হুট করে এসে টেস্ট খেলা কঠিন, সাকিব প্রসঙ্গে ডমিঙ্গো
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় প্রথম টেস্ট থেকে ছিটকে পড়েছিলেন সাকিব আল হাসান। ছিটকে যাওয়া সেই খেলোয়াড়ই তিনদিনের মাথায় করোনামুক্ত হয়ে যোগ দিচ্ছেন প্রথম টেস্টের দলে। এখন তার খেলা-না খেলা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
গত মঙ্গলবার (১০ মে) রাতে বিসিবি বিবৃতি দিয়ে জানায়, কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ায় প্রথম টেস্টে নেই সাকিব। পাঁচ দিন আইসোলেশনে থাকার পর আবার কোভিড পরীক্ষায় যাওয়ার কথা ছিল তার।
কিন্তু দুদিন পরই সুস্থ অনুভব করার পরীক্ষা করান সাকিব। তাতে ফল নেগেটিভ এলে আরও দুই দফা পরীক্ষা করা হয়। শুক্রবার সকালে তৃতীয় পরীক্ষার ফলও আসে নেগটিভ। এদিন বিকেলেই দলে যোগ দিচ্ছেন তিনি।
সাকিবের করোনামুক্ত হওয়ার পর বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে সভা করে টিম ম্যানেজমেন্ট। সেই সভা সেরে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে ডমিঙ্গো কোন আশার খবর দিতে পারেননি।
করোনামুক্ত হলেও সাকিবের খেলাটা যে নির্ভর করছে ফিটনেসের উপর, তার জোর দিয়ে মনে করিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের কোচ, 'নিশ্চিতভাবেই তার ফিটনেস পরীক্ষা করতে হবে। কোভিড থেকে সেরে উঠেছে মাত্র এবং খুব বেশি ক্রিকেট কিন্তু খেলেনি। ও অবশ্যই আমাদের জন্য বড় খেলোয়াড় যে দলের ভারসাম্য নিয়ে আসে। তাকে আগামীকাল আমরা দেখব। দুই তিন-সপ্তাহেরও বেশি সময় হয়ে গেছে ও ব্যাটিং বা বোলিং কিছু করেনি।হুট করে এসে পাঁচদিনের টেস্ট ম্যাচ খেলা কঠিন এবং পারিপার্শ্বিক অনেক কিছু চিন্তা করতে হবে। আমরা তাকে আগামীকাল পরীক্ষা করে দেখব।'
ফিটনেস পরীক্ষায় ৬০-৭০ শতাংশ ফিট হলেও সাকিবকে খেলানোর পক্ষে না ডমিঙ্গো, 'এটা খুব ট্রিকি। টেস্ট ক্রিকেট কঠিন। খেলা এবং অনুশীলনের মধ্যে না থেকে হুট করে এসে খেলা আরো কঠিন। এর ওপরে কোভিড থেকে সেরে উঠেছে। আমারও কোভিড হয়েছিল। আমি জানি কতটা খারাপ অভিজ্ঞতা হয় এবং শরীরে শক্তি পাওয়া যায় না। এটা টি-টোয়েন্টি বা ওয়ানডে ম্যাচ নয়। এখানে প্রায় ৬ ঘণ্টা মাঠে থাকতে হয়। অনেকটা সময় পুরো পাঁচদিনই। এসব বিষয় অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। অবশ্যই আমরা তাকে পেতে চাই। সর্বকালের অন্যতম সেরা একজন ক্রিকেটার সে। কিন্তু আমাদের নিশ্চিত করতে হবে সে যেন তার পারফর্ম করার সকল সুযোগ পায়। আমাদের দেওয়া ভূমিকায় সে যেন পারফর্ম করতে পারে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।'
'একদিনে তাকে অন্তত ১৫ ওভার বোলিং করতে হবে। ব্যাটিংয়ে টপ সিক্স বা সেভেনে ব্যাটিং করতে হবে এবং তিন বার চার ঘণ্টা ব্যাটিং করতে হবে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোভিড থেকে সেরে উঠার পর শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া কঠিন। আমাদের এসব বিবেচনায় আনতে হবে।'
'যেকোনো দিনেই যে কেউ ফুল ফিট সাকিবকে তার দলে পেতে চাইবে। ৫০ বা ৬০ ভাগ ফিট একজন খেলোয়াড়কে টেস্ট ম্যাচ খেলানো কঠিন। পারফর্ম করার সুযোগ দেওয়ার জন্য একজন খেলোয়াড়কে পুরোপুরি ফিট হতে হবে।'
সাকিবের খেলা, না খেলার ব্যাপার নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছেন না বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন, 'কাল রাতে ও আমাকে জানিয়েছে ও নেগেটিভ। এন্টিজেট টেস্ট করে নেগেটিভ আসার পর পিসিআর টেস্ট করতে দিয়েছিল, অনেক রাতে সেটাও নেগেটিভ আসে। তখন আমরা বললাম আমাদের আবার করতে হবে আলাদা। ও তো করেছে বেসরকারি একটা জায়গায়। আমাদের বিসিবি থেকে যেসব জায়গায় করি (কোভিড পরীক্ষা) আমাদের আলাদা করতে হবে। আজ আবার এখানে আসার পরে শুনলাম নেগেটিভ।'
'ওর সঙ্গে কথা হয়েছে যে নেগেটিভ হলে সে এখানে আসবে। এখানে ব্যাপারটা হচ্ছে ও কিন্তু অনুশীলনে নাই, খেলার মধ্যে নাই। সেইসঙ্গে ওর শারীরিক অবস্থা, দুই-তিনদিন আগে বলছিল ও সুস্থ বোধ করছে। কিন্তু পুরোটাই হেলথ রিলেটেড ইস্যু। মেডিকেল দলের যারা আছে, ফিটনেস ট্রেনার যারা আছে তারা বিচার করবে। এবং শুধু একদিন সে অনুশীলন করার সুযোগ পাবে।'
সীমিত পরিসরের ক্রিকেট হলে এই অবস্থায় সাকিবকে খেলতে বলতেন বোর্ড সভাপতি। কিন্তু টেস্ট হওয়াতেই তার উপর বাড়তি বোঝা চাপাতে চান না তিনি। তবে সাকিব নিজে যদি চান তাহলে খেলার পক্ষেই সায় দেবে বোর্ড, 'ওর উপর ফ্রিডম দেয়া আছে। ও যদি খেলতে চায় ডেফিনেটলি ও খেলবে। ওকে তো না করার তো কোন সুযোগ নেই।'
'অনুশীলন করুক, অনুশীলন করে যদি মনে করে খেলতে পারবে। ফিটনেস ট্রেনার যদি ছাড়পত্র দেয় তাহলে খেলবে।'
Comments