হেরেই গেল বাংলাদেশ
শঙ্কাটা অবশ্য আগের দিনই তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম সারির চার উইকেট হারিয়ে ফেলে ১০ ওভার না যেতেই। শেষ দিনের প্রথম ঘণ্টায় যখন মুশফিকুর রহিম আউট হন, তখন যেন হারের প্রহর গুনছিল টাইগাররা। কিন্তু এরপর সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। তবে তাদের প্রতিরোধ কেবল শ্রীলঙ্কার অপেক্ষাটাই বাড়ায়। শেষ পর্যন্ত পরাজয় মেনেই মাঠ ছাড়তে হয় মুমিনুলদের।
শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ১০ উইকেটের ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। ফলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল শ্রীলঙ্কা। ২৯ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নামা লঙ্কানরা জয়ের বন্দরে পৌঁছায় মাত্র ৩ ওভারেই। প্রথম ইনিংসে ৫০৬ রান করেছিল দলটি। বাংলাদেশ তাদের দুই ইনিংসে করে ৩৬৫ ও ১৬৯ রান।
শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন ওপেনার ওশাদা ফার্নান্ডো। মাত্র ৯ বলে করেন হার না মানা ২১ রান। অধিনায়ক দিমুথ করুনারাত্নে ৯ বলে করেন ৭ রান। তাতে সহজ জয়ে মাঠ ছাড়ে সফরকারী দলটি।
অথচ এদিন সাকিব-লিটন যখন ব্যাট করছিলেন, তখন আশায় বুক বেঁধেছিল বাংলাদেশ। ষষ্ঠ উইকেটে ১০৩ রানের জুটি গড়েন তারা। ইনিংস হারের শঙ্কা কাটিয়ে এ জুটি এনে দেয় লিডও। কিন্তু লাঞ্চের পর ফিরে বাংলাদেশের ইনিংস যেন তাসের ঘর। লিটন বিদায় নেওয়ার পর রীতিমতো ধস নামে। শুরুর মতোই হয় শেষটাও। স্কোরবোর্ডে মাত্র ১৩ রান যোগ হতেই শেষ পাঁচ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
যদিও লিটন আউট হন অনেকটা দুর্ভাগ্যজনকভাবেই। নিজের বলে দুর্দান্ত এক ক্যাচ লুফে নেন আসিথা ফার্নান্ডো। তার অফস্টাম্পে রাখা বলটি ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন লিটন। শেষ মুহূর্তে একটু থমকে গেলে কিছুটা হাওয়ায় ভাসে বল। বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে অসাধারণ ক্ষীপ্রতায় এক হাতে তালুবন্দি করেন এ পেসার। তাতে থামে লিটনের লড়াই। ১৩৫ বলে করেন ৫২ রান। তখনই বাংলাদেশের ম্যাচ বাঁচানোর আশায় বড় ধাক্কা লাগে।
লিটনের আউটের পর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাকিবও। শুরু থেকেই আগ্রাসী ঢঙ্গে ব্যাট চালিয়ে মাঠে তখন সেট অলরাউন্ডার। কিন্তু আসিথার ফাঁদে পা দেন তিনি। মাঠে নামার পর থেকেই পরিকল্পনা করে করে তাকে শর্ট বল করে যাচ্ছিল লঙ্কান পেসাররা। কয়েকবার পুল করে সফল হলেও এবার পারেননি। টাইমিংয়ে কিছুটা হেরফের করে ফেলায় গ্লাভসে লেগে বল চলে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে। ৭২ বলে ৫৮ রান করেন এ অলরাউন্ডার।
দুই সেট ব্যাটারকে হারিয়ে বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিল শেষ স্বীকৃত ব্যাটার মোসাদ্দেক হোসেনের দিকে। কিন্তু হতাশ করেন প্রায় পৌনে তিন বছর পর সুযোগ পাওয়া এ ক্রিকেটার। অফস্পিনার নাঈম হাসানের বদলে সুযোগ পেলেও তার মূল দায়িত্ব ছিল ব্যাটিংয়ে। কিন্তু ব্যক্তিগত ৯ রানে রমেশ মেন্ডিসের বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি। রিভিউ নিয়েছিলেন। তবে লাভ হয়নি। বাংলাদেশ পড়ে যায় বড় শঙ্কায়।
খানিকপর তাইজুল ইসলামকে ফিরিয়ে পঞ্চম উইকেট শিকার ধরেন আসিতা। পরে খালেদ আহমদকে বিদায় করে ইনিংস মুড়ে দেন তিনি। ৫১ রানে ৬ উইকেট নেন আসিতা। ফলে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পান ফাইফার। এমনকি প্রথম ১০ উইকেটও। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচসেরাও তিনি।
Comments