চট্টগ্রাম টেস্ট শুরু হলেই দুঃসময় সরিয়ে রাখবে শ্রীলঙ্কার মানুষ!
অর্থনৈতিক সংকটে জেরবার শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভীষণ উত্তপ্ত। বিক্ষোভের মুখে সরে যেতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেকে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে। চলমান সংকটের কূল কিনারা তবু মেলেনি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এখন প্রতিদিনই নেতিবাচক খবরে শিরোনামে দ্বীপদেশটি। বাংলাদেশে টেস্ট খেলতে আসা শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে এই পরিস্থিতিতেও খুঁজছেন আশার আলো। তারমতে, ক্রিকেটপ্রিয় জাতি খেলা শুরু হলেই সব নজর নিয়ে আসবে টিভি পর্দায়। সাময়িকভাবে হলেও সরিয়ে রাখবে নিজেদের দুঃসময়।
গত বেশ কয়েকমাস ধরেই সংকট ঘনীভূত হয় শ্রীলঙ্কায়। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে তৈরি হয় অচলাবস্থা। রাস্তায় নেমে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করে সাধারণ মানুষ। সেই বিক্ষোভের তোড়েই পদ ছাড়তে বাধ্য হন রাজাপাকসে। সরকারের নীতির সমালোচনা আসে কুমার সাঙ্গাকারা, মহেলা জয়াবর্ধন, অর্জুনা রানাতুঙ্গার মতো সাবেক তারকাদের কাছ থেকেও।
শ্রীলঙ্কা দল যেদিন বাংলাদেশে পা রাখে, তার আগের রাতেই সেদেশে জারি হয় জরুরি অবস্থা। লঙ্কান ক্রিকেটাররা বাংলাদেশে বসেই শুনেন প্রধানমন্ত্রীর বিদায়ের খবর।
শুক্রবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুশীলন সেরে গণমাধ্যমের সামনে হাজির হন করুনারত্নে। স্বাভাবিকভাবেই লঙ্কান অধিনায়ককে খেলার বাইরের এই পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলতে হয়। এতে অবশ্য বেশ আশাবাদী শুনালো করুনারত্নের কণ্ঠ। চট্টগ্রামের সমুদ্র পাড় থেকে দেশের মানুষকে তারা দিয়ে চান স্বস্তির সুবাতাস, 'ক্রিকেট শ্রীলঙ্কায় এক নম্বর খেলা। সবাই এখানে আমাদের সিরিজ জেতার দিকে তাকিয়ে আছে। দেশে যতরকম সমস্যাই হোক, যদি ক্রিকেট খেলা চলে সবাই ক্রিকেটের দিকে মনোযোগ দিয়ে দেয়। ব্যক্তিগতভাবে আমরা সবাই জানি দেশে কি হচ্ছে, আমরা সিরিজ জিতে মানুষকে কিছু আনন্দ দিতে চাই।'
'আমরা এখানে ক্রিকেট খেলতে এসেছি। আমাদের পুরো মনোযোগ খেলাতে আছে। আমরা এই সময়ে ভালো ফল দেশবাসীকে দিতে চাই। এটা নিয়েই ভাবছি।'
১৫ মে শুরু হবে চট্টগ্রাম টেস্ট। টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কাই পরিস্কার ফেভারিট। মুমিনুল হকদের বিপক্ষে সিরিজ জয় তাই স্বাভাবিক প্রত্যাশা করুনারত্নেদের। এই সিরিজ জেতার সঙ্গে তাদের দেশের পরিস্থিতি বদলানোরও সেভাবে সম্পর্ক নেই। কিন্তু সংকটকালে থাকা মানুষকে সাময়িক একটু আনন্দে দিতে যেন বদ্ধ পরিকর লঙ্কান ক্রিকেটাররা।
Comments