‘বাণিজ্যমন্ত্রীর কাজ না প্রতিদিন বাজারে এসে দেখে বেড়ানো’

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ফাইল ফটো

বাজার নিয়ন্ত্রণে করপোরেট ম্যানেজমেন্ট থাকা দরকার উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাণিজ্যমন্ত্রীর কাজ না প্রতিদিন বাজারে এসে দেখে বেড়ানো। আমি যদি প্রতিদিন ৩ ঘণ্টা বাজারে ব্যয় করি, তাহলে রপ্তানির যে ৫০ বিলিয়ন টার্গেট করলাম সেটা আমি কীভাবে কন্ট্রোল করবো!

আজ রোববার দুপুরে কারওয়ান বাজার পরিদর্শন থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভোক্তা অধিকারকে নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে। আমি এসেছি জন্য দাম কম বলার চেষ্টা করছে কি না সেটা দেখতে বলেছি। গতকাল মিডিয়ায় বলা হয়েছে, অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম কিছুটা কমলে ফলের দাম বেশি। সারা দুনিয়াজুড়ে উৎসবের সময় ব্যবসায়ীরা মানুষকে ছাড় দেয়। ক্রিসমাসের সময় আমেরিকাতে ২০ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি হয়। ভারতে দুর্গাপূজার সময় কমায়। আমাদের রমজান মাস, যেখানে মানুষ সংযমী হবে সেখানে যদি আমরা সুযোগ নিই, তাহলে আল্লাহ তো আমাদের মাফ করবেন না। ন্যায্য মূল্য রাখা দরকার। আমরা চলে গেলে বাড়িয়ে দেবেন সেটা ঠিক না।

ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকটা দোকানে দামের লিস্ট থাকতে হবে। অধিকাংশ দোকানে দেখেছি কিন্তু কিছু কিছু দোকানে দেখলাম না। আমার নির্দেশ রইলো, দোকানে যদি দামের লিস্ট না থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল এফবিসিসিআইতে ব্যবসায়ী সব নেতারা কথা দিয়ে গেছেন জিনিসপত্রের দাম বাড়বে না। তারা ৪৬ জনের কমিটি করেছেন, ৪৬টি পণ্য তারা নিয়ন্ত্রণ করবেন।

তিনি আরও বলেন, ভ্যাট হার কমিয়ে দেওয়ার পরে প্রায় ৮০-৯০ হাজার টন সয়াবিন তেল এসেছে। চাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত মজুত আছে, কোনো সংকট নেই। কোনো অসাধু ব্যবসায়ী যেন সুযোগ না নেয়। ভোক্তা অধিকারকে নির্দেশ, কোনো ছাড় দেবেন না এই সময় যদি কেউ মানুষকে ঠকায়, বেশি দামে বিক্রি করে।

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জাবাবে টিপু মুনশি বলেন, আমি বাজার করি না এটা ঠিক না। সপ্তাহে না হলেও প্রতি ১৫ দিনে আমি নিজে বাজার করি, তরিতরকারী কিনি। আমরা বাজারে হস্তক্ষেপ করতে চাই না, যদি না কোনো বিশেষ অবস্থার সৃষ্টি হয়। আমাদের কাজ না প্রতিদিন বাজার কন্ট্রোল করা। যেহেতু সমস্যা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ার পরেই কিন্তু বিভিন্ন কথা আসছে। আর সে কথার জন্য আমরা বারবার বসছি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে কন্ট্রোল আছে। আমার সন্দেহ বিভিন্ন খুচরা বাজারে যখন যায়, তখন দূরত্ব বিবেচনায় এই বাজার থেকে নিয়ে উত্তরা বা গাজীপুরে বিক্রি করছে, পরিবহন খরচের পার্থক্য আছে; লাখ লাখ খুচরা বিক্রেতা সেখানে কিছু পার্থক্য থাকতে পারে। পাইকারি বাজারে যেন দামটা ঠিক করা যায়। সেটা হলে আমার ধারণা, হয়তো প্রত্যন্ত অঞ্চলে ১-২ টাকা বাড়তে পারে। সে রকমই লক্ষ করছি।

তিনি বলেন, আমরা টিসিবির ট্রাকে শুধু ঢাকা ও বরিশাল শহরে খাবার দিচ্ছি। ১ কোটি লোকের মধ্যে প্রায় ৮৫ লাখ মানুষকে দিচ্ছি গ্রামে-গঞ্জে। আমি নিজে ঠাকুরগাঁও-রংপুরে শুরু করে দিয়ে এসেছি। আমাদের হিসাব প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ আছে দরিদ্রসীমার নিচে। যদি সর্বোচ্চ জনসংখ্যা ধরি ১৭ কোটি, তাহলে ৩ কোটি ২০ লাখ লোক আছে দরিদ্রসীমার নিচে। আমরা ১ কোটি মানুষকে দিচ্ছি, একেকটি পরিবারে ৫ জন করে যদি ধরি, তাহলে কিন্তু ৫ কোটি মানুষ পাচ্ছে। সম্পূর্ণভাবে এই কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীর। আমাদের ক্ষমতা অনুযায়ী বলেছিলাম ৫০ হাজার মানুষকে দেবো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ক্যানসেন করে দিয়ে বলেছেন, ১ কোটি মানুষকেই দিতে হবে। অর্থাৎ আমরা দরিদ্রসীমার নিচের উপরেও প্রায় ২ কোটি লোককে কাভার করছি। আমাদের এই প্রথম দেওয়া হলো, ১৫ তারিখের দিকে আবার দেওয়া হবে। তারপরও আমরা দেবো। প্রধানমন্ত্রী এই কার্ডগুলো রক্ষা করতে বলেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

UK-based lawyer files complaint against Hasina, her cabinet with ICC

A UK-based lawyer has filed a complaint against former prime minister Sheikh Hasina, her cabinet and associated state actors with the Hague-based International Criminal Court, accusing them crimes against humanity

21m ago