ইলন মাস্ক এখন টুইটারের সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার
প্রখ্যাত উদ্যোক্তা ও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক এখন এককভাবে টুইটারের সবচেয়ে বেশি শেয়ারের মালিক।
রয়টার্স জানায়, ইলন মাস্কের হাতে এ মুহূর্তে টুইটারের ৯ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। এ সংবাদ প্রচারের পর প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের মূল্য ২৭ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে।
গত ২৬ মার্চ ইলন মাস্ক এক টুইটবার্তায় জানান, তিনি নতুন একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তৈরির বিষয়টি 'গুরুত্ব সহকারে ভাবছেন'। ইলন মাস্ক টুইটারের সমালোচনা করে বলেন, 'এই প্ল্যাটফর্ম বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারে না।'
তিনি টুইটারকে 'ডি ফ্যাক্টো পাবলিক টাউন স্কয়ার' বলে অভিহিত করেন এবং জানান, প্ল্যাটফর্মটি বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে, যা গণতন্ত্রের মৌলিক অবমাননা ঘটাচ্ছে।
ইতোমধ্যে নতুন এক টুইটবার্তায় তিনি এই প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারকারীদের 'তারা এডিট বাটন' চান কী না, সে বিষয়ের ওপর ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইলন মাস্কের এই টুইটের পর প্রতিষ্ঠানটির সিইও পরাগ আগারওয়াল ব্যবহারকারীদের অনুরোধ করে জানান, 'সতর্কতার সঙ্গে ভোট দিন।'
বহুল প্রতীক্ষিত এই ফিচারের জন্য ইতোমধ্যে ৭৪ দশমিক ৪ শতাংশ ভোটার 'হ্যাঁ' ভোট দিয়েছেন। ভোটে অংশ নিয়েছেন ১৭ লাখেরও বেশি টুইটার ব্যবহারকারী। আরও প্রায় ১৯ ঘণ্টার মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকছে।
ফেসবুকে কোনো বার্তা লিখে পোস্ট করে এডিট করা গেলেও, এখন পর্যন্ত টুইটার বার্তা পোস্ট করার পর এডিট করার কোনো সুযোগ নেই।
গত সপ্তাহে আরও একটি ভোটে ইলন মাস্ক জানতে চান, টুইটারের অ্যালগরিদম ওপেন সোর্স রাখা উচিৎ কী না। সে ভোটে 'হ্যাঁ' এর পক্ষে ৮২ শতাংশ ভোট পড়ে।
ইলন মাস্ক টুইটারের একজন নিয়মিত ব্যবহারকারী। এ প্ল্যাটফর্মে ৮ কোটিরও বেশি ফলোয়ার আছে তার। তিনি এই সাইটে ২০০৯ সালে যোগ দেন এবং বিভিন্ন ধরনের ঘোষণা দেওয়ার জন্য একে ব্যবহার করে থাকেন। এক টুইটাবার্তার মাধ্যমে টেসলাকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি করার সম্ভাবনার কথা ঘোষণা করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিলেন ইলন মাস্ক।
তবে সাম্প্রতিককালে তিনি টুইটারের সমালোচনা অব্যাহত রেখেছেন।
ডিসেম্বরে তিনি প্রতিষ্ঠানের সিইও আগারওয়ালকে সোভিয়েত একনায়ক জোসেফ স্টালিনের সঙ্গে তুলনা করে একটি মিম পোস্ট করেন।
টুইটারের শেষ প্রান্তিকের আর্থিক ফলাফল আশানুরূপ হয়নি। সামনে অডিও চ্যাট রুম ও নিউজলেটারের মত কিছু ফিচার নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা ও গ্রাহক প্রবৃদ্ধি নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন বিশ্লেষকরা।
গত সোমবার নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইলন মাস্ক টুইটারের ৭ কোটি ৩৫ লাখ শেয়ারের মালিক। ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ শেয়ার নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ভ্যানগার্ড নামের একটি বিনিয়োগ সংস্থা।
গতকাল টুইটারের শেয়ারের দাম ২৭ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৪৯ দশমিক ৯৭ ডলারে পৌঁছেছে। গত ১২ মাসে টুইটারের শেয়ারের দাম ৩৮ শতাংশ কমেছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএফআরএ রিসার্চের বিশ্লেষক অ্যাঞ্জেলো জাইনো জানান, টুইটারে ইলন মাস্কের বিনিয়োগ তার মোট সম্পদের খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ। তিনি চাইলে টুইটারকে কিনেও নিতে পারেন।
'এ সম্ভাবনা আমরা উড়িয়ে দিতে পারি না', যোগ করেন তিনি।
টুইটারে ইলন মাস্কের আধিপত্য বাড়লে সেটি প্রতিষ্ঠান ও এর অংশীদারদের জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
Comments