পদ্মা সেতু আলোকিত হতে পারে যেদিন

সেতুর ল্যাম্পপোস্টে চলছে বৈদ্যুতিক তার সংযোগের কাজ। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন/স্টার

পদ্মা সেতুর ল্যাম্প পোস্টগুলোতে শেষ পর্যায়ে বৈদ্যুতিক তার সংযোগের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে মূল সেতুর ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্ট ও সেতুর বাইরের সংযোগ সড়কে ২০০টি ল্যাম্পপোস্টে স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। মোট ৬১৫টি ল্যাম্পপোস্টে চলছে বৈদ্যুতিক তার সংযোগের কাজ।

আবহাওয়াসহ সবকিছু অনুকূলে থাকলে আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে এসব কাজ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মূল সেতুর একজন প্রকৌশলী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আগামী ১০-১৫ জুনের মধ্যে সেতুর ল্যাম্পপোস্টের বাতি জ্বালানো হতে পারে।

পদ্মা সেতুর প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় হলেও এসব ল্যাম্পপোস্টের কোনো ক্ষতি হবে না। নিউট্রাল সাদা আলো দেবে এসব বাতি। চীনের ফিলিপস কোম্পানি ১৭৫ ওয়াটের এসব বাতি তৈরি করেছে। দিনের বেলা এসব ল্যাম্পপোস্টে আলো জ্বলবে না। শুধু অন্ধকার হলে জ্বলবে। ল্যাম্প পোস্টগুলো তৈরি হয়েছে চীনে। তবে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক তার বাংলাদেশি।

প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোরে পর্যাপ্ত আলো না আসা পর্যন্ত জ্বালিয়ে রাখা হবে এসব বাতি।

পদ্মা সেতুর সহকারী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল) সাদ্দাম হোসেন ডেইলি স্টারকে জানান, বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২-৩ দিন বেশি সময় লাগবে ল্যাম্পপোস্টে তার সংযোগের কাজ পুরোপুরি শেষ করতে।

তিনি জানান, মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের বেশকিছু পিলারে বৈদ্যুতিক তার সংযোগের কাজ চলমান আছে। দুই প্রান্তের সাবস্টেশনে সংযোগ দিয়ে সেতুর বাতি জ্বালানো হবে। সাবস্টেশনের সঙ্গে সেতুর তার সংযোগের কাজও বাকি আছে।

প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন বলেন, 'আশা করছি আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে তার সংযোগের কাজ সম্পন্ন হবে। তবে ট্রায়াল কবে দেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।'

তিনি জানান, মূল সেতুতে থাকা ল্যাম্প পোস্টগুলোর সঙ্গে এ দুই সাবস্টেশনের সংযোগ দিয়ে বাতি জ্বালানো হবে। বাতি লাগানো ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। সেতু ও ভায়াডাক্ট মিলিয়ে ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্ট আছে।

এছাড়াও ভায়াডাক্ট থেকে সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত আলোকিত করতে মাওয়া প্রান্তে ১০৩টি ল্যাম্পপোস্ট ও জাজিরা প্রান্তে ৯৭টি ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে।

সেতুর প্রকৌশল সূত্র জানায়, ল্যাম্প পোস্টগুলোর দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ২ মিটার। একটি ল্যাম্পপোস্ট থেকে আরেকটি ল্যাম্পপোস্টের দূরত্ব ৩৭ দশমিক ৫ মিটার। প্রতিটি ল্যাম্পপোস্টের ওজন ২৭৫ কেজি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মূল সেতুর একজন প্রকৌশলী ডেইলি স্টারকে জানান, ৩১ মে পর্যন্ত মূল সেতুর অগ্রগতি ৯৯ শতাংশ। নদী শাসন কাজের বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৯৩ শতাংশ। মূল সেতুর কার্পেটিংয়ের কাজ শতভাগ সম্পন্ন। মূল সেতুর ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের কাজ শতভাগ সম্পন্ন। বৈদ্যুতিক তার সংযোগের কাজ ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

অন্যান্য কাজের মধ্যে রোড মার্কিং, হ্যান্ড রেলিং, মুভমেন্ট জয়েন্ট প্যারাপেট, সাবস্টেশনের কাজ চলমান আছে। গ্যাস পাইপ লাইনের কাজ ৯৯ দশমিক ২৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। ৪০০ কেভিএ বিদ্যুৎ সংযোগ কাজের অগ্রগতি ৯৯ শতাংশ।

পুরো প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ বলে জানান তিনি।

Comments