বাংলাদেশ দলের চাঙ্গা হওয়ার দিনে উড়ো মেঘের আনাগোনা
জৈব সুরক্ষা বলয়ের কড়াকড়ি না থাকায় এখন ক্রিকেটারদের সিরিজ চলাকালীন থাকতে হয় না বন্দি। ফাঁকা সময়টা যে যার মতন করে ঘুরে বেড়াতে পারেন। ছুটির দিন পেয়ে ইয়াসির আলি রাব্বি যেমন ছুটে গিয়েছিলেন নিজের বাসায়।
দুপুরে ব্যাট নিয়ে হোটেলে প্রবেশের সময় ইয়াসির জানান এই পরিস্থিতির স্বস্তি , 'বাবল না থাকায় কি আনন্দ, না ভাই?'
চট্টগ্রামে এসে টানা দুদিন কঠোর অনুশীলনের পর বুধবার দিনটি সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিয়েছিল বাংলাদেশ দল। এমনিতে বিশ্রামের দিনগুলোতেও বিকল্প ব্যবস্থায় কেউ কেউ অনুশীলন করে থাকেন। এদিন তাও ছিল না। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পুরস্কার আনতে সকালের ফ্লাইটে উড়ে যান ঢাকা। রাতের ফ্লাইটেই আবার ফেরার কথা তার।
ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স, পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড গিয়েছিলেন ভাটিয়ারি গলফ কোর্স এলাকায়। পতেঙ্গার এক রেস্তোরায় লাঞ্চ করার কথা ছিল কয়েকজন ক্রিকেটারেরও। পরে সেই পরিকল্পনা বাতিল হয়ে যায়। দুপুরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে লবিতে আসেন তরুণ পেসার রেজাউর রহমান রাজা। বাকিরা সময় পার করেছেন নিজেদের কক্ষে।
দিনভরই চট্টগ্রামের আকাশ ছিল মেঘলা, এক পশলা বৃষ্টিও দেখা গেছে বিকেলের দিকে। আয়েশি আবহের দিনে বাংলাদেশ দলের ছুটি হয়েছে একদম মাননসই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে নামার আগে আর বিশ্রামের ফুরসত নেই, একটা দিনের পুরোপুরি বিরতিতে তাই চাঙ্গা হওয়ার খোঁজ।
তবে এমন দিনেও টেস্ট সিরিজ নিয়ে চিন্তা আড়াল হয়নি। এক ক্রিকেটার যেমন জানিয়েছেন, শেষ সময়ে সাকিব আল হাসানের ছিটকে যাওয়া আগের রাত থেকে ছিল দলের আলোচনায়। লঙ্কানরা এমনিতেই বাংলাদেশের জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ, তারমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় সব শেষ সিরিজের ভরাডুবি মিলিয়ে দল আছে চাপে। সাকিব থাকলে চাপের ভারটা কমত। গণমাধ্যমে কথা বলতে আসা রাজার কন্ঠেও সেই সুর, 'আসলে সাকিব ভাই থাকলে বাড়তি একটা সুবিধা। ব্যাটিং বোলিং দুইটাই। উনি বিশ্বমানের খেলোয়াড়। বাড়তি একটা শক্তি থাকত আরকি। এটা আমাদের হাতে নাই। বাকিরা অবশ্যই সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবে।'
বুধবার নিজেদের ইচ্ছায় বিরতি নিলেও বিশ্রামের সময়টা অনিচ্ছাকৃত কারণে বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা তাছে। ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে বৃহস্পতি ও শুক্রবার প্রবল বৃষ্টিপাত হতে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, বৃহস্পতিবার ৬০ ও শুক্রবার ৮০ শতাংশ বৃষ্টির শঙ্কা আছে চট্টগ্রামে।
বৃষ্টির হলে সাধারণত ইনডোরে অনুশীলন সেরে নেওয়া হয়। কিন্তু চট্টগ্রামের ইনডোর প্রস্তুত না থাকায় হোটেলে জিম করা ছাড়া আর কোন কিছুই করার থাকবে না।
জাইকার অধীনে দেড় বছর আগে কাজ শুরু হলেও চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ইনডোরের কাজ এখনো শেষ হয়নি। সোমবার প্রথম দিনেই বৃষ্টি বাগড়ায় অনেক অপেক্ষার পর অনুশীলনে নামতে পেরেছিল দল।
আগামী দুদিন বৃষ্টি বিড়ম্বনার সম্ভাবনা থাকলেও টেস্টের সময়টা দিচ্ছে আশার খবর। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কিছুটা কম দেখছেন তারা, '১৫ তারিখের বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে, তবে তা প্রবল নয়। ১৪ ও ১৫ তারিখে থেমে থেমে বৃষ্টি হবে তা ১৬ তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। মূলত বৃষ্টির হতে পারে দেশের উত্তরাঞ্চলে। চট্টগ্রামে ওই সময়টায় বৃষ্টির সম্ভাবনা কম।'
Comments