স্রোতের প্রতিকূলের যাত্রী বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ
১৯৯০ সালের ৪ ডিসেম্বর। পদত্যাগ করলেন সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। এরশাদ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে সেদিন গণতান্ত্রিক যাত্রার পথ যেমন সুগম হলো, তেমনি দেখা দিলো সঙ্কটও। রাষ্ট্রপতির শূন্য পদে বসবেন কে; আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানই বা কে হবেন তা নিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতার প্রয়োজন হলো।
বাংলাদেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলসহ কোনো রাজনৈতিক জোট তখন সমঝোতায় পৌঁছাতে পারছে না। কেউ একজনের নাম দিচ্ছে তো অন্য রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে সঙ্গে অনাস্থা প্রকাশ করছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ৮ দলীয় জোট, বিএনপির ৭ দলীয় জোট কিংবা বাম দলগুলোর ৫ দলীয় জোট কেউই এমন একজনকে বাছাই করতে পারছে না যিনি হবেন সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য। যিনি জাতিকে উপহার দিবেন গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন। এই চরম বিভ্রান্তির মুহূর্তে কে হবেন রাষ্ট্রের অন্তর্বর্তী প্রধান? কাকে নিয়োগ দেওয়া হবে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির পদে? যিনি দায়িত্ব নেবেন তাকে যেমন হতে হবে নিরপেক্ষ তেমনি সবার কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে। তিনি ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবেন।
বাম জোটের পক্ষ থেকে হঠাৎ প্রস্তাব দেওয়া হলো সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নাম।
মুহূর্তেই গভীর অনামিশা কেটে গেল। কারণ, প্রধান দুটি দলই বাম মোর্চার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। সব জোটেরই বিশ্বাস, বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদই দেশকে একটি অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে পারেন। তার নিরপেক্ষতা সর্বজন স্বীকৃতি। কিন্তু যখন সাহাবুদ্দীন আহমদকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলো, তিনি অস্বীকৃতি জানালেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তখন টেলিফোন করে সাহাবুদ্দীন আহমদকে বললেন, 'আপনি ছাড়া এই মুহূর্তে জাতিকে সংকট থেকে বের করতে পারে এমন কেউ নেই। আমরা আশা করি আপনি জাতিকে এই সংকট থেকে উত্তরণ করবেন।' তিনটি রাজনৈতিক জোটের পীড়াপীড়িতে একপ্রকার বাধ্য হয়েই তিনি প্রস্তাব গ্রহণ করবেন বলে জানালেন। তিনি তখন একটি শর্ত জুড়ে দিলেন। বললেন, 'যে দলই নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করুক, সরকার গঠনের পর যদি আমাকে দায়িত্ব পালন শেষে স্বপদে অর্থাৎ প্রধান বিচারপতির পদে ফিরিয়ে আনা হয় তবেই আমি অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির পদ নিতে রাজি।' রাজনৈতিক জোটগুলো তার প্রস্তাব মেনে নিল।
উল্লেখ্য, সংবিধান সংশোধন ছাড়াই ১৯৯০ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়েছিল, কারণ সময়ের স্বল্পতার কারণে তখন সংসদ অধিবেশন আহ্বান করা সম্ভব ছিল না।
১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন সাহাবুদ্দীন আহমদ। বঙ্গভবনে সেই শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আন্দোলনের দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া।
সাহাবুদ্দীন আহমদ যে কতটা প্রজ্ঞা এবং মেধাসম্পন্ন ছিলেন তা তার নির্বাচিত উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্যদের নামের তালিকায় একবার চোখ বুলালেই বোঝা যায়। ১৯৯১ এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ছিলেন বিচারপতি এম এ খালেক, অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থনীতিবিদ কফিলউদ্দিন মাহমুদ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং পূর্ত মন্ত্রণালয়ে অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাবিদ জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, সমাজকল্যাণ মহিলা বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে প্রখ্যাত সমাজকর্মী আলমগীর এম. এ. কবীর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম এ মাজিদ। সংস্কৃতি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ (পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা) এর মতো বিশিষ্টজন ও নিজ নিজ ক্ষেত্রে উজ্জ্বল নক্ষত্ররা।
১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বলা হয় বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নির্বাচন। নির্বাচনে হেরে আওয়ামী লীগ সূক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ তুলেছিল বটে কিন্তু নির্বাচন মেনে নিয়েছিল। স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিটি নির্বাচন প্রচণ্ড বিতর্কিত হওয়ায় নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সাধারণ মানুষের একটি বড় দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সাহাবুদ্দীন আহমদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনমানুষের সেই বিশ্বাস ফিরিয়ে দেয়। স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটপ্রদান করেছে।
সে বছরের ৬ আগস্ট সংবিধানের একাদশ সংশোধনী পাস করে সাহাবুদ্দীন আহমেদের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগদান বৈধ ঘোষণা করলে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ ফিরে যান প্রধান বিচারপতির পদে।
অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির পদে আসার আগে বা পরে সচেতনভাবে সাহাবুদ্দীন আহমদ সমস্ত পাদপ্রদীপের আলো এড়িয়ে চলেছেন। বিচারক হিসেবে যেমন তিনি ছিল এক অনন্য উচ্চতার তেমনি তার রাষ্ট্রপতি পদে থেকে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি তা করেননি। তিনি ফিরে গেছেন নিজের কর্মক্ষেত্রে। বাংলাদেশের ইতিহাসে যা বিরলই বলা চলে। নিজের দায়িত্ববোধ, নিষ্ঠা আর সততাকে বিন্দুমাত্র তিনি প্রশ্নবিদ্ধ করেননি।
পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে নির্দলীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাহাবুদ্দীন আহমদকে বেছে নিয়েছিল। সেবারও তিনি প্রথমে রাষ্ট্রপতি হতে চাননি। কিন্তু আওয়ামী লীগ একটি ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন একজন নির্দলীয় ব্যক্তিকেই দলটি রাষ্ট্রপতি করার ঘোষণা দিয়েছিল। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, বিএনপি আমলের রাষ্ট্রপতি ছিলেন আবদুর রহমান বিশ্বাস। তিনি এতোটাই দলীয় অনুগত ছিলেন যে একবার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তিনি নিজেই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের দিকে রওয়ানা দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রটোকল কর্মকর্তারা সে দফায় তাকে নিবৃত করেন। সাহাবুদ্দীন আহমেদের কাছে যখন আওয়ামী লীগ থেকে প্রস্তাব গেল তিনি রাজি হলেন না। শেষমেশ বলা হলো তিনি যদি প্রস্তাব গ্রহণ না করেন তবে তার বাড়ির সামনে অনশন শুরু হবে। শেষ পর্যন্ত তিনি রাজি হলেন।
২০০১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি পদে আসীন থাকার সময়ে সাহাবুদ্দীন নীতি এবং নিষ্ঠা ছিল অতুলনীয়। রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন বা বিচারক থাকাকালীন তার প্রজ্ঞা নিষ্ঠা আর দূরদর্শিতা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। কখনোই স্বজন প্রীতি, অঞ্চল প্রীতি তাকে স্পর্শ করেনি। রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি দলমত নির্বিশেষে নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন। আমাদের দেশে সাধারণত রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ মেনে চলেন। যার ফলে অনেকাংশেই আওয়ামী লীগের বিরাগভাজন হয়েছেন সাহাবুদ্দীন আহমদ। বহুক্ষেত্রেই তৎকালীন সরকারের সঙ্গে তার মতবিরোধ হয়েছে। তবে সে মতবিরোধের কিছুটা লাগাম এসেছিল যখন তিনি সরকারকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরুর পরামর্শ দেন। একজন রাষ্ট্রপতিও যে সরকার থাকাকালীন সময়ে এমন অবিশ্বাস্য নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারেন তা সাহাবুদ্দীন আহমদ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।
আজকের বাংলাদেশে সভাসদ বা দায়িত্বপ্রাপ্তরা অতিকথনে ব্যস্ত। কথার ফুলঝুরিতে তারা জনসাধারণকে অতিষ্ঠ করে রাখেন। সেখানে সাহাবুদ্দীন আহমদ ছিলেন প্রবাদপ্রতিম ঋষিতুল্য ব্যক্তিত্ব। রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন একবার বলেই ফেলেছিলেন, 'একমাত্র কবর জিয়ারত করা ছাড়া রাষ্ট্রপতির কোনো ক্ষমতা নাই।' ছাত্র রাজনীতির কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে বলেছিলেন সাময়িকভাবে হলেও যেন ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখা হয়। ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রনেতারাই অবশ্য রাষ্ট্রপতির এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
সাহাবুদ্দীন আহমদ সবসময়ই গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিলেন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ শাসনামলে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে জননিরাপত্তা আইন নামের বিতর্কিত কালো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত নীতিভঙ্গ করায় সাহাবুদ্দীন আহমদ তাতে সই করেননি। যে কারণে তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের তিক্ততা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। তবু তিনি পরোয়া করেননি। অবিচল থেকেছেন নিজ আদর্শে।
সাহাবুদ্দীন আহমদের নাম বললে আবার আসবে নির্বাচনের কথা। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তিনি রাষ্ট্রপতি ছিলেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে গেলে তারা দায় চাপায় সাহাবুদ্দীন আহমদের উপরেই। তখন আবদুস সালাম আজাদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল সাহাবুদ্দীন আহমদের সঙ্গে দেখা করে নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই দাবি মেনে নেননি সাহাবুদ্দীন আহমদ। তিনি ছিলেন অনড় ও অটল। ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থের বিষয়ে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত না করে নিজ দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন সুচারুভাবে।
তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন 'ভোট গ্রহণের সময়েও তো আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে। তবে এখন কেন নির্বাচন বাতিলের প্রশ্ন আসছে?' নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তার পরাজয়কে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত, বিদেশিদের ষড়যন্ত্রসহ নানাভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে। তবে এটা পরবর্তীতে ধোপে টিকেনি।
বিচারপতি হিসেবে সাহাবুদ্দীন আহমদের যাত্রার সূচনা হয়েছিল দেশ স্বাধীনের পর অর্থাৎ ১৯৭২ সালে। তারও এক যুগ আগে তিনি বিচার বিভাগে এসেছিলেন নির্বাহী বিভাগ থেকে। পরবর্তীতে তিনি বিচার বিভাগের প্রেমে পড়েছিলেন বলা যায়। নয়তো তার কর্মজীবনের সূচনা হয়েছিল নির্বাহী বিভাগে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে। গোপালগঞ্জ ও নাটোরে ছিলেন মহকুমা প্রশাসক। সহকারী জেলা প্রশাসক হিসেবে পদোন্নতি পেলে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগে বদলি হন। ছিলেন ঢাকা ও বরিশালের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ। ১৯৬৭ সালে ঢাকা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।
বিচারপতি হিসেবে যাত্রার পর দু বছর সাহাবুদ্দীন আহমদ ছিলেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান। এ সময়েই শ্রম ব্যবস্থাপনার সম্পর্ক মামলায় তার বিচারের রায় আলোচিত ও প্রশংসিত হয়।
১৯৮০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে জাতীয় বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান থাকাকালীন সাহাবুদ্দীন আহমদ চাকরি সম্পর্কিত বিভিন্ন কেসের বিচারের রায়ে দিয়েছিলেন গভীরতম প্রজ্ঞা ও মেধার পরিচয়। তখন ঢাকা ল রিপোর্ট, বাংলাদেশ লিগ্যাল ডিসিশন এবং বাংলাদেশ কেস রিপোর্টসে তার প্রচুর রায় প্রকাশ করা হয়েছিল। সংবিধানের ৮ম সংশোধনী সম্পর্কিত মামলায় বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের দেওয়া রায় যুগান্তকারী। যা বাংলাদেশের সংবিধানের পরিশোধনের পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছিল।
১৯৮৩ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে মজিদ খানের কুখ্যাত সাম্প্রদায়িক, গণবিরোধী শিক্ষানীতির বাতিলের দাবিতে রাজপথে পুলিশের গুলিতে ছাত্ররা নিহত হয়। সেই ঘটনায় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। সেই তদন্ত কমিশনেও নিরপেক্ষতার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। কিন্তু এরশাদ সরকার সেই তদন্ত প্রতিবেদন কখনোই প্রকাশ করেনি।
বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ আমাদের দৃষ্টির সম্মুখে মেলে ধরেছেন তার অনন্য বর্ণিল জীবনের অবিশ্রান্ত যাত্রার এক বিস্তৃত হালখাতা। যে হালখাতায় চোখ বুলালেই আমরা দেখতে পাই সকল লোভ, চাপ, প্রলোভন উপেক্ষা করা আদর্শবান আর প্রজ্ঞাবান এক ব্যতিক্রমী সত্তা। যেখানে মিশে আছে দেশপ্রেম, দায়িত্ব আর আদর্শ মানুষের প্রতিকৃতি। যিনি সর্বত্র সর্বসময় আলোচনা ও প্রচারের বাইরে, লোকচক্ষুর অন্তরালে অথচ জাতির ক্রান্তিলগ্নে বহ্নিশিখা হস্তে মিছিলের অগ্রভাগে। বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের গণমানুষের হৃদয়ে থাকবেন।
ahmadistiak1952@gmail.com
Comments