৪ ঘণ্টা পর ঢাকা-সিলেট রুটে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক

ছবি: মিন্টি দেশোয়ারা/স্টার

সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনের শমশেরনগর ও মনু রেল স্টেশনের মধ্যবর্তী ডাকবেল এলাকায় সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের ৩টি বগিতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। প্রায় ৪ ঘণ্টা পর  ঢাকা-সিলেট রুটে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।

আজ শনিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে ট্রেনের পাওয়ার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে বলে জানা গেছে। 

পরে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট একযোগে কাজ করে প্রায় দেড়ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

এরপর বিকেল ৫ টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। 

এ ঘটনায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সুখেশ দাশ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আমি শ্রীমঙ্গল স্টেশন থেকে সিলেট যাওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রেনের 'ঙ' বগিতে উঠি। ট্রেনটি শমশেরনগর রেল স্টেশন অতিক্রম করার পরই টয়লেটের পাশ থেকে বিকট শব্দ শুনতে পাই। পরে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। এ সময় যাত্রীরা চিৎকার শুরু করেন।

স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে শমশেরনগর রেল স্টেশন অতিক্রম করে। কিছুক্ষণ পর থেকেই ট্রেনের জেনারেটরের বগিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তেলের ট্যাংকি থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এরপর প্রায় ৪ কিলোমিটার অতিক্রম করার পর যাত্রীদের চিৎকারে ট্রেনটি থামানো হয়। তখন যাত্রীরা দ্রুত ট্রেন থেকে নেমে নিরাপদে চলে যান। স্থানীয় লোকজন ও যাত্রীদের সহযোগিতায় ট্রেন কর্তৃপক্ষ আগুন লাগা ৩টি বগি বিচ্ছিন্ন করে। পরে ট্রেনের জেনারেটর বগি ও পার্শ্ববর্তী যাত্রীবাহী দুটি বগিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। খবর পেয়ে ঘটনার প্রায় ১ ঘণ্টা পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় কমলগঞ্জের ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও পরে মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল থেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে মোট ৪টি অগ্নিনির্বাপক দল গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনায় ট্রেনের ৩টি বগি ছাড়া কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার পর সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনে ট্রেন চলাচল প্রায় ৪ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। 

খবর পেয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে করেন। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ায় ট্রেনের যাত্রীরা নিজ খরচে সিলেটসহ বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছান। 

আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক মো. ইসমাইল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ট্রেনের পাওয়ার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ট্রেন থামানোর পর দেখা যায় চাকার মধ্যে আগুন ও পরে তেলের ট্যাংকিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।'

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শমশেরনগর স্টেশন মাস্টার মো. জামাল উদ্দীন বলেন, 'ট্রেনটি ১২টা ৪৫ মিনিটে শমশেরনগর স্টেশন ছেড়ে যায়। এ ঘটনার পর সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি লংলা স্টেশন ও চট্রগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি শ্রীমঙ্গলে আটকা পড়ে। 

তবে আগুন পুরোদমে নিয়ন্ত্রণে আসলেও বিকেল ৫টার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। 

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মৌলভীবাজার স্টেশনের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ হারুন পাশা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে আগুন লাগার কারণে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।'

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান স্থানীয়দের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, 'এ ঘটনায় মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল হককে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।' 

আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Pathways to the downfall of a regime

The erosion in the credibility of the Sheikh Hasina regime did not begin in July 2024.

8h ago