টিসিবির পণ্য ‘পৌঁছাবে না’ দুর্গম পাহাড়ে

স্টার ফাইল ছবি

বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার প্রায় ৩ হাজার ৩০০ পরিবারের কাছে সরকার ঘোষিত সাশ্রয়ী মূল্যের টিসিবি পণ্য পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে রুমা উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুন শিবলী বলেন, 'রুমা উপজেলার গালেংগ্যা, পাইন্দু এবং রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের প্রায় আড়াই হাজার পরিবারের কাছে আমরা টিসিবির পণ্য পাঠাতে পারছি না।'

মূলত এই এলাকাগুলো দুর্গম হওয়ার কারণেই এটা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান শিবলী। বলেন, 'বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।'

একই কারণ দেখিয়ে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতাউল গনি ওসমানীও বলেন, 'থানচি উপজেলার আওতাধীন দুর্গম তিন্দু এবং রেমাক্রি ইউনিয়নের প্রায় ৮০০ পরিবারের জন্য টিসিবির পণ্য পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।'

করোনা মহামারির সঙ্গে গত ২ বছর ধরে লড়াই করছে মানুষ। সেই ধাক্কা সামাল দিতে চিকিৎসা, বাসস্থান ও বস্ত্রের মতো মৌলিক চাহিদাগুলোতে ব্যয় কমিয়ে ফেলেছে দেশের জনসংখ্যার বড় একটা অংশ।

গত নভেম্বরে প্রকাশিত দ্য পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) পরিচালিত এক সমীক্ষার তথ্য অনুসারে, করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ দেশের ৩ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

এই ধাক্কা সামাল দিতে না দিতেই নতুন আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য এবং গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম। দ্রব্যমূল্য ও জীবনযাত্রার বাড়তি ব্যয়ের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের এখন দিন চলাই দায়, নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিসরেও।

এ অবস্থায় গত ১৫ মার্চ কম দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে দেশের এক কোটি মানুষকে বিশেষ কার্ড প্রদানের পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন এলাকার নিন্ম আয়ের মানুষের কাছে গতকাল রোববার থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবি পণ্য বিক্রির কাজ শুরু হয়।

এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ২ কিস্তিতে ১ কোটি পরিবারের কাছে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে। প্রথম কিস্তিতে ২০ থেকে ৩০ মার্চ ও দ্বিতীয় কিস্তিতে ৩ থেকে ২০ এপ্রিল এই পণ্য বিক্রি চলবে।

পণ্য বিক্রির সুবিধার জন্য দেশব্যাপী সুবিধাভোগী পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করে বিশেষ ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হয়েছে বলেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

এ ছাড়া এই বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছিলেন, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় স্থানীয় জনসংখ্যা ও দারিদ্রের সূচকের মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে এ তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

বান্দরবানের দুর্গম পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লা মং মারমা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পাইন্দু ইউনিয়নে প্রায় ২ হাজার ২০০ পরিবারের বাস। আমি উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করেছিলাম যেন পাইন্দু ইউনিয়নের অন্তত কয়েকটি জায়গায় এই পণ্য পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Hasina’s final days before the fall

A desire to cling to power, intolerance for dissent and failure to see the writing on the wall were what eventually unravel Sheikh Hasina’s iron-fisted rule of 15 years.

6h ago