স্পিন সামলাতে না পারায় দুঃখে পুড়ছেন খালেদ মাহমুদ
উপমহাদেশীয় দল হিসেবে 'স্পিনে ভালো' এমন একটা তকমা লেগে আছে বাংলাদেশ দলেও। কিন্তু সেই অহংয়ে লেগেছে বড়সড়ো চোট। দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে গিয়ে ওদের স্পিনে বিস্তর ভোগান্তিতে পড়েছেন মুমিনুক হকরা। কেশব মহারাজ, সাইমন হার্মারদের বিপক্ষে দলের এমন বেহাল দশা মেনে নিতে পারছেন না টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন।
ডারবানে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের ২০ উইকেটের ১৪টিই নিয়েছিলেন প্রোটিয়া দুই স্পিনার। দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুলদের স্রেফ ৫৩ রানে গুটিয়ে দিতে সবগুলো উইকেটই নেন স্পিনাররা। পোর্ট এলিজাবেথেও ডারবানের পুনরাবৃত্তির আভাস।
এবার প্রথম ইনিংসে স্পিনারের বিপক্ষে পড়েছে ৫ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে এখন পর্যন্ত ৩ উইকেটের সবগুলোই পড়েছে স্পিনে। ৪১৩ রানের পাহাড় ডিঙানোর চ্যালেঞ্জে নেমে মহারাজ তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে কেড়ে নেন মাহমুদুল হাসান জয় ও নাজমুল হোসেন শান্তকে। তামিম ইকবালকে ছাঁটেন হার্মার।
দিনের খেলা শেষে গণমাধ্যমে কথা বলতে এসে নিজের হতাশা জানান দিলেন জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর। তার মতে ব্যাটিংয়ে ভোগান্তির পাশাপাশি বাংলাদেশের স্পিনাররাও প্রোটিয়া স্পিনারদের মানের কাছাকাছি বল করতে পারেননি, 'এখানে এসে আমরা স্পিন সামলাতে পারলাম না, এটাই আমার বেশি দুঃখ। আমরা মনে করি, স্পিনে আমরা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলি। আমাদের স্পিনাররা যে ওদের ব্যাটসম্যানদের অনেক ভুগিয়েছে, তাও না। হ্যাঁ, তাইজুল (ইসলাম) ৫ উইকেট নিয়েছে, (মেহেদী হাসান) মিরাজ ভালো বোলিং করেছে। মহারাজ কিংবা হার্মার যতটা ভোগাল আমাদের ব্যাটসম্যানদের, আমাদের স্পিনাররা কিন্তু ওদের ব্যাটসম্যানদের ততটা ভোগাতে পারেনি।'
গত কয়েক মাস ধরে পেসারদের পারফরম্যান্সের গ্রাফ উন্নতির দিকে। তবে এই সিরিজে তাদের থেকেও সেরাটা না পাওয়ার হতাশা মাহমুদের, 'ওদের পেসারদের কথা যদি বলি, ওরা একটা লাইন ও লেংথে সুশৃঙ্খল ছিল। আমাদেরও পরিকল্পনা ছিল কিন্তু বাস্তবায়নে যথেষ্ট ঘাটতি ছিল। আমাদের পেসাররা যেটা হয়েছে, এই টেস্টেও আগের টেস্টেও, প্রথম দুই ঘণ্টায় যেভাবে বোলিং করার কথা ওরা সেভাবে করতে পারেনি। সেখানেই ম্যাচ অনেক দূরে সরে গেছে। যদি নতুন বলে আমরা দুইটা উইকেট নিতে পারতাম, তাহলে খেলাটা ভিন্নরকম হতে পারতে। ছোট ছোট এই ভুলগুলো দুই টেস্টে আমাদের ভুগিয়েছে।'
দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৫৩ রান করার পর ২১৭ রানে গুটিয়ে ফলোঅনে পড়ে বাংলাদেশ। প্রোটিয়ারা ফলোঅন না করিয়ে নিজেরাই ব্যাটরে ৬ উইকেটে ১৭৬ রান তুলে ইনিংস ছেড়ে দেয়। ৪১৩ রানের লক্ষ্যে নেমে ২৭ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে মুমিনুলের দল। এই ম্যাচে যে আর তেমন কিছু পাওয়ার নেই বুঝে গেছেন মাহমুদ, 'তৃতীয় দিন শেষে আমরা যে অবস্থায় আছি, সেটা অবশ্যই ভালো না। গত তিনটা দিনে দক্ষিণ আফ্রিকা আসলে আমাদের 'আউট প্লেইড'ই করেছে। আমার মনে হয় না, আমরা খুব একটা ভালো বলও করেছি। আমাদের ব্যাটিংয়ে কথা যদি বলি, প্রথম ইনিংসে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এই ইনিংসেও আমরা ব্যর্থ হলাম। মাত্র ৭/৮ ওভারে (আসলে ৯.১ ওভারে) তিন উইকেট পড়ে গেছে।'
Comments