তেঁতুলতলা মাঠে নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবি নাগরিক প্ল্যাটফর্মের
তেঁতুলতলা মাঠে চলমান নির্মাণ কাজ অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানিয়েছে দেশের নাগরিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর প্লাটফর্ম। সেই সঙ্গে সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করে সৈয়দা রত্না ও তার সন্তানকে হেফাজতে নেওয়া পুলিশ কর্মকর্তাকে বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানিয়েছে তারা।
আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব দাবি জানান।
গতকাল রাজধানীর কলাবাগান এলাকার তেঁতুলতলা খেলার মাঠে অনেক বেশি পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি দেখে সৈয়দা রত্না লাইভে গেলে পুলিশ তাকে আটক করে। মাঠটিতে থানা নির্মাণে কাজ চলছে। মাকে দেখতে গেলে সৈয়দা রত্নার ছেলেকেও আটক করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করার সময় স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, 'সৈয়দা রত্না ও তার অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেকে দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টা পুলিশি হেফাজতে আটকে রাখা বিদ্যমান আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা এর ব্যাখ্যা চাই, কেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সারাদিন থানায় ছিলেন না। এই ২ জনকে কেন আটক করা হলো তার জবাব পুলিশের কেউই কেন দিতে পারেনি।'
সংগঠনগুলো রত্নাকে জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার নিন্দা জানায় এবং এ কাজের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।
তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'আমরা অবিলম্বে এই নির্মাণ কাজ বন্ধ করার দাবি জানাই। ওই মাঠটি স্থানীয়দের জন্যই রাখতে হবে। এখানে সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, বয়স্ক মানুষ সন্ধ্যায় এখানে হাঁটাহাঁটি করেন, শিশুরা এখানে খেলাধুলা করে।'
থানার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'থানায় ঢোকার মুহূর্তে কলাবাগান থানার গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সারাদিন ফোন রিসিভ করেননি। রত্না ও তার ছেলেকে আটক করার বিষয়ে কারও কাছে স্পষ্ট জবাব ছিল না।'
তিনি আরও বলেন, 'এটাই যদি পরিস্থিতি হয় তাহলে আমরা কোথায় যাব? তারা কি থানায় মানুষের প্রবেশ সীমিত করতে পারে? সাধারণ মানুষকে তাদের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে। মানুষকে তুলে নেওয়া, পকেটে ইয়াবা রেখে দিয়ে আটক করা, মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করা দেশে রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এই ধরনের অভ্যাসের প্রতিবাদ জানাই।'
তিনি জানান, এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন এবং আশা প্রকাশ করেন, থানা অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা হবে।
সৈয়দা রত্না ও তার ছেলেকে তুলে নেওয়ার ঘটনাকে পরিকল্পিত উল্লেখ করে রিজওয়ানা বলেন, 'অন্যদের ভয় দেখানোর জন্য এটা করা হয়েছে, যাতে তারা খেলার মাঠ দখলের বিরুদ্ধে আওয়াজ না তোলে।'
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নিজেরা করি'র খুশি কবির, শিল্পী মোবাশ্বের হোসেন, উদীচী শিল্প গোষ্ঠীর গীতি ইমাম, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আহমেদ কারুজ্জামান মুজমদাসহ অনেকে।
Comments