‘তেঁতুলতলা মাঠে কাজ শুরু হওয়ায় বাচ্চাটিকে ঘরবন্দী রাখতে হচ্ছে’

ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

'আমার বাসার সহকারী তার বাচ্চাটিকে তেঁতুলতলা খেলার মাঠে রেখে বিভিন্ন বাসায় কাজ করে বেড়াতেন। কিন্তু মাঠটিতে নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর থেকে তার বাচ্চাটিকে ঘরবন্দী করে রাখতে হচ্ছে' দ্য ডেইলি স্টারকে কথাগুলো বলেন, ওই এলাকার বাসিন্দা জিনাত রেহানা লুনা।

ওই মাঠ নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '২ বছর আগে করোনায় আমার স্বামী মারা গেছেন। এই মাঠে ফ্রিজিং ভ্যানে তার মরদেহ রেখে জানাজা করা হয়। আমি প্রতিদিন অফিসে যাওয়া-আসার সময় মাঠটির দিতে তাকাই। আমি যেন আমার স্বামীকে রাখা ফ্রিজিং ভ্যানটি দেখতে পাই।'

তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষার দাবিতে সমাবেশ। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

'এই এলাকার কেউ মারা গেলে এখানে জানাজা হয়। ২ ঈদে এখানা নামাজ পড়া হয়। আমার সন্তান এখানে খেলাধুলা করে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এই এলাকায় খেলাধুলার জন্য আর তেমন কোনো মাঠ নেই। আমাদের সন্তানরা যাবে কোথায়, খেলবে কোথায়? শিশুদের বিকাশের জন্য এই মাঠটি খুব বেশি প্রয়োজন', বলেন লুনা।

আজ সোমবার বিকেল ৪টার দিকে তেঁতুলতলা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণ কাজ চলছে। অন্যদিকে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী ও এলাকাবাসী মাঠ রক্ষায় আন্দোলন করছেন। তাদের পেছনে পুলিশ বসে আছেন।

তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষার দাবি। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

বিকেল ৩টার দিকে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা প্রথমে মাঠের পাশে রাস্তায় মানববন্ধনে দাঁড়ান। পরে সেখানে জায়গা না হলে তারা মাঠে গিয়ে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন। তাদের দাবি একটাই আর তা হলো কোনোভাবেই এই মাঠ দখল হতে দেওয়া যাবে না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবীর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কংক্রিটের এই শহর শিশুদের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছে। শিশুদের বিকাশের জন্য এই মাঠটি কোনোভাবেই দখল হতে দেওয়া যাবে না।'

তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষার দাবিতে সমাবেশ। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

নিজেরা করির সমন্বয়ক ও অধিকারকর্মী খুশি কবির দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কোনো অবস্থাতে এই মাঠে দখল হতে দেওয়া যাবে না। তেঁতুলতলা মাঠে চলমান নির্মাণ কাজ অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।'

এ সময় মাঠ রক্ষাকর্মী রত্না ও তার ছেলেকে আটক করার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Those speaking against Tarique Rahman are enemies of democracy: Fakhrul

"Those who are doing this are carrying out activities to destroy Bangladesh"

1h ago