‘বাসার কাছে এসেও ফিরে যেতে হয় প্রীতিকে’
মা-বাবা ও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে পশ্চিম শান্তিবাগে ভাড়া বাসায় থাকতেন সামিয়া আফরান জামাল প্রীতি (২২)। গত ৪ দিন তিনি খিলগাঁও তিলপা পাড়ায় বান্ধবী সুমাইয়ার বাসায় ছিলেন। সেখান থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাসায় ফিরছিলেন। কিন্তু, বাসার কাছে এসেও ফিরে যেতে হয় প্রীতিকে।
বাসার কাছাকাছি এলে হঠাৎ মা ফোন দিয়ে বলেছিলেন, চট্টগ্রাম থেকে প্রীতির মামা-মামী এসেছেন। সে যেন আজকে তার বান্ধবীর বাসায় থাকে। আগামীকাল যেন বাসায় আসে।
আজ শুক্রবার ভোররাত ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এসব কথা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান প্রীতির বান্ধবী সুমাইয়া।
তিনি বলেন, 'উত্তর শাহজাহানপুর আমতলা থেকে প্রীতি আমাকে ফোন দিয়ে তার অবস্থার কথা জানায়। সে আমাকে সেখানে আসতে বলে।'
'সেখানে আসার পর আমরা খিলগাঁও তিলপা পাড়া যাওয়ার জন্য রিকশা নিই। রিকশায় ওঠার পরপরই হঠাৎ শব্দ শুনি। ২ জনই রিকশা থেকে পড়ে যাই।'
'প্রীতির গায়ে রক্ত দেখে আশপাশের লোকজন বলেন, "গুলি লাগছে"। তারপর সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে আসলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন,' যোগ করেন সুমাইয়া।
'মিরপুরের একটি কারখানায় কাজ করি' উল্লেখ করে প্রীতির বাবা জামালউদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মেয়ে রাজধানীর বদরুন্নেসা সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। সে খিলগাঁওয়ে একটি দোকানে দেড় মাস কাজ করেছিল। তা ভালো না লাগায় চাকরি ছেড়ে দেয়। মাস খানেক হলো সে কোথাও কাজ করছে না।'
তিনি আরও বলেন, 'গতকাল রাত ১১টার দিকে প্রীতির ফোন থেকে পুলিশ ফোন দিয়ে জানান দুর্ঘটনা ঘটেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসতে হবে। আমরা ১২টার দিকে আসি। আসার পর এই দুর্ঘটনার কথা শুনি।'
প্রীতির মা হোসনে আরা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি কী জানতাম এমন দুর্ঘটনা ঘটবে?'
পুলিশ ডেইলি স্টারকে জানায়, প্রীতির পিঠে গুলি লেগেছে। কে বা কারা গুলি করেছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। সেই এলাকার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে ১১টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল রাত ১০টা ২২ মিনিটের দিকে উত্তর শাহজাহানপুরে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও বদরুন্নেসা কলেজের শিক্ষার্থী সামিয়া আফরান জামাল প্রীতি নিহত হন। এ ঘটনায় জাহিদের গাড়ি চালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
Comments