‘না খেয়ে মরলেও যারা আগুন দিয়েছে তাদের হাতে ত্রাণ নেব না’

লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের লোক থাকায় প্রশাসনের ত্রাণ ফিরিয়ে দিলেন ম্রো-ত্রিপুরারা। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

যাদের বিরুদ্ধে জুমের বাগান পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ, তাদের উপস্থিতিতে ত্রাণ বিতরণ করায় সেই ত্রাণ ফিরিয়ে দিলেন আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বান্দরবানের ম্রো এবং ত্রিপুরা পাড়াবাসী।

এ বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোস্তফা জাবেদ কায়সার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বান্দরবান জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আজ রোববার সকালে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পাড়ায় ত্রাণ নিয়ে গেলে পাড়ার বাসিন্দারা সেখানে রাবার কোম্পানির কর্মীদের উপস্থিতির অভিযোগে আমাদের সহযোগিতা গ্রহণ না করে সেই ত্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছেন।'

'আমরা তাদের জন্য চাল, মসুরের ডাল, মুড়ি, চিড়া, লবণ এবং পানি নিয়ে গিয়েছিলাম', বলেন তিনি।

রেং ইয়ান পাড়ার কারবারি রেংয়ান ম্রো ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ মুহূর্তে পাড়াবাসীর ত্রাণের খুব দরকার। কিন্তু আমরা ত্রাণ নিতে গিয়ে দেখি যারা আমাদের জুমের বাগান পুড়িয়ে দিয়েছেন, সেই লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কর্মীরা প্রশাসনের সদস্যদের সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন।'

'আমরা প্রয়োজনে না খেয়ে মরব। তবুও যারা আমাদের বাগান পুড়িয়ে দিয়েছে, আমাদের সর্বস্বান্ত করেছে, তাদের হাত থেকে ত্রাণ নেব না। তাই আমরা প্রশাসনের ত্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছি', যোগ করেন রেংয়ান।

লাংকম পাড়ার কারবারি লাংকম ম্রো ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কয়েকটি ত্রিপুরা পরিবার প্রথমে ত্রাণ নিলেও সেই ত্রাণ পরে আমরা ফিরিয়ে দিয়েছি।'

'প্রশাসন যদি সত্যিই আমাদের সহযোগিতা করতে চাইতো, আমাদের পাশে থাকতো, তাহলে ত্রাণ দেওয়ার নাম করে রাবার কোম্পানির কর্মীদের সঙ্গে করে নিয়ে আসতো না', বলেন তিনি।

এই কারবারি বলেন, 'লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের লোকজন পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে আমাদের জুমের বাগান পুড়িয়ে দিয়েছে। এই আগুনে প্রায় একশ একর জুমের ধান, আম, কলা, আনারসসহ বিভিন্ন ফলদ ও বনজ গাছ পুড়ে গেছে। এ ছাড়া, আগুনে ঝিরি এবং এখানকার জীববৈচিত্রও মারাত্মকভাবে ধ্বংসের সম্মুখীন হয়েছে।'

অধিকাংশ পাড়াবাসী খাবার এবং তীব্র পানির সংকটে আছেন বলেও জানান লাংকম।

এ বিষয়ে গত ৩ মে 'পাহাড়ি লতাপাতা খেয়েই দিন পার করছেন তারা' শিরোনামে ডেইলি স্টারে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Beximco workers' protest turns violent in Gazipur

Demonstrators set fire to Grameen Fabrics factory, vehicles, vandalise property

13m ago