো বলছে কি না, তা আমার জানা নেই। আমার ছেলে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। সে বিজ্ঞান বিভাগের বোটানির ছাত্র।'

'করোনার কারণে তাকে পড়াশোনা বাদ দিয়ে বিদেশে চলে যেতে বলেছিলাম। ২ বছর সে অনিয়মিত ছিল। পরে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে যাই। আমরা ছেলে একজন ছাত্র। পুলিশ কেন এগুলো বলল, এতে দুঃখ পেয়েছি,' বলেন তিনি।

ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) গত ২৯ জুন রাতে মাহদীকে গ্রেপ্তার করে।

সিটিটিসি জানায়, মাহদী তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসা থেকে আলিম-দাখিল শেষ করেছেন। মাদ্রাসায় পড়ার সময় তিনি শিবিরকর্মী ছিলেন।

মাহদীর বাড়ি মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলার বড় ধীপুর ইউনিয়নের রব নগরকান্দী গ্রামে। তার বাবা মনির ওই এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাজির দায়িত্ব পালন করছেন।

ধীপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সায়েদ কবিরাজ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, মনির হোসেন একই উপজেলার অন্য একটি এলাকা থেকে বর্তমানে এ এলাকায় এসে স্থায়ীভাবে বাড়ি করেছেন।

তিনি বলেন, 'তার ছেলেকে ভালোভাবে চিনি না। কী কাজ করে, তা জানি না কিংবা কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত কি না, তাও জানি না।'

তিনি আরও বলেন, 'গ্রামবাসীরা সবাই এটি নিয়ে আলোচনা করছে। মাহদী জঘন্য কাজ করেছে।'

এদিকে, মাহদীকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মুন্সিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক মানিক চন্দ্র দাস তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মুন্সিগঞ্জ আদালতের পুলিশ পরিদর্শক জামাল উদ্দিন ডেইলি স্টারকে জানান, বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১৫ এর ৩ ধারা নাশকতার উদ্দেশে পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

পদ্মা সেতু উত্তর থানায় এ মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Economic expectations: Did govt fall short?

When an interim government was sworn into office following the ouster of the Awami League regime just 100 days ago, there was an air of expectation that the Prof Muhammad Yunus-led administration would take steps to salvage a scam-ridden financial sector and rescue an ailing economy.

7h ago