সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলন, প্রভাব ও পরিণতি

শাহবাগ আন্দোলন। স্টার ফাইল ছবি

বেশ কিছু নিজস্ব চরিত্র রয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম-নির্ভর আন্দোলনের। কোনো নির্দিষ্ট ইস্যুতে খুব অল্প সময়ে মানুষ জড়ো করতে পারা সে সব চরিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম।

ইন্টারনেট ব্যবহারে তরুণদের সংখ্যার আধিক্যের কারণে, আন্দোলনের প্রথমদিকে জড়ো হওয়া মানুষদের মধ্যে তরুণদের উপস্থিতি থাকে সিংহভাগ। পরে আন্দোলনের খবর ব্যক্তি, পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ইস্যুর ধরন বুঝে বহু শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ আন্দোলনে শামিল হয়।

আন্দোলনের খবর ছড়াতে ভূমিকা রাখে সিটিজেন জার্নালিজম

সিটিজেন জার্নালিজম এই প্রকারের আন্দোলনের আরেকটি নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। আন্দোলনের স্থানে বা অন্য কোথাও আন্দোলনে জড়িতদের ওপর কোনোপ্রকার বলপ্রয়োগ অথবা নির্যাতন চললে সে খবর খুব দ্রুতই মানুষ জেনে যায় সিটিজেন জার্নালিস্টদের তোলা ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে। 

সচেতনতা এবং আন্দোলন ইস্যুর যৌক্তিকতা তৈরিতেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সফলভাবে ভূমিকা রাখে। 

প্রথাগত আন্দোলনের যে কঠিন ধাপটা পার করতে হয়, সেটা হলো কোনো ইস্যুতে মানুষকে একত্রিত করা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দ্বারা পরিচালিত আন্দোলনে যে পরিমাণ মানুষ অল্প কয়েকদিনে একত্র হয় সে সংখ্যক মানুষ কোন প্লাটফর্মের নিচে নিয়ে আসতে প্রথাগত আন্দোলনের মাধ্যমে মাসের পর মাস, এমনকি বছরও লেগে যায়।

মিশরের তাহরির স্কায়ারের আন্দোলন। ছবি: সংগৃহীত

প্রথাগত আন্দোলনের অসুবিধা আন্দোলনকে দুটি বড় সুবিধা দিয়ে থাকে। এক, লোকজন একত্রিত করতে গিয়ে যে ব্যক্তিক যোগাযোগের প্রয়োজন পড়ে, তাতে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের কাছে নেতৃত্ব পরিষ্কার এবং পরিচিত হয়ে ওঠে। দুই, আন্দোলনের জন্য সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ সৃষ্টি। এই দুই সুবিধা প্রথাগত আন্দোলনকে বিশালভাবে সাহায্য করে, যখন আন্দোলনের প্রতি রাষ্ট্রীয় কিংবা অন্যকোন শক্তির বাধা আসে। বাধার ধরণ দেখে প্রথাগত আন্দোলনের নেতৃত্ব তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্দোলনকে নিরবচ্ছিন্ন রাখতে নতুন নতুন পন্থা গ্রহণ করতে পারে।

অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলনের এই দুই সুবিধা কম থাকায় আন্দোলন প্রাথমিকভাবে অভাবনীয় সাফল্য পাওয়ার পর সময়ের অতিবাহনের সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনের শক্তিতে দুর্বলতা জমতে শুরু করে। দুর্বলতা প্রকট আকারে রুপ নেয় যখন আন্দোলন দমনে নিয়োজিত পক্ষ ক্রমাগত বহুমুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ফলে আন্দোলনে একসময় দেখা দেয় নির্জীবতা। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলনে কয়েকটি পর্যায় থাকে। প্রথমত কোনো ইস্যুতে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তার উপস্থাপন। পরবর্তী ধাপটি থাকে ক্লিক্টিভিজম বা স্ল্যাক্টিভিজমে লোকজনের সংশ্লিষ্টতা। অর্থাৎ উক্ত ইস্যুতে লোকেরা আন্দোলনের পক্ষে আছে এই বিষয়ের জানান ঘটে ক্লিকটিভিজমের মাধ্যমে। হ্যাশট্যাগ-স্ট্যাটাস, টুইট করা এই পর্যায়ের অংশ। এই ধাপে সিটিজেন জার্নালিজমও জড়িয়ে পড়ে প্রবলভাবে। 

তিউনিশিয়ার আন্দোলন

আর্মচেয়ার আন্দোলন শেষে লোকেরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে একত্রিত হওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার ক্রমাগত বৃদ্ধি করা হয়। কোনো কোনো আন্দোলনে এই পর্যায়ে প্রথাগত আন্দোলনের মতো সশরীরি যোগাযোগও দেখা যায়। লিফলেট, পোস্টারের ব্যবহারও দেখা যেতে পারে এই সময়ে। 

নির্দিষ্ট স্থানে একত্রিত হওয়ার ঘটনা দেশসহ আন্তর্জাতিক মহলে কতটা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করবে সেটা নির্ভর করে জড়ো হওয়া আন্দোলনকারীদের সংখ্যার উপর। ২০১১ সালে মিশরের আন্দোলন কিংবা বাংলাদেশের শাহবাগকেন্দ্রিক অথবা পরবর্তী সময়ে কোটা সংস্কার, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন যেমনটা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। 

এই চাঞ্চল্য আন্দোলনকারীদের মাঝেও বিপুল মানসিক শক্তি তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আন্দোলনকারী প্রত্যেকে নিজের চারপাশে অগণিত মানুষ দেখতে পেয়ে এক ধরনের আত্মতৃপ্তির অনুভূতি পেতে শুরু করে। অনুভূতির এমন অনুভব থেকে আন্দোলন ইতোমধ্যে সফল হয়ে গিয়েছে বলে তাদের ভেতর এক ধরনের বিশ্বাস জন্মায়। আন্দোলন যদি কোনোভানে অসফলতার মুখ দেখে তখন এই বিশ্বাসে বিশ্বাসীদের মাঝে আন্দোলন বিষয়টার ব্যাপারেই বীতশ্রদ্ধ হতে পারে।

যত ধরনের সমস্যা

অসংখ্য মানুষকে নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো করার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলন ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে শুরু করে। প্রতিকূলতার শুরুটা হয় আন্দোলনকারীদের করণীয় ভূমিকা নির্ধারণের দ্বিধায় থাকা। সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তাদের জানা না-থাকায় এ-পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকায় নিজেদের সম্পৃক্ত করে। ভূমিকায় আক্রমণাত্মক কার্যক্রমেরও দেখা মেলে। আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দমনশক্তি এসব কার্যক্রমকে পূর্ণাঙ্গভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। 
অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলন সৃষ্টিতে অহিংস প্রতিবাদকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা থাকে আন্দোলনের শুরু থেকে। রাস্তা অবরোধের ঘটনাও ঘটে আন্দোলনের এই পর্যায়ে এসে। অবরোধ বিশাল পরিসরে ঘটলে রাষ্ট্র আন্দোলনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে শুরু করে। অবশ্য রাষ্ট্র নিজের চরিত্র অনুযায়ী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলনকে শুরুর পর্যায় অর্থাৎ ক্লিক্টিভিজমের ধাপ থেকেই নজরে রাখতে পারে। 

রাষ্ট্র চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শক্তির প্রদর্শন করতে পারে এই ধারণা আন্দোলনের সংযুক্তদের বেশ ভালভাবেই জানা থাকে। শক্তির মোকাবিলায় বিভিন্ন নির্যাতন যেমন লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট সহ্য করার মানসিকতা আন্দোলনকারীদের অর্জন করানোর চেষ্টা থাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইস্যুর প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি করার পর্যায়েই। জেল কিংবা মৃত্যুভয়ও আন্দোলনকারীদের জানা থাকে। তরুণরা তারুণ্যনির্ভর শক্তিকে পুঁজি করে এই ভয়স সচরাচর পাশ কাটাতে সক্ষম হয়। 

রাষ্ট্র যখন শক্তিপ্রয়োগ পন্থার পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেয়, তখনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলন সংকটের মুখামুখি হয়ে যায়।
 
রাষ্ট্র মূলত আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়ে থাকে সময়ক্ষেপণের লক্ষ্যে (রাষ্ট্রের যদি অনৈতিক চরিত্র থেকে থাকে)। সময়ক্ষেপণের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র যে সুবিধাটা পেতে চায় তা হলো অল্প সময়ে জড়ো হওয়া মানুষেরা সময়ের গড়ানে যাতে নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থানের ব্যাপারে সংকল্পহীনতায় পড়ে যায়। 
রাষ্ট্রের এ ধনের পন্থানুসরণ নেটওয়ার্কড আন্দোলনকে নেতৃত্বহীনতার সংকটে ফেলে দেয়। 

আন্দোলনের নেতৃত্ব

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলন সাধারণত আনুভূমিক নেতৃত্বে আস্থা রাখে। অর্থাৎ পাশাপাশি দাঁড়ানো সবার কাছ থেকে নেতৃত্ব আসবে, নেতৃত্বে কোনো ভার্টিকাল হায়ারার্কি থাকতে পারবে না। হরায়জন্টাল লিডারশিপ বাস্তবায়ন বেশ জটিল এবং শ্রমসাধ্য বিষয়। যে কারণে এ তত্ত্বের সঙ্গে ইউটোপিয়ান শব্দটা অনেকসময় জুড়ে যায়। 

নেতৃত্বকেন্দ্রিক সংকট থেকে একসময় আন্দোলন বেহাতকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী শক্তি এ সময় নেতৃত্ব নেওয়ার চেষ্টা চালায়। আন্দোলন দমনে নিয়োজিতরাও তাদের অনুসারীদের এই চেষ্টায় অংশগ্রহণ করায় পরিকল্পনামাফিক। এ ক্ষেত্রে আন্দোলনের মুখপাত্র নির্ধারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিণত হয়। কারণ মুখপাত্রের ব্যক্তিগত এবং বিশ্বাসগত চরিত্র দ্বারা আন্দোলনের চরিত্র নির্ধারণের চর্চার প্রচলন বেশ প্রাচীন। অরাজনৈতিক তকমা নিয়ে শুরু করা আন্দোলনের মুখপাত্র আবিষ্কৃত হয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে। যেমনটা হয়েছিল বাংলাদেশের প্রতিটি সামাজিক মাধ্যম নির্ভর আন্দোলনে। 

মুখপাত্রকেন্দ্রিক বা দমন শক্তির সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করা কোনো ধরনের কমিটির সদস্যদের প্রতি অনাস্থা সৃষ্টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলনের পরিচিত দৃশ্য। অনাস্থার দরুন একসময় আন্দোলনে বিভক্তি দেখা দেয়। তৈরি হয় বিভিন্ন প্রকারের দল-উপদল। এই পরিস্থিতির অপেক্ষায় থাকা দমনশক্তি এ সময়টাকে সুচারুভাবে কাজে লাগায়। সৃষ্ট দল বা উপদলের যারা দমনশক্তির জন্য হুমকিস্বরুপ তাদেরকে বিচ্ছিন্নবাদী চিহ্নিত করে এবং তাদের উৎখাতে দমনপক্ষ তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করে। এ সব দল কোনো কারণে আক্রোশমূলক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়লে দমন হয়ে ওঠে অতিদ্রুত এবং নির্মম। 

হরায়জন্টাল লিডারশিপে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলনকারীরা আগ্রহী হয়ে ওঠার একটা প্রধান কারণ হতে পারে আন্দোলনের মূল শক্তি তরুণদের উত্তরাধুনিক সময়ের রাজনীতি বিমুখতা। বিমুখতার কারণে তারা হয়তো নেতৃত্ব বিষয়ে বিরূপ ধারণা পোষণ করে। তারা হয়তো নেতৃত্ব গঠন বিষয়টাকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে।  

আন্দোলন সংকটে পড়লে আনুভূমিক নেতৃত্ব থেকে বিলম্বিত যে সিদ্ধান্ত আসে তাও প্রায় সময় থাকে দ্বিধায় মোড়ানো। এতে আন্দোলন ক্রমশ শক্তি হারাতে শুরু করে। 

নেতৃত্ব সংকটে না-পড়া আন্দোলন যে সমস্যায় পতিত হতে পারে সেটা হল সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না থাকা সংক্রান্ত সংকট। দীর্ঘকালীন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য যে পর্যায়ক্রমিক এবং অবস্থা বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা গ্রহণের প্রয়োজন পড়ে, তা মেটাতে আন্দোলনকারীরা ব্যর্থ হয়ে পড়ে। অতি অল্প সময়ে যেহেতু আন্দোলনের উত্থান ঘটে তাই দীর্ঘকালীন আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার শক্তি সঞ্চয় হয় না প্রয়োজনীয় সময়ের অভাবে।

প্রতিবন্ধকতা

আন্দোলন দমনে রাষ্ট্র আরেকটি যে পন্থা গ্রহণ করে, তাহলো সামাজিক মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ। উক্ত পরিস্থিতি আন্দোলনকে একপ্রকারে অন্ধকারে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়। আন্দোলনের সবশেষ অবস্থা বা আন্দোলনকেন্দ্রিক নতুন কোনো সিদ্ধান্ত জানতে আন্দোলন সংশ্লিষ্ট এবং সমর্থকরা অক্ষম হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলন যেমনটা এই সংকটে পড়েছিল। ফেসবুকের একটা গ্রুপ এই আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখছিল। আন্দোলনের একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে যখন আন্দোলন সমর্থকরা দ্বিধায় এবং পরবর্তী কর্মসূচি জানতে অপেক্ষারত তখন ওই গ্রুপে দেখা যায় গ্রুপটির পরিচালক সদস্যদের ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে যাওয়ার খবর। খবরের সত্যতা নির্ধারণ না হলেও বলা যায় রাষ্ট্রপক্ষের চাহিদায় এ ধরনের হ্যাকিং সম্ভবত কঠিন কোনো কাজ নয়। নিষেধাজ্ঞার তুলনায় এ ব্যবস্থা হয়তো আরও অধিকবেশি কার্যকরী। যদিও কোনো কোনো আন্দোলন এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টির সম্ভবনা পূর্ব থেকে অনুমান করে যোগাযোগের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। যেমনটা মিশরের আন্দোলনকারীরা করেছিল। ফেসবুক রাষ্ট্রের মাধ্যমে বন্ধ হয়ে গেলে আন্দোলন সংশ্লিষ্টদের কাছে নির্দেশ পৌঁছেছিল ই-মেইলের মাধ্যমে। আন্দোলন নেতৃত্ব আগে থেকেই আন্দোলন সমর্থকদের ই-মেইল অ্যাড্রেস সংগ্রহ করে রেখেছিল। 

আন্দোলনের লক্ষ্য যদি থাকে ক্ষমতায় পরিবর্তন আনা, তাহলে (আন্দোলন সফল হলে) আন্দোলনের ফসল খুব দ্রুতই বেহাত হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে আবারও সেই মিশরের উদাহরণ। এখানেও সেই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও নেতৃত্বের অভাব কাজ করে। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলন সত্যিকার সফলতার মুখ দেখতে চাইলে এই প্রকারের আন্দোলনের চরিত্রে বিদ্যমান অসুবিধাগুলোর দূর করা প্রয়োজন। অর্থাৎ প্রয়োজন- ক্লিক্টিভিজমের পাশাপাশি আন্দোলনের বহুস্তরের রূপরেখা সৃষ্টি এবং অপ্রশ্নবিদ্ধ নেতৃত্ব তৈরি। সফলতা শব্দটার এত সহজ ব্যবহার (এই দুই বিষয়ে বেশ ভালভাবে শক্তিশালী হওয়া স্বত্ত্বেও প্রথাগত আন্দোলনের বারংবার অসফলতার সম্মুখীন হওয়া পরিচিত একটা দৃশ্য) মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলনে শামিল হওয়া মানুষের অগণন সংখ্যা। ভীষণ কম সময়ে এত বিপুল শক্তির সমাগম করাটা এই ধরনের আন্দোলনের বিস্ময়কর এক ক্ষমতা। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নির্ভর আন্দোলনের শক্তি এবং দুর্বলতার সঠিক বিবেচনা ভীষণভাবে প্রয়োজন। 

 

Comments

The Daily Star  | English

Economic expectations: Did govt fall short?

When an interim government was sworn into office following the ouster of the Awami League regime just 100 days ago, there was an air of expectation that the Prof Muhammad Yunus-led administration would take steps to salvage a scam-ridden financial sector and rescue an ailing economy.

9h ago