চলতি অর্থ বছরে দেশে খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা নেই: খাদ্যমন্ত্রী   

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানিয়েছেন, চলতি অর্থ বছরে দেশে খাদ্য ঘাটতির কোনো আশঙ্কা নেই। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানান, দেশে ২০২০-২১ অর্থ বছরে খাদ্যশস্যের কোন ঘাটতি ছিল না, ২০২১-২২ অর্থ বছরেও ঘাটতি হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই।

তিনি জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষি মন্ত্রণালয় ৪০৭ দশমিক ৭ লাখ টন (চাল ৩৯৪ দশমিক ৮১ লাখ টন ও গম ১২ দশমিক ২৬ লাখ টন) খাদ্যশস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য শফিউল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নানামুখী কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সম্প্রতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফলে পণ্য মূল্য স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে আসতে শুরু করেছে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, দেশে প্রায়ই নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর দাম হঠাৎ করে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে যায়। এর কারণ হিসেবে তিনি আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং অনেক সময় প্রাকৃতিক কারণে উৎপাদন ব্যহত হলে দেশের অভ্যন্তরে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি হয়ে থাকে বলে উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়মিত মতবিনিময় সভা, 'দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও পূর্বাভাস সেল'-এর মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ট্যারিফ অ্যান্ড ট্রেড কমিশন, টিসিবি, এবং কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উৎপাদন, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

এ ছাড়াও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঢাকাসহ সকল মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বাজার মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এই অধিদপ্তর প্রত্যেক মাসে সারাদেশে তিনশ'র বেশি বাজার পরিদর্শন ও অভিযান পরিচালনা করছে।

বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, পণ্যের মূল্য নিয়ে কেউ যাতে মনোপলি বা অলিগোপালি অবস্থার সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য প্রতিযোগিতা কমিশন কাজ করে যাচ্ছে।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সম্প্রতি দেশের বাজারে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করায় ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।

বাণিজ্য ঘাটতি ১৬ হাজার মিলিয়ন ডলার:

সরকারি দলের সংসদ সদস্য এবাদুল করিমের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির পরিমাণ ৪৫ হাজার ৩৬৭ দশমিক ১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আমদানির পরিমাণ ৬১ হাজার ৬০৯ দশমিক ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ বাংলাদেশের ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ১৬ হাজার ২৪২ দশমিক ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই ঘাটতি কমিয়ে আনতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।

গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের ২০টি দেশে বাণিজ্যিক মিশন রয়েছে। এসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৭ হাজার ৬৪৭ দশমিক ৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বৈদেশিক বাণিজ্য ও লেনদেন ভারসাম্য রক্ষায় সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

14h ago