সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধের নতুন প্রচেষ্টা জরিমানা

প্রতীকী ছবি

কোনো 'বেআইনি বা অপরাধমূলক' কার্যকলাপে জড়িত হলে একজন সাংবাদিককে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান রেখে প্রেস কাউন্সিল আইন ১৯৭৪ সংশোধন করা হচ্ছে। এটি জেনে আমরা শঙ্কিত। সংশোধনীর খসড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুমোদনের পর সেটি এখন সংসদে পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান।

দ্য ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাউন্সিলের সব সাংবাদিক-প্রতিনিধিরা এতে 'সম্মতি' দিয়েছেন এবং বিষয়টি নিয়ে 'বর্তমান কমিটির সঙ্গে আলোচনা' করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন। অথচ কমিটির কয়েকজন সদস্য এ ধরনের কোনো আলোচনার কথা অস্বীকার করেছেন।

জানা গেছে, প্রেস কাউন্সিল ৫ বছর আগে শাস্তি বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেছিল, কিন্তু প্রস্তাবিত সংশোধনী নিয়ে সম্প্রতি কোনো আলোচনা হয়নি। এ বিষয়ে এক ধরনের রহস্য রয়ে গেছে।

বিদ্যমান ফৌজদারি আইনের আওতায় যে অপরাধে সাজা দেওয়া সম্ভব, এমন অপরাধের জন্য প্রেস কাউন্সিল জরিমানার শাস্তি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে, বিষয়টি সত্যিই বিভ্রান্তিকর।

কাউন্সিলের এক সদস্যের মতে, সংশোধনীর মাধ্যমে প্রেস কাউন্সিলকে আরও একটু ক্ষমতা দেওয়া হবে। তবে সাংবাদিক হিসেবে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। প্রেস কাউন্সিলের মামলা হয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নয়।

আমরা প্রেস কাউন্সিলের ক্ষমতা বাড়ানোর গুরুত্ব বুঝি। বিশেষ করে নৈতিকতা ও ন্যায্যতা বজায় রেখে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এর যথেষ্ট গুরুত্ব আছে। কিন্তু প্রায়ই যেটি হয়ে থাকে সেটি হলো- রাষ্ট্রীয় কাঠামোই সাংবাদিকতার নৈতিকতার বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে ওঠে, কোনো ব্যক্তি সাংবাদিক নন। বর্তমানে একজন সাংবাদিকের অন্যায় প্রমাণিত হলে কাউন্সিল তাকে তিরস্কার করতে পারে, এর বাইরে কিছু নয়।

সাংবাদিকদের জন্য ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করতে ইতোমধ্যেই কিছু কালো আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এ ধরনের মোটা অংকের জরিমানার বিধান সেই তালিকায় নতুন করে যোগ হতে যাচ্ছে। এ আইনের ফলে সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা আরও সঙ্কুচিত হয়ে যেতে পারে। কোনো ধরনের ভয়ভীতি ছাড়াই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারলেই তারা জনগণের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরতে পারেন।

দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা নিশ্চিত করতে যেকোনো উদ্যোগকে আমরা আন্তরিকভাবে সমর্থন করি। তবে কোনো ব্যক্তি, সাংবাদিক বা গণমাধ্যমকে মোটা অংকের জরিমানা করা বা দমন-পীড়নমূলক আইনের মাধ্যমে তা নিশ্চিত হয় না।

সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখলে দেশের গণতন্ত্র শক্তিশালী হতে পারে, এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই। জনগণের কণ্ঠস্বরকে বাঁধা দিয়ে কোনো দেশ বা শাসনব্যবস্থা উন্নতি করতে পারে না। সুতরাং আমরা প্রেস কাউন্সিল আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনীকে ত্রুটিপূর্ণ বলে মনে করে এর বিরোধিতা করছি।

Comments

The Daily Star  | English

Cancer patients cut off from vital lifeline

All six radiotherapy machines of the NICRH have been out of order for 19 days, depriving over 200 cancer patients of their scheduled therapy every day.

11h ago